নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী সদর উপজেলায় আর্সেনিকের মাত্রা পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩শ ৯৮ টিউবওয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। এসব টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার না করতে জনস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরিবারকে নিরাপদ পানি সহজলভ্য করতে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সদর উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় এ তথ্য জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্যের উপ-সহকারি প্রকৌশলী হাসান পারভেজ।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আরা জুসি, উপজেলা প্রকৌশলী দ্বীপ্ত দাশ গুপ্ত, কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আরতী প্রভা ভৌমিক, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা একেএম খালেদ সরওয়ার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইদ্রিস উল্যাহ, ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান করিম উল্যাহ বি.কম, শর্শদী ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম, কাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ, মোটবী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, কালিদহ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, ফরহাদনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন টিপু প্রমুখ জনপ্রতিনিধি সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা পরিষদ ও জনস্বাস্থ্য সূত্র জানায়, জেলা সদরের ১২ ইউনিয়নের ১০৮টি ওয়ার্ডে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩শ ২১ মানুষের বসবাস। এসব এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার গভীর-অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে। পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের আওতায় আর্সেনিক স্ক্রিনিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২০২২ সালের জুন থেকে পানির পরীক্ষা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সূত্র আরো জানায়, এ প্রকল্পে প্রথম ধাপে ২৯ হাজার ৬৩৩টি টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৩শ ৯৮টি টিউবওয়েলে আর্সেনিক মিলেছে। মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকিতে রয়েছে ৫ শতাধিক টিউবওয়েল। লেমুয়া, ফাজিলপুর, ছনুয়া ইউনিয়নে আর্সেনিক পাওয়া টিউবওয়েলের সংখ্যা বেশি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান পারভেজ সভায় জানান, আর্সেনিক পাওয়া টিউবওয়েল ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দ্রæতসময়ের মধ্যে লাল চিহ্ন দেয়া হবে। ১৮ দশমিক ৯শতাংশ টিউবওয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। এসব পরিবারের জন্য নতুন করে টিউবওয়েল স্থাপন করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এমনকি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
ফেনীস্থ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম বলেন, আর্সেনিক যুক্ত টিউবওয়েল চিহ্নিত করে রাখলে খাওয়া ব্যতিত ধোয়া-মোছা সহ অন্য সব কাজে ব্যবহার করতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেসব টিউবওয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে এসব টিউবওয়েল অপসারণ করে নতুন করে সরকারিভাবে স্থাপন করতে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা সভায় উত্থাপন করেছেন। সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী দেশে এলে তাঁর ডিও লেটার নিয়ে পরবর্তী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।