নিজস্ব প্রতিনিধি :
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ ও সরকারী দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবীতে ফেনীতে গণঅনশন করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। গতকাল শনিবার শহরের ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন। দুপুরে জুস খাইয়ে অনশন ভাঙ্গান ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন সাহার পরিচালনায় কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করেন সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের। কর্মসূচীতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা: নিমচন্দ্র ভৌমিক, সহ-সভাপতি জিপি প্রিয়রঞ্জন দত্ত, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনিল নাথ, ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মঞ্জু রানী দেবী, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট সমীর চন্দ্র কর, সহ-সভাপতি এডভোকেট রশিক শেখর ভৌমিক ও এডভোকেট স্বাধীন মজুমদার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাস্টার হিরালাল চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি মাস্টার দুলাল চন্দ্র দাস, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাস্টার সহদেব দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মরন মজুমদার, ঐক্য পরিষদের সদর উপজেলা সভাপতি পুলিন দেবনাথ ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক যতন মজুমদার, ফেনী পৌর সভাপতি রিপন সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মাস্টার অর্জুন দেবনাথ, ফুলগাজী উপজেলা সভাপতি পরিমল রায়, দাগনভূঞা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বিজন বিহারী ভৌমিক, পরশুরাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বাবুল চন্দ্র সাহা, ছাগলনাইয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক রতন দাস, সোনাগাজী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জগবন্ধু দেবনাথ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট জেলা সাধারণ সম্পাদক শম্ভু বৈষ্ণব, পরশুরাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সুব্রত সাহা, নির্বাহী সদস্য এডভোকেট শিপন বিশ্বাস, যুব বিষয়ক সম্পাদক টিটু দত্ত, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ সাহা, পূজা উদযাপন পরিষদের সদর উপজেলা সভাপতি তপন বসাক ও সাধারণ সম্পাদক সরোজ চক্রবর্তী, ফেনী পৌর সভাপতি রাখাল দাস ও সাধারণ সম্পাদক সমর নাথ, পরশুরাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জূব সাহা, জেলা ব্রাঞ্চন সংসদ সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চক্রবর্তী গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক আশীষ দত্ত, জেলা সারদানঞ্জলী ফোরাম সভাপতি অধ্যাপক শুভ রাজ বণিক, জয়কালী বাড়ি মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার দাস, জম্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি এডভোকেট দিলিপ সাহা, যুগ্ম-সম্পাদক তুষার কান্তি বসাক, জেলা শিক্ষক ঐক্য পরিষদ সদস্য সচিব কমল ভৌমিক, জাগো হিন্দু জেলা সাধারণ সম্পাদক উৎফল শীল প্রমুখ অংশ নেন।
ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি শুকদেব নাথ তপন বলেন, “স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে আমরা দাবী আদায়ের জন্য গণঅনশন করতে হচ্ছে এটি আমাদের জন্য দু:খজনক। ১৯৭১ সালে হিন্দু-মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। আজ স্বাধীনতার জন্য নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সৈনিক। আমরা যেমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা মনে করি তেমনিভাবে ফেনীর সাড়ে ৩ লাখ হিন্দু সম্প্রদায় ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী আমাদের নিরাপত্তা ও বিশ্বাসের ঠিকানা মনে করি। ২০১৮ সালে নির্বাচনের পূর্বে ইশতেহারে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন ৭ দফা বাস্তবায়ন করবেন। এ দফাগুলো শুধু আইন করে পাশ করতে হবে এখানে সরকারের কোন টাকা খরচ হবে না। আমাদের সমস্যা নিয়ে নিজাম হাজারী সংসদে কথা বলবেন বলে আমাদের কথা দিয়েছেন। নিজাম হাজারী দেশের বাহিরে থাকায় তার শ্রেষ্ঠ আবিস্কার ও জননন্দিত মেয়র স্বপন মিয়াজীকে পাঠানোর জন্য কৃতজ্ঞ। আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সকাল থেকে ধৈর্য ধরে আপনারা গণঅনশন কর্মসূচী সফল করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।”
পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনিল নাথ বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ ছিল ৭ দফা দাবী বাস্তবায়ন করা হবে। দু:খজনক হলেও সত্য আজও তা বাস্তবায় হয়নি। আপনারা জানেন ২০২৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে আমাদের দাবী বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা এখনো নির্যাতন হয়ে থাকি। এটির কারণ কি? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মধ্যে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের আড়াই কোটি মানুষ ছিল। তখন আমাদের মা-বোনেরাও ইজ্জত নষ্ট হয়েছে। দেশের প্রায় ৯৯শতাংশ মানুষ আওয়ামীলীগ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা অনুরোধ করবো আমাদের দাবীগুলো মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করুন। আমরা আর নির্যাতিত হতে চাই না। আমরাও এদেশের মানুষ। অপ্রীতিকর কোন ঘটনা হতে দেয়া হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। ২০২৩ সালের নির্বাচনে আমরা আবারও নিজাম উদ্দিন হাজারীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবো।”