অনলাইন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনে দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার কারণে তুমি দেশে আসতে পেরেছো। সেই বেগম জিয়াকে নিয়ে কটুক্তি করতে তোমার লাগে না! তুমি বিবেক বিবর্জিত একজন মানুষ।
রোববার (২২ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে ঢাবির মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল।
সমাবেশে ছাত্রদল নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি এবং ছাত্রদল নেতাদের ওপর পুলিশি হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং আটক নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকে মনে করেছেন আমরা এই তপ্ত রোদে উত্তপ্ত, আসলে তা নয়। শেখ হাসিনা, তুমি আমাদের হৃদয়ে আঘাত করেছো। আমাদের আদর্শিক মাকে নিয়ে কটুক্তি করেছো। তাই আমরা উত্তপ্ত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কত রক্ত চাই তোমার? ছাত্রদল রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আমাদের আবেগ, আমাদের আদর্শিক মা বেগম জিয়াকে নিয়ে কটুক্তি করার চেষ্টা করো না।
‘শেখ হাসিনা, যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দরকার নেই, ছাত্রদলকে পারলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করো। কিন্তু তুমি তা পারবে না। কারণ তোমার আচরণ কাপুরুষোচিত। তুমি প্রশাসনের শক্তিকে অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের কাজে লাগাচ্ছো।’
প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্রদল সম্পাদক জুয়েল বলেন, আপনারা ১৮ কোটি মানুষকে ধারণ করুন, একজনকে (শেখ হাসিনা) ছেড়ে দিন।
ছাত্রদল সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের ওপর করা আক্রমণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তোমরা ওপেন ঘোষণা করো, কোথায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে প্রতিহত করতে চাও। কথা দিচ্ছি, সেখানেই ছাত্রদল তোমাদের প্রতিরোধ করবে।
ঢাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন বলেন, অবৈধভাবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গায় থেকে শেখ হাসিনা যাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন উনিই কিন্তু ১৯৮৬ সালে শেখ হাসিনার উপরে হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেনে হাসিনার মুক্তির জন্য যিনি প্রথমে আহ্বান করেছিলেন, তিনি হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
‘আমি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে আহ্বান করছি। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ সকল নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধের জন্য পুলিশ ভাইদের অনুরোধ করছি। আপনারা ওসি প্রদীপ থেকে শিক্ষা নিন। সারাদেশে নৈরাজ্য বন্ধ করুন।’
তিনি আরও বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আরব বসন্তের ন্যায় বাংলাদেশেও আরেকটা বসন্ত হবে। যার নাম হবে তারেক বসন্ত, যার ছোঁয়াতে বাংলাদেশ আবারও গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত হবে।
ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. আমানউল্লাহ আমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আসরাফুল ইসলাম খান অনিক, সাফি ইসলাম, এজাজুল কবির রুয়েলসহ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সদ্য সাবেক নেতারা।
এছাড়াও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, বিভিন্ন হলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ হলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, বাঙলা কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন ইউনিটের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন।