দাগনভূঞা প্রতিনিধি :
দাগনভ‚ঞা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও স্বাধীনতার ৫২ বছরে ভাতা জোটেনি মুক্তিযোদ্ধা বুলুমিয়ার কপালে।
পরিবার সূত্র জানায়, উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের জান মোহাম্মদ বাড়ীর আবদুল গনির ছেলে বুলু মিয়া ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কারনে রাজাকার ও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বসতঘর, রান্নাঘর এবং গোয়াল ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিকান্ডে বেঁচে থাকার অবলম্বন পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। বিষয়টি তৎসময়ে রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে বঙ্গবন্ধুকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন বুলু মিয়া। বঙ্গভুমিকে রক্ষা করতে গিয়ে হানাদার বাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছেন। তারপরেও আহত অবস্থায় ভারতের একিনপুরে চোত্তাখোলায় ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাতা সহ সরকারী সুযোগ-সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে বারবার ধরনা দিয়েও ব্যর্থ হন। ১৯৯৬ সালে বার্ধক্য জনিত রোগে নিজ বাড়িতে মারা জান। একমাত্র ছেলে ও তিন মেয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করলেও কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানির ও ক্যাপ্টেন গোলাম মাওলার সাথে সশস্ত্র যুদ্ধ করেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পরবর্তী সময়ে জেনারেল ওসমানি দেয়া পত্রটি হারিয়ে ফেলেছে পরিবার। পাশ্ববর্তী মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, মোশারফ হোসেন ও আওয়ামীলীগ নেতা আতাউল্যাহ খান বাহাদুর জানান, বুলু মিয়া একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভারতে প্রশিক্ষন ক্যাম্পে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন তিনি। জীবিতকালে তিনি ভাতাও সরকারী সুযোগ-সুবিধার জন্য চেষ্টা করেও পাননি।
বুলু মিয়ার একমাত্র ছেলে মো: মোস্তফা জানান, উপজেলা ভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধাও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার বাবার নাম রয়েছে ১৬নম্বরে। অথচ ক্রম তালিকায় তার পেছনে থাকা ব্যক্তিও সবধরনের সুযোগ ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ আমার বাবার ভাতা প্রদানে এগিয়ে আসবে তা আমরা আশা করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান, বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হবে।