অনলাইন ডেস্ক:
মন্ত্রনালয় ও প্রশাসন নিয়ন্ত্রনে রাখতেন কাদের মির্জা
উপজেলা আওয়ামী লীগ কাদের মির্জার কাছে ছিল জিম্মি ও নির্যাতন
অবৈধ অর্থ উপার্জনের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক দ্ব›দ্ব
চাঁদা না পেলে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিতেন
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা নির্যাতন ও প্রতিষ্ঠান দখল
আতঙ্কের নাম ছিল হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ক্ষমতার দাপটেই তার ছোট ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছিলেন। সন্ত্রাসের গডফাদার, সকল ঠিকাদারী নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ-বদলী বাণিজ্য, অন্যের সম্পত্তি দখল, রাজনৈতিক মুক্তিপন আদায়, ব্যাপক চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য ও অবৈধ-অনৈতিক পথে টাকা উপার্জন করাই ছিল তার নেশা এবং পেশা। বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরের রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার কারণেই কেউ তাকে কিছুই বলার সাহস পেত না।
শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন নয়, নিজ দলের প্রতিপক্ষকেও তিনি দমিয়ে রাখতে সব ধরনের অপকর্ম করেছেন। নিজের ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য নিজস্ব লোকজন দিয়ে হেলমেট বাহিনী ও হাতুড়ি বাহিনী গঠন করেন। এ দু’বাহিনী দিয়ে কাদের মির্জা এ জনপদে সন্ত্রাসের একচ্ছত্র গডফাদার হয়ে ওঠেন। এখানকার প্রশাসন, পুলিশ সবই ছিল তার কাদের মির্জার নিয়ন্ত্রণে। তার মতের বিপরীত মনের হলেই বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে ওই সকল কর্মকর্তাদের বদলী করিয়ে দিতেন। কাদের মির্জার ভয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও তটস্থ থাকতেন।
মন্ত্রনালয় ও প্রশাসন নিয়ন্ত্রনে রাখতেন কাদের মির্জা
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় ছাড়াও ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রনালয় এবং প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে রেখেই কাদের মির্জা শত শত কোটি টাকা অবৈধ উপার্জন করেন। সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রনালয়ে ভাই কাদের মির্জা ও তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদেরের দু’টি সিন্ডিকেট ছিল। ওই একই ব্যাক্তিরাই এ দু’টি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতো।
দু’টি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক ব্যাক্তিরা হলেন, সাবেক সচিব বেলায়েত হোসেন, সাবেক পিআরও আবু নাছের, ওয়ালিদ, পিও সুকেন চাকমা, এপিএস আবদুল মতিন, ব্যাক্তিগত সহকারি পিএস জাহাঙ্গির কবির, সাবেক পিএস গৌতম পাল (বর্তমান বিআরটি এর চেয়ারম্যান), বিআরটি এর সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, বিআরটি এর ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলের অফিস সহকারি হাসান বিন আদাজ, উচ্চমান সহকারি ইমদাদুল হক শাশীম, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়র অফিস সহায়ক সাহেদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল-২ এর রেকর্ড কিপার জহিরুল ইসলাম, জেলা সার্কেল রেকর্ড কিপার তছলিম মাহমুদ, নঈম উদ্দিন চৌধুরী।
ওবায়দুল কাদের, তারই ভাই কাদের মির্জা ও তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদের এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা অবৈধ অর্জন করেছেন। এসব টাকা ভারত, দুবাই, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে সম্পদ গড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ কাদের মির্জার কাছে ছিল জিম্মি ও নির্যাতন
দীর্ঘ ১৬ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্র অনুমোদিত কোন কমিটি ছিল না। কাদের মির্জা নিজেই একই দিন একাধিক কমিটি ঘোষণা করতেন। তিনি সকালে একটি কমিটি দিয়ে বিকেলে আবার আরেকটি কমিটি ঘোষণা দিতেন। এটা ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক দলীয় কর্মকান্ড। কাদের মির্জার পরিবারের কাছে ছিল কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ জিম্মি।
