fenirshomoy logo black

নিজস্ব প্রতিনিধি :

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সামুদ্রিক জোয়ারের পানিতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে ঝড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে গ্রামীণ সড়ক ও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের লবণাক্ত পানি লোকালয়ে ঢুকে গেছে। এতে করে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভেসে গেছে শতশত খামার ও পুকুরের মাছ। গতকাল সোমবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হঠাৎ করে নিদিষ্ট সময়ে আগেই জোয়ার এসে উপজেলার বড় ফেনী নদীর উপকূলীয় দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া, দক্ষিণ চর চান্দিয়া, জেলেপাড়া ও চর খোন্দকারসহ নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়। পাশাপাশি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় বিপাকে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা।

এর আগে গত রবিবার মধ্য রাত থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো বাতাস আর ভারী বৃষ্টিতে গাছপালা পড়ে তার ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙে প্রায় ২০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাতাসের তীব্রতার কারণে নদী উপকূলীয় এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা জানায়, সোমবার দুপুর দুইটার দিকে নদীতে জোয়ার আসার কথা। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে হঠাৎ করে বেলা ১১টার দিকে হু-হু করে বেশ উচ্চতায় জোয়ার চলে আসে। মুহুর্তের মধ্যে জোয়ারের বড় বড় ঢেউ নদীর তীরে আচড়ে পড়ে চর খোন্দকার, জেলেপাড়া ও দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়াসহ আশপাশের এলাকা এবং নিম্মাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। চর খোন্দকার ও জেলেপাড়ার বেড়িবাধসহ গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে লোকালয়ে জোয়ারের লবণাক্ত পানি ঢুকে যায়। মুহুর্তেই চরাঞ্চল ও গ্রামীণ জনপদ জোয়ারের পানিতে একাকার হয়ে যায়।

উপজেলার চর খোন্দকার, জেলেপাড়া ও দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় ফেনী নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ চরাঞ্চল জোয়ারের পানিতে থইথই করছে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীর পাশের বাড়িঘরে পানি ঢুকে গেছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে না গিয়ে নৌকা ও মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নদীর তীরে রশি ও নোঙ্গর করে বেঁধে রেখেছেন।

জেলেপাড়ার বাসিন্দা হর লাল জল দাস বলেন, তারা সারা বছর ঝড়-তুফানসহ নানা প্রতিকুল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে নদী ও সাগরে গিয়ে মাছ ধরেন। এখন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় তারা উপকূলে বাড়িতে নিরাপদে রয়েছেন। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে তেমন লাভ নেই। তা ছাড়া সেখানে গিয়ে গাদাগাদি করে থাকতে হবে মনে করছেন তাঁরা। তাই জোয়ারের পানি উঠায় বাড়ি ঘরের চিন্তায় ঘুম হয় না। এজন্য তাঁরা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চান না।

চর খোন্দকার ও জেলেপাড়ার একাধিক বাসিন্দা বলেন, ২০০৮ সালে এ এলাকার বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে বাঁকা নদী সোজা করণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন এলাকার শিল্পপতিরা নদী থেকে জেগে উঠা চর দখল করে অবৈধভাবে শতশত মাছের খামার গড়ে তুলেছেন। এতে করে চরাঞ্চলে গবাদিপশুর চারণ ভূমি নেই বললেই চলে। আগে জোয়ার এলে কয়েক ঘন্টা পর জোয়ারের পানি আবার দ্রুত নদীতে নেমে যেতো। এখন অবৈধ উপায়ে গড়ে উঠা মাছের খামারের বাঁধের কারনে জোয়ারের পানি আটকা পড়ে যায়। যা কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে তাকে। এতে করে সাধারণ মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েন।

فيديوهات جنس https://www.tubev.sex/?hl=ar .

নদীর তীরের বাসিন্দাদের দাবী, চর দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠা এসব খামারীদের চিহ্নিত করে আইনে আওতায় নিয়ে এসে চরাঞ্চল সকলের জন্য এবং গবাদিপশুর জন্য চারণ ভূমি হিসেবে উন্মুক্ত করে দেয়া হোক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, রবিবার মধ্য রাত থেকে ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সবকটি এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে সার্বক্ষনিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো বাতাসে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিরুপন করা হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে হঠাৎ করে জোয়ারের পানির চাপে বেড়িবাঁধ ও গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবাল করছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!