দৈনিক ফেনীর সময়

ইয়াকুবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফাটল, ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

আজহারুল হক :

নির্মাণের মাত্র দশ বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। ফেটে একাকার ভবনের বেইজমেন্ট পিলার, দোতলার বারান্দা ও সিঁড়ি। বর্ষায় ছাদ ছুঁইয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি। ভবনজুড়ে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় অনেকগুলো ফাটল। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার ইয়াকুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র দ্বিতল ভবনের এ দৃশ্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ২০০৯/১০ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত হয় বিদ্যালয়টির নীচ তলা। এর ১ বছর পর ২০১০/১১ অর্থবছরে নির্মান করা হয় দোতলা। নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলে নির্মাণকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-অভিভাবক ও এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তখন সেই প্রতিবাদ কানে নেয়নি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের যথাযথ তদারকির অভাবে দায়সারাভাবে ভবনটি নির্মাণ করেন আলা উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন নামে দুই ঠিকাদার।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে ফাটল দেখা দেয়। একাধিক জায়গায় ফাটল থাকায় বিদ্যালয়টি প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশেই রয়েছে জরাজীর্ণ একটি ছোট টিনসেড পরিত্যক্ত ঘর। মেরামত না করলে চাইলেই সেখানেও শ্রেণি কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে ১ বান্ডিল ঢেউটিন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

জানা গেছে, ১৯৩৬ সনে শিক্ষানুরাগী পন্ডিত মুজিবল হক ভূঁইয়া, মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা আক্তারুজ্জামান ও মাস্টার শামসুল হক এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ করা হয়।

অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ে এ ভবনটি ব্যতিত কোন ভবন নেই। অতএব এ ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে আমি আমার ছেলেকে আর রাখবো না। আমি তাকে অন্যত্র ভর্তি করিয়ে দেব।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার বলেন, আমরা খুবই আতংকের মধ্যে রয়েছি। কী করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রেণি কার্যক্রম চালাব বুঝতে পারছিনা। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা বলেন, আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের দাবী করছি। একইসঙ্গে তিনি মাত্র ১০ বছরে কীভাবে একটি ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এ প্রসঙ্গে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিকল্প শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যালয়ের ভেতরে একটি টিনশেড ঘর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!