মোহাম্মদ শেখ কামাল :
ফেনী নদীর ভাঙ্গন কবলিত ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর-সোনাপুর গ্রাম ও তিলকের চর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি-কৃষিজমি, হুমকির মুখে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বহু স্থাপনা।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বারবার লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর জেলা প্রশাসন ওই এলাকায় বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করে। কিন্তু প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দেদারছে শতশত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে কামরুল, রাসেল ও হারুনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী গতকাল বুধবার সকালে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে ফেনী নদীর তীরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং বালুদস্যুদের ধাওয়া করে। গ্রামবাসীর বিক্ষোভের মুখে বালু উত্তোলন বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্য পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে শক্তি সঞ্চয় করে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে পুনরায় হানা দেয় বালুদস্যূ সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে হাজির হলে পালিয়ে যায় বালুদস্যুরা।
এলাকাবাসী মো: ফারুক, আলতাফ হোসেন, রমজান আলী, জয়া রানী, জরিফা, রিনা আক্তার, ফিরোজা বেগম, জেবুন নেছা ও দুলালী রানী দাস জানান, মিরেশ্বরাই এলাকার কামরুল ও রাসেল এবং ছাগলনাইয়ার হারুন ্এর নেতৃত্বে একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রæপ দীর্ঘদিন যাবত কয়েকটি ড্রেজার মেশিন ও বালু বহনকারী ইঞ্জিন চালিত নৌকার সাহায্যে ভাঙ্গন কবলিত ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর-সোনাপুর গ্রাম ও তিলকের চর এলাকায় তীর ও চর কেটে মাটি ও বালু নিয়ে যাচ্ছে। ফলে ফেনী নদীতে বিলীন হচ্ছে বহু ঘরবাড়ি-কৃষিজমি, হুমকির মুখে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুজিববর্ষের উপহার গৃহহীন মানুষদের আবাসস্থল আশ্রয়ণ প্রকল্প।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বলেন, অবৈধভাবে ফেনী নদীর তীর ও চর কাটা অব্যাহত থাকলে খুব শীঘ্রই আশ্রয়ণ প্রকল্প নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা আবার গৃহহীন হয়ে যাব। ওরা অস্ত্রধারী তাই ভয়ে আমরা কিছু বলতে সাহস পাইনা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, বালু সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। নিরুপায় হয়ে এলাকার কৃষি জমি ও বাড়িঘর রক্ষা করার জন্য আমরা জীবনবাজি রেখে মাঝে মাঝে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করি। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌমিতা দাশ বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এবং আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা হওয়ায় তিলকের চর এলাকাটি ইজারা দেয়নি জেলা প্রশাসন। ওই এলাকায় বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। ইজারাবিহীন অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।