কিশান মোশাররফ
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের মুসলমানদের ওয়াকফ (দানকৃত) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করণের নগ্ন বিল পাস করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। ওয়াকফ আইন পাসের ফলে এর অধীনে থাকা সকল সম্পদ হবে রাষ্টরের। যার ফলশ্রুতিতে ভারতের মাটিতে মুসলিমদের দানকৃত সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠত মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান হবে অবৈধ স্থাপনা এবং এই অজুহাতে এই সকল প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে আইনগত কোন বাধা থাকবেনা অর্থাৎ মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব থাকবেনা। অত্যন্ত সুকৌশলে একের পর এক মুসলিম নিগ্রহের খেলায় মেতেছে নরেন্দ্র মোদি। তার এই ঘৃণ্য কর্মকান্ডের উপজিব্য শক্তি অর্থলোভী ও দলীয় আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী এবং দলীয় ক্যাডার বাহিনী। এর আগে এনআরসি, কাশ্মিরের স্বায়ত্ব শাসন রহিত করণ আইন ও নাগরিকত্ব আইন পাসের মাধ্যমে মানুষ, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সৌহাদ্যের পরিচয় রেখায় গভীর উন্নান জ্বালিয়ে দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ত্ব মৌলবাদী অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী সরকার। মুসলমানদের পরিচয়, আহার, বাসস্থান, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মৃত্যু পরবর্তী দাফন বা সৎকার করার নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন অধিকার হরণের নগ্ন খেলার বীরুদ্ধে আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়। মুসলমানদের সাথে সর্বভারতীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবি সংগঠন ও সম্প্রদায় একাত্মতা প্রকাশ করে এই বর্বর আইনের বীরুদ্ধে আন্দোলনে কন্ঠ মিলিয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে মানুষে মানুষে হানাহানি, ধর্মের নামে বৈষম্য সৃষ্টি করার হীনকর্মে সাধারণ মানুষের কোন আস্থা নাই। মানুষ চায় শান্তিপ্রিয় সহ অবস্থান। ইতিমধ্যে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ আইনের কার্যকারিতা স্থগিত করে একটি রায় দিয়েছে। ভারতের ‘পদ্মভ’ষণ’ সর্ব্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদকে ভূষিত কিংবদন্তী গণসংগীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা যেমন গেয়েছিলেন-
‘মোরা যাত্রী একই তরণীর
সহযাত্রী একই ধরণীর
যদি সংঘাত হয় তবে
ধ্বংস হবে
গর্ব মোদের প্রগতির’। -ভূপেন হাজারিকা
যে উদার সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের পরিচয় ভারতের ছিলো, সে পরিচয় আজ ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার পুঁজিবাদী ধর্ম দোহাইয়ের নামে ভ’লন্ঠিত হতে চলেছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা ও অপশ্লোগানের দ্বারা সাম্য ও মানবতা’কে হত্যা করতে চলেছে। পূথিবীর সকল ধর্মে পরস্পর পরস্পরে শান্তি ও সৌহাদ্য বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। কাউকে জোর পূর্বক, গায়ের জোরে, সংখ্যাধিক্যের জোরে, ভয় ভীতি প্রদর্শন করে ধর্মান্তরিত করার মর্মবাণী কোন ধর্ম গ্রšে’ই নাই। যুগে যুগে মহামনিষীগণ ধর্ম প্রচারকগণ তাদের আচার-আচরণ, শিষ্টাচার, ন্যায়পরায়নতা, ধৈর্য্য, পরমতসহিষ্ণুতা, অন্যায়ের প্রতিবাদ, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, জাতপাতহীন উদার ভালোবাসার মাধ্যমে স্ব-স্ব চর্চায় মানুষকে নিজেদের অনুগামী করেছেন। কিন্তু আজ বিশ্বময় কিছু কুলাংগার মানুষ ধর্মের পীঠে সওয়ার হয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে জাতিতে জাতিতে বিভেদ সৃষ্টি করছে। নরেন্দ্র মোদীদের বিজেপি সেই নগ্ন চেহারায় অবতীর্ণ হয়েছে। মুসলিমদের মধ্যে যেমন আইএস, আল কায়দা, তালেবান, আল্লার দল ইত্যাদি ধর্মীয় পরিচয় সামনে এনে রক্তপাত সৃষ্টি করছে। যার পরিণামে ওরা ধর্মকেই কুলুষিত করছে। এ জন্য এক জাতি অপর জাতির ধর্মকে হেয় করছে, অবজ্ঞা করছে, গালাগাল করছে। এসব ক্রিয়া কর্ম কখনোই ধর্ম চর্চার অংশ হতে পারেনা। এসবের দ্বারা মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভতো হবেইনা বরং অপদেবতার সঙ্গী হয়ে নরকবাস হবে শেষ এবং চুড়ান্ত ঠিকানা।
