আরিফ আজম :
রাত পোহালেই ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের ভোটের মাঠে দেখা না যাওয়ায় অনেকটা নিরুত্তাপ হতে যাচ্ছে এই নির্বাচন। বিএনপি সহ অন্য দল বিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের জন্য ভোটারদের কেন্দ্রে নেয়াই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫৩.১২ ভোটগ্রহণ হয়। সম্প্রতি শেষ হওয়া ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এর পরিমাণ ২৭শতাংশে নেমে আসে। যার ফলে ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতেও ভোটে উপস্থিতি কম হওয়ার আশংকা রয়েছে। ইতিমধ্যে এ তিনটি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিটি ইউনিয়ন, গ্রামীন হাট-বাজারে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ করেছেন। শহরের পাড়া-মহল্লা সহ প্রত্যন্ত এলাকায় দোয়াত কলম, টিউবওয়েল ও কলস প্রতীকের সমর্থনে মাইকিং, পোষ্টার সহ প্রচার-প্রচারণাও হয়েছে বেশ। বীর মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী, ওলামা-মাশায়েখ, সনাতন সম্প্রদায় সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাথে মতবিনিয়ম করেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শুসেন চন্দ্র শীল, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এ.কে শহীদ উল্যাহ খোন্দকার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুর্শিদা আক্তার। তিনটি পদে কাগজে-কলমে প্রার্থী থাকলেও তারা প্রচারণা না করায় ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম। এ অবস্থায় সাধারণ ভোটারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্রে হাজির করাটাও সরকার দলীয় নেতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল ফেনীর সময় কে বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণার সময় নারী-পুরুষ সব শ্রেণির মানুষের স্বত:স্ফূর্ত সাড়া পেয়েছি। আমরা আশা করছি ৫০শতাংশ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবে। এর মধ্য দিয়ে নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির নেতৃত্বে উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটাররা দোয়াত কলমের পক্ষে রায় দেবে। এতে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকবে।
সদর উপজেলার ১৪০টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৬৫টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৪ জন। ১৪০ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ৬৫ জন সহকারি প্রিসাইডিং ও ২ হাজার ১শ ৩০ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। জেলা সদরের এ উপজেলায় প্রার্থীরা হলেন- চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল (দোয়াত কলম), এডভোকেট মনজুর আলম (মোটর সাইকেল), ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এ.কে শহীদ উল্যাহ খোন্দকার (টিউবওয়েল), গোলাম কিবরিয়া (উড়োজাহাজ), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুর্শিদা আক্তার (কলস), আঞ্জুমান আক্তার (প্রজাপতি)।
দাগনভূঞা উপজেলার ৭২ কেন্দ্রে ৫শ ৮২টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ১২২ জন। ৭২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৫৮২ জন সহকারি প্রিসাইডিং ও ১ হাজার ১৬৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এ উপজেলায় প্রার্থীরা হলেন- চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন (দোয়াত কলম), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বিজন ভৌমিক (চিংড়ী মাছ), ভাইস চেয়ারম্যান পদে জায়লস্কর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন হায়দার (টিউবওয়েল), ইউছুপ আলী (উড়োজাহাজ)।
সোনাগাজী উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৫ জন। এ উপজেলায় প্রার্থীরা হলেন- চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন (দোয়াত কলম), নুর আলম মিষ্টার (ঘোড়া), মজিবুল হক (লাঙ্গল), মহিউদ্দিন (আনারস), ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাখাওয়াতুল হক বিটু (টিউবওয়েল), আইয়বু আলী হায়দার (উড়োজাহাজ)।