কোম্পানীগঞ্জের মানুষের আতঙ্কের নাম হলো কাদের মির্জা। ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য তৈরী করেন হেলমেট বাহিনী ও হাতুড়ি বাহিনী। তার এ বাহিনীদের ব্যবহার শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ছাড়াও তার নিজ দলের প্রতিপক্ষকেও দমন করে নিজ ক্ষমতাকে জানান দিতেন।
এ জনপদে আতঙ্কের নাম ছিল দু’বাহিনী হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী। এ দু’বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন, কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা, বসুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো: রাসেল, হামিদ উল্যাহ ওরফে কালা হামিদ, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আইনুল মারুফ, সাধারণ সম্পাদক মো. তন্ময়, বসুরহাট পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ, সানিম ওরপে শিশু লীগ, বোরহান উদ্দিন, শহিদ উল্যা ওরফে কেচ্ছা রাসেল, বাংলাবাজারের পিচ্চি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদ। কেচ্ছা রাসেল ও পিচ্ছি মাসুদ কোম্পানীগঞ্জের চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুরের অনুসারীদের দিকে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গ্রেপ্তার হলেও কাদের মির্জার তদবিরে কিছুদিন পরই কেচ্ছা রাসেল জামিনে ছাড়া পান।
এ বাহিনী অস্ত্রধারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাজান সাজু, সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষ চন্দ, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, জামায়াত নেতা ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
এ ছাড়া হেলমেট বাহিনী স্থানীয় সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষ চন্দর বাড়িতে হামলা চালায়। কুপিয়ে আহত করা হয় প্রশান্ত এবং তার মা ও ছেলেকে। ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মির্জা বাহিনীর সদস্যরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আরেক সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে কাদের মির্জার এক অনুসারী বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক আইনে মামলা করেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ছিল কাদের মির্জার কাছে জিম্মি। তারা দু’ভাই মিলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ টাকা উপার্জনে দলকে ব্যবহার করে আসছিল। আমরা আওয়ামী লীগ করেও সব সময় আতঙ্কে ছিলাম। দুই ভাই মিলে পুরো এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর কোম্পানীগঞ্জে ৬৯জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায় হেলমেট বাহিনী। এই বাহিনীর অত্যাচারে বসুরহাট বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এলাকায় থাকতে পারেননি।
অবৈধ অর্থ উপার্জনের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক দ্ব›দ্ব
ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে অবৈধ অর্থ উপার্জনের টাকা ভাগবাটোয়াকে কেন্দ্র করে কাদের মির্জা ও তার ভাবী ইসরাতুন্নেসা কাদেরের মধ্যে পারিবারিক দ্ব›দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্ব›েদ্বর জের ধরে বড় ভাই ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কাদের মির্জা ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে থাকলে তার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি চাপরাশির হাটে প্রতিপক্ষের মিছিলে হামলা চালায় কাদের মির্জার বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। এ ঘটনায় মামলা হলেও কারও নাম উলে¬খ করার সাহস পায়নি মুজাক্কিরের পরিবার। একই ঘটনায় শ্রমিক লীগ কর্মী আলা উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
চাঁদা না পেলে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিতেন
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় যেকোনো উন্নয়ন কাজ করতে গেলে কাদের মির্জাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো ঠিকাদারদের। না দিলে কাজ বন্ধ করে দিতেন তার বাহিনী দিয়ে। আবার এসব কাজের বেশির ভাগ পেতেন তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদাররা। গত ১৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় মোট উন্নয়ন কাজ যা হয়েছে, তার মধ্যে প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে কমিশন নিতেন কাদের মির্জা।
এদিকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল, বিআরটিএ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন নিয়োগ-বাণিজ্য থেকে কাদের মির্জাকে দিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করতেন ওবায়দুল কাদের। নোয়াখালীর প্রত্যেক সংসদ সদস্য তাকে চাঁদা দিয়ে মনোনয়নসহ এলাকার কাজ করতে হতো। ২০২১ সালে নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর কাছ থেকে চাহিদামতো চাঁদা না পেয়ে আবদুল কাদের মির্জাকে দিয়ে শাসিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা নির্যাতন ও প্রতিষ্ঠান দখল
কাদের মির্জা তার বাহিনী দিয়ে এলাকার অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দখল করেন বিভিন্ন ভবন, প্রতিষ্ঠান ও জমি। এর মধ্যে উলে¬খযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো সাত্তার ব্রাদার্স (সাত্তার বেকারি), ফখরুল ক্লথ স্টোর, হুমায়ূন টিম্বার, ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফেন্সী হোটেল, আজমীর হোটেল, গাজী অ্যান্ড সন্স, ছায়েদ ম্যানশন (৬ তলা বিপণি বিতান ও আবাসিক ভবন), কাউন্সিলর ছায়েদল হক বাবুলের আলেয়া টাওয়ার, মাওলা শপিং সেন্টার, মডার্ন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেলাল হার্ডওয়্যার, সেলিম স্টোর, মেহরাজ প্ল¬াজা। নানা অজুহাতে এগুলো বিভিন্ন সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চাঁদা নিয়ে খুলে দেন।
বসুরহাট বাজারে মেইন রোডে লন্ডন প্রবাসীর আবু ছায়েদের ছয়তলার ছায়েদ ম্যানশন ও হাসপাতাল গেইটে জাহান মঞ্জিল নামে চারতলা ভবন দখল করে নেন কাদের মির্জা। ছায়েদ ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটি থেকে পৌরসভার কর্মচারীদের দিয়ে ভাড়া তুলতেন। জাহান মঞ্জিল মালিক আবু ছায়েদকে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেন নিজ দলের নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীমের কাছে। তবে ৫ আগস্টের পর ভবনটি দখলমুক্ত হয়ে আবু ছায়েদের মালিকানায় যায় বলে জানা গেছে। কাউন্সিলর ছায়েদুল হক বাবুলের স্ত্রী আলেয়া বেগমের মালিকানাধীন বসুরহাট রূপালী চত্বরে আলেয়া টাওয়ার নামে চারতলা ভবনটি কাদের মির্জা পৌরসভা টর্চার সেলে বাবুল ও তার স্ত্রী আলেয়াকে আটক করে মির্জা নিজ স্ত্রী আক্তার জাহান বকুলের নামে লিখে নেন।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তার অত্যাচারে জেলার অন্যতম একটি ব্যবসাকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়েছিল, যা এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বসুরহাট বাজারের আমিন মার্কেটের মালিক আশিক-ই-রসুলকে কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান কাদের মির্জা। কাদের মির্জার নির্দেশে পৌর সচিব কাদের মির্জার নামে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কাদের মির্জা। আশিক-ই-রসুল বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পর আমার মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।’
বসুরহাট বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। শত শত দোকান দখল করে পৌরসভার নামে ভাড়া তুলে তিনি নিজেই ভোগ করতেন।
এদিকে, গত ৫ আগস্টের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় মির্জা’সহ ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের সকল সদস্য। এ পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় হত্যা মামলা’সহ মির্জার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। মামলা পরবর্তী মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকা কালিন সময় আমার বাবা (মেয়র মির্জা) বিএনপি ও জামায়াতের উপজেলা শীর্ষ নেতাদের প্রতিমাসে সম্মানি দিয়ে তাদের হাতে রেখে ছিলেন। আমরা কখনও তাদের হয়রানি করিনি। কিন্তু তারা এখন আমাদের বিভিন্ন মামলার আসামি করতেছে। অথচ আমরা সকল সুবিধা দিয়েছে এ নেতাদের।
এসব বিষয়ে জানতে আবদুল কাদের মির্জার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে (০১৭১১৮৯০৭১৮) একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।