ভারতে বহু ধর্মচারী জাতি গোষ্ঠীর বসবাস। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, শিখ, জৈন, ইহুদী এমন আরো প্রায় বিশটির অধিক ধর্মীয় পরিচয়ের মানুষের বসবাস ভারতে। সংখ্যা গরিষ্ঠ হিন্দু এবং হিন্দুত্ববাদকে সামনে এনে কেন একক ভাবে মুসলিম বিদ্বেষী আইন। মুসলমানরা কি হিন্দুদের জন্য হুমকী কিংবা হিন্দু ধর্মের জন্য শুধু ভারত নয় বিশ্বের অপর কোন প্রান্তেও হুমকীর কারণ হয়েছে এমন একটি নজিরওকি সামনে আনা যাবে? যাবেনা। তবে কেন একক ভাবে মুসলিম বিদ্বেষী আইন? আজ থেকে দুই যুগ আগেও ভারতের রাজনীতিতে বিজেপির অবস্থান ছিলো শূণ্যের কোটায়। সেই বিজেপি হিন্দুত্ববাদের রক্ষকের কুলটা বেশ ধারণ করে ধর্মপ্রাণ সাধারণ হিন্দুদের কাছে দেবতুল্য হয়ে উঠবার প্রায়সে উগ্র, মনগড়া, বানোয়াট ধর্মতত্বীয় ঘটনাবলীর ফাঁদ তৈরী করে ক্ষমতার মসনদ দখল করতে সামর্থ হয়েছে। এখন সেই ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী ও পাকাপোক্ত করতে ধর্র্মীয় সংঘাতকে জিইয়ে রাখবার কৌশল হিসেবে এসব আইনের অবতারণা করছে বলে বুদ্ধিভিত্তিক সচেতন ভারতীয় হিন্দুরা মনে করছে। সাধারণ হিন্দুরাও বিজেপির এসব অপকৌশল বুজতে শুরু করেছে। যার ফলশ্রুতিতে নাগরিকত্ব আইন পাস হবার পর থেকে নয়াদিল্লীসহ অনেক রাজ্যে অন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে সর্ব ভারতীয় জনগণ। চলমান বিশ্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকে বর্তমানের সময়গুলোতে ভারত নিম্নগামী। বাণিজ্যিক প্রসারতায় ভাটা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভাটা, নিত্যপণ্য দ্রব্যমূল্যে উর্ধŸগতি, আভ্যন্তরীন উন্নয়নে শ্লথ গতি। এ সব থেকে মানুষের নজর অন্যত্র সরাতে ধর্মকেই পূণঃরায় মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে বেচে নেয়া ছাড়া গত্যন্তর মনে করেনি উগ্র হিন্দু মৌলবাদী অমিত শাহ, মোদির বিজেপি সরকার। এসব বর্ণচোরা হিন্দু মৌলবাদীরা সাধারণ হিন্দদের মুসলিম বিদ্বেষী করে ক্ষেপিয়ে তুলতে মনগড়া ইতিহাস কাব্য প্রচার করে চলেছে। তারা বলে বেড়ায় ভারতের স্বাধীণতা সংগ্রামে মুসলমানদের কোন অবদান নাই। পাঠ্যপুস্তক থেকেও তারা মুসলিম বীরদের অত্মত্যাগের ইতিহাস সরিয়ে ফেলছে। ভারতীয় একজন লেখক রণবীর ভট্টাচার্য তার এক লেখায় এভাবেই ক্ষেধোক্তি প্রকাশ করে লিখেছেন- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নাকি মুসলিমদের কোন অবদান নেই।
আমার দেশের যে কোন শ্রেণীর পাঠ্য পুস্তক পড়লে ইহাই বোঝা যায়। আর এই মিথ্যাচার মূলক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বহু উগ্রপন্থী হিন্দুই প্রশ্ন তোলে যে মুসলমানদের এই দেশে থাকা উচিৎ নয়, কারন তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহন করেনি। অথচ সত্য ইতিহাস বলছে মুসলিমদের তাজা রক্তে এই ভারত মুক্তি পেয়েছে। জেল খাটা এক কোটি মুসলমানের আত্মবলিদান ও ফাঁসি হওয়া পাঁচ লক্ষ মুসলমানের প্রানের বিনিময়ে আজ ভারত স্বাধীন। ভারতের ইতিহাসের পাতা ওল্টালে যাদের নাম অবশ্যই পাওয়া যায় তারা হলেন– গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, অরবিন্দ, জওহরলাল, মতিলাল প্রমুখদের নাম। কিš‘ এদের চেয়েও বেশী বা সমতুল্য নেতা আতাউল্লাহ বুখারী, মাওলানা হুসেন আহমদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা গোলাম হোসেন প্রমুখ (এনারা বহু বার দীর্ঘ মেয়াদী জেল খেটেছেন) তাদের নাম ভারতের ইতিহাসে নাই। ইংরেজ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য যার নামে সর্বদা ওয়ারেন্ট থাকতো। সেই তবারক হোসেনের নামও ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না।
তৎকালিন সময়ে সারা হিন্দুস্থানের কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন হাকিম আজমল খাঁ। যার সংস্পর্শে আসলে হিন্দু-মুসলিম নব প্রান খুঁজে পেতো, সেই হাকিম আজমল খাঁ কে লেখক বোধ হয় ভূলে গিয়েছেন। বস্তুত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সর্বোচ্চ অবদান ছিলো মুসলমানদের। ভারতের স্বাধীণতা সংগ্রামের স্মৃতিফলক ইন্ডিয়া গেইট বা দিল্লি গেইট নামক মন্যুমেন্টে ৯২ হাজার শহীদের তালিকায় ৬২ হাজারের অধিক বীরের নাম তারা মুসলিম।
উপমহাদেশের বিখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শক্তিশালী কেন্দ্র হিসাবে ব্রিটিশ রাজের ভয়ের কারণ হয়ে ওঠেছিল। দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ মাওলানা আবুল কাশেম নানুতবি র: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের হুলিয়া জারি হয়। একবার তিনি সকাল বেলা সাদামাটা পোষাকে মসজিদ ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। এমন সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ব্রিটিশ সিপাহী তাঁর খোঁজে হাজির হয়। তারা তাকে চিনতোনা।
অগত্যা তাকেই জিজ্ঞেস করলো- কাশেম নানুতবিকে দেখেছেন? তিনি মসজিদে দাঁড়ানো কিন্তু মসজিদে দন্ডায়মান থেকে কিভাবে মিথ্যা বলবেন। অগত্যা তিনি গভীর হেকমতের সাথে উত্তর করলেন। ঝাড়ু হাতে যে স্থানটাতে তিনি দন্ডায়মান ছিলেন সে স্থান হতে খানিকটা সরে গিয়ে উত্তর করলেন- একটু আগেতো ঐ খানে ছিলো। ওরা অন্য দিকে খুঁজতে শুরু করলে সেই ফাঁকে তিনি সটকে পড়েন। সেই দেওবন্দ মাদরাসা আজও আছে। ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষার মহীরুহ প্রতিষ্ঠান হয়ে ভারতের পরিচয়ে বিশ্বময় আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
ব্যার্থ অভ্যুর্থানের নায়ক খুঁদিরাম’কে আমরা সবাই জানি। তার নামে যে গান প্রকাশিত হয়েছে তা আজও মানুষকে বেদনায় ভারাক্রান্ত করে। একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি হাসি হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে ভারত বাসী
একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি। ব্রিটিশ কমান্ডার কিংস ফোর্ডকে ব্যার্থ হত্যা চেষ্টায় খুঁদিরাম মহানায়ক হয়েছেন কিš‘ যিনি সেই কুখ্যাত কিংস ফোর্ড’কে হত্যা করলেন সেই সফল বিল্পবী বীর শের আলীর নাম ভারতের ইতিহাসের পাতায় অনুজ্জ্বল ?
মহাত্মা গান্ধী যার সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া চলতেই পারতেননা, তিনি হলেন জওহরলাল। যিনি না থাকলে গান্ধী উপাধিটুকুও পেতেন না। আজাদ ফৌজ যার নামের অলংকার, সেই মাওলানা আজাদকে পর্যন্ত ইতিহাসের পাতা থেকে বাদ দেওয়া হল। মাওলানা মুহাম্মদ আলি ও শওকত আলি। পাঁচ বার দীর্ঘ মেয়াদে জেল খেটেছেন।
‘কমরেড’ ও ‘হামদর্দ’ নামক দুটি ইংরেজ বিরোধী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তারা। খাজা আব্দুল মজীদ ইংল্যান্ড থেকে ব্যারিস্টারী অর্জন করে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন। জওহরলালের সমসাময়িক কংগ্রেসের কর্মী ছিলেন তিনি। বিল্পবী কর্মকান্ডের কারণে তার এবং তার স্ত্রী উভয়ের জেল হয়। ১৯৬২ সালে তার মৃত্যু হয়।
ডাবল এম.এ এবং পি.এইচ.ডি ডিগ্রিধারী প্রভাবশালী জেল খাটা সংগ্রামী সাইফুদ্দিন কিচলু। বিপ্লবী মীর কাশেম, টিপু সুলতান, মজনু শা, ইউসুফ এরা ব্রিটিশদের বুলেটের আঘাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও ইতিহাসের পাতা থে
নিশ্চিহ্ন হলো কিভাবে? সর্ব ভারতীয় নেতা আহমদুল্লাহ। তৎকালীন সময়ে ৫০ হাজার রুপি যার মাথার মূল্য ধার্য করেছিল ব্রিটিশ রাজ। জমিদার জগন্নাথ বাবু প্রতারনা করে, বিষ মাখানো পান খাওয়ালেন নিজের ঘরে বসিয়ে । আর পূর্ব ঘোষিত ৫০ হাজার রুপি পুরষ্কার জিতে নিলেন। স্বাধীণতা আন্দোলনের আরেক সৈনিক মাওলানা রশিদ আহমদ। যাকে নির্মম ভাবে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়।
মাওলানা ওবায়দুল্লাহ জেলেই মারা গেলেন। জেল খাