নিজস্ব প্রতিনিধি :
বাংলা নাটকের বিরল প্রতিভা নাটাচার্য্য ড. সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের সেনেরখিলে আলোচনা সভা ও ‘নোলকজানের পালা’ পরিবেশিত হয়েছে।
নাট্যাচার্যের বিশ্ব মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দ্বৈতাদ্বত শিল্পতত্তে¡র প্রশংসা করে প্রধান অতিথি ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, সেলিম আল দীন এক বিরল প্রতিভা। তিনি একইসঙ্গে এক মানবিক পৃথিবী তৈরির স্বপ্ন দেখেছেন; পাশাপাশি নতুন শিল্পতত্তে¡র মাধ্যমে নিজের সৃজনশৈলিকে তুলে ধরেছেন অনন্য উচ্চতায়। রবীন্দ্র-উত্তর বাংলা নাটকে সেলিম আল দীন এক অনন্য সংযোজন। এখানে তার তুলনা কেবল তিনিই। সেলিম আল দীনের সকল সাধনা সমর্পিত হয়েছে ঔপনিবেশিকতা জাল ছিন্ন করে বাঙালির নিজস্বতার অনুসন্ধান। এক্ষেত্রে তিনি জীবন ও শিল্পের বিরল বিদ্রোহী। সেলিম আল দীন একজন বিশ^জনীন ও বিশ্ব মাত্রিক লেখক। তাঁর কীর্তির কথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সেলিম আল দীন কেন্দ্র-ফেনীর সভাপতি বোরহান উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনীক মাহমুদ, চরদরবেশ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু, মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল, সেলিম আল দীন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি- কবি শাবিহ মাহমুদ।
কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কুদরাত-ই-খুদা পিকাসোর সঞ্চালনায় পরে চরদরবেশ ইউনিয়নের সেনেরখিলে তাঁর গ্রামের বাড়িতে সায়েক সিদ্দিকীর রচনা ও নির্দেশনায় ‘নোলকজানের পালা’ পরিবেশন করে ময়মনসিংহের নাট্য দল আহির বাংলা। এসময় ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সেলিম আল দীন ১৮ আগস্ট, ১৯৪৯ সোনাগাজীর সেনেরখিলে জস্মগ্রহণ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত¡ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান একুশে পদক (২০০৭) ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪) সহ অনেক পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনে তিনি ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাট্যে প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলা নাটকের আপন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। পাশ্চাত্য শিল্পের সব বিভাজনকে বাঙালির সহস্র বছরের নন্দনতত্তে¡র আলোকে অস্বীকার করে এক নবতর শিল্পরীতি প্রবর্তন করেন তিনি। তার নাটকে নিচুতলার মানুষের সামাজিক নৃতাত্তি¡ক পটে তাদের বহুন্তরিক বাস্তবতাই উঠে আসে।