শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তাই বলে এসব রোগের ভয়ে হঠাৎ পিপিআই বন্ধ করা যাবে না। পিপিআই ক্রমে দুই সপ্তাহ, এক সপ্তাহ করে কমিয়ে দিতে হয়ে। দিনে একটি, দুই দিন পর আরেকটি করে ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য বলেন, ‘আমরা যদি নিয়ম মেনে চলাফেরা করি তাতেও অ্যাসিডিটি হবে না। অ্যাসিডিটি না হলে ওষুধ খাওয়া লাগবে না। ওষুধ খাওয়া হলো আরেকটি রোগ তৈরি করা। একটি রোগের জন্য ওষুধ খেলে আরেকটি রোগের সৃষ্টি হতে পারে।’
গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ এমন ধরনের ওষুধ যার প্রধান কাজ হলো পাকস্থলীর প্যারা ইটাল কোষ থেকে অ্যাসিড নিঃসরণ কমানো।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশের মানুষ রাস্তাঘাটে পণ্যের মতো ওষুধ কিনে থাকেন। অনেকে আবার ফার্মেসিতে গিয়ে দামি ওষুধ কিনে থাকেন।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে যে অবস্থায় রয়েছি, তাতে দেশে ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যাবে। আমরা অনেকে যখন-তখন স্টেরয়েড কিনে খাই। স্টেরয়েড খেয়ে মোটাতাজা হই। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ খারাপ।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী অধ্যাপক রাজীবুল আলম বলেন, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বড় অংশ বিক্রি হচ্ছে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া। রোগীর একটু পাতলা পায়খানা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথাসহ নানা জটিলতা দেখা দিলে ফার্মেসি দোকানিরা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রেই একটু পানি পান করালে বা হালকা কিছু ওষুধ ব্যবহার করলে এ সমস্যা সমাধান করা যেত। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, স্মৃতিভ্রমের মতো ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম কমে আসতে পারে।
রাজীবুল আলম বলেন, রোগীর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই এ ধরনের ওষুধ লিখতে হবে। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় অতিমাত্রায় এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যত্রতত্র ও অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ব্যবহার কমাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান এ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সবুজের সঞ্চালনায় প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) এ কে এম মোশাররাফ হোসেন, সহ–উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. জাহিদ হোসেন, ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সায়েদুর রহমান।