রাসেল চৌধুরী :
সারাদেশের মতো বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ফেনীর জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে জেলাটিতে সাক্ষরতার হার ৮০.৭৯ শতাংশ। যা জাতীয় পর্যায় থেকে বেশী। অথচ জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার হার ৭৪.৮০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর ফেনী জেলা প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মোট বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৬ জন। এর মধ্যে মুসলিম ৯৪.৪১শতাংশ, হিন্দু ৫.৫৩শতাংশ, বৌদ্ধ ০.০৪শতাংশ, খ্রিস্টান ০.০১শতাংশ, অন্যান্য ০.০০৯শতাংশ রয়েছে। জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে ৯০৬ জন। মোট পরিবারের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ১৬৪। জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ।
এদিকে ফেনীতে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। বর্তমানে জেলায় মোট জনসংখ্যার ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ নির্ভরশীল। যেখানে জাতীয়ভাবে নির্ভরশীলতার হার ৫৩ শতাংশ। এছাড়া ফেনী জেলা শহর এলাকায় বাস করে ২৯.৬৭শতাংশ ও পল্লী এলাকায় ৭০.৩৩শতাংশ মানুষ। জেলায় মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫ শত ৮ জন। জেলায় সর্বাধিক জনসংখ্যা ফেনী সদর উপজেলায়। সবচেয়ে কম জনসংখ্যা পরশুরাম উপজেলায়।
জেলার ১০ শতাংশেরও বেশি মানুষ প্রবাসী উল্লেখ করে জানানো হয়, এ জেলায় মোট প্রবাসীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৩ জন। মোট জনসংখ্যার ৩৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরিবার রেমিটেন্স পেয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, জেলায় ৫ বছর বয়সী থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫৬.৮৭ শতাংশ। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৪১.৫১ শতাংশ। ১৫ থেকে তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনসংখ্যার ৭৩.৬১ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫২.০২ শতাংশ।
প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক(অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি ও গৃহগণনার কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। সঠিক তথ্য নিশ্চিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেকদূর এগিয়েছে। এখন অর্থনৈতিক শুমারির কার্যক্রম চলমান। এ প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আমাদের উন্নয়নের চিত্র সবার সামনে তুলে ধরা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রচেষ্টার উদাহরণ প্রযুক্তিনির্ভর জনশুমারি এবং গৃহগণনা। নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছেন। এজন্য সবাইকে পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহ দিতে হবে।
জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এসএমটি কামরান হাসানের সঞ্চালনায় সভায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা পরিসংখ্যান দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো: তানজীব হাসান ভূঁইয়া। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ফেনীস্থ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মো: বাতেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপসচিব মুনিরা ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অভিষেক দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা তথ্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। এছাড়া বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।