দৈনিক ফেনীর সময়

‘অসঙ্গতি তুলে ধরুন, ফেনী উপকৃত হবে’

‘অসঙ্গতি তুলে ধরুন, ফেনী উপকৃত হবে’

নিজস্ব প্রতিনিধি :

“সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরুন, ফেনী উপকৃত হবে” সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এমন আশাবাদ জানিয়েছেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহাম্মদ চৌধুরী নাসিম। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে ফেনী নদীর বালু মহাল নিয়ে পরিবেশগত ভারসাম্য নিয়ে অনেক সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে হুঁশিয়ারীর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এই অসঙ্গতি তুলে ধরে ফেনীর বিশাল উপকার হয়েছে। গত কিছুদিন ধরে চলতে গিয়ে ফেনীর অনেক অসঙ্গতি দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য বিভাগ সহ বিভিন্ন সমস্যা সাংবাদিকরা নজর দিতে হবে। অনেক সময় দেখি সাংবাদিকরা ঘটনার পিছনে না ছুটে, ঘটনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পিছনে ছুটেন। এই কালচার থেকে সাংবাদিকদের বেরিয়ে আসতে হবে। সমাজের অসঙ্গতি, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অসঙ্গতি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে সরকারও সেখান থেকে অনেক কিছু করার দিকনির্দেশনা পান।”

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেনী প্রেস ক্লাবে দৈনিক আমার সংবাদ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

ফেনীর উন্নয়ন নিয়ে মহাপরিকল্পনার কথা জানান নাসিম চৌধুরী। তার দাবী, “ফেনী ভৌগলিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জেলা। ফেনীর জন্য এলজিইডির একটি বিশেষ প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ফেনীতে বিশ^বিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা শুরু করেছি। জাতীয়পর্যায়ে যারা উঠে গেছেন তারা ফেনীকে নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না। তাছাড়া পরিত্যক্ত দোস্ত টেক্সটাইল মিলে ৫-৭টি টেকনিক্যালের সমন্বয়ে ক্লাস্টার টেকনিক্যাল এডুকেশন কলেজ স্থাপনে পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি।”

ফেনী ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি আলাউদ্দিন নাসিম ফেনী প্রেস ক্লাবের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ক্লাব আর এসোসিয়েশন দুইটার মধ্যে প্রার্থক্য আছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সহ দেশের বিভিন্ন এসোসিয়েশন বিভক্ত। কোথাও প্রেস ক্লাব দুইটা নাই। সুতরাং ফেনী প্রেস ক্লাবেও দুইরকম থাকবে এই চিন্তা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে। এজন্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে মাথা থেকে ইগো বাদ দিতে হবে। ফেনী প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র ঢাকা প্রেস ক্লাবও অনুসরণ করে। কেউ আলাদাভাবে নয়, সবাই একত্রে বসে গঠনতন্ত্র ফলো করে এগিয়ে যেতে হবে। ক্লাব রিক্রিয়েশনের জায়গা, এটা কর্মক্ষেত্র নয়। সবাই সাংবাদিক, আর কোন পরিচয় নেই। এখানে দলাদলী করার দরকার নাই, দলীয় আদর্শের চর্চা বাইরে করবো। তাহলে ফেনীকে পথ দেখাবেন।”

ফেনীর সাংবাদিকতার ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এ প্রটোকল অফিসার বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন। সমাজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। জাতি গঠনে, দেশ গঠনে, রাজনীতির দিক পরিবর্তনে, উন্নয়নে সবক্ষেত্রে এই দর্পন ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে। সমাজের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে সমাজকে সঠিক পথ দেখানোর ব্যাপক ভূমিকা পালন করে সাংবাদিকতা। জাতীয় সাংবাদিকতার প্রেক্ষাপটে ফেনীকে মক্কা-মদীনার সাথে ধরা যায়। এত বেশি সংখ্যক সাংবাদিকতার দিকপাল কোন জেলা দূরে থাক, বিভাগ থেকে উঠে আসেনি। ১৯৪৬ সালে নির্বাচিত প্রথম সংসদে ফেনীর দুইজন সংসদ সদস্য ছিলেন। মন্ত্রী হয়েছিলেন। হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী,আরেকজন হামিদুল হক চৌধুরী। দু’জনই সাংবাদিক ও সম্পাদক ছিলেন। বুলবুল পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী, অবজারভার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী। পরবর্তীতে আবদুস সালাম সাহেব সম্পাদক হন। তারপরে এবিএম মুসা, ‘দরবারে জহুর খ্যাত’ জহুর হোসেন চৌধুরী, গিয়াস কামাল চৌধুরী, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইকবাল বাহার চৌধুরী সহ প্রচুর সাংবাদিক ছিলেন। এখনো সাংবাদিকতার অনেক দিকপাল ফেনী থেকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা বাংলাদেশ পথ দেখাচ্ছেন, রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারনে ফেনীর সাংবাদিকরা বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। ফেনীও অনেক অনেক এগিয়ে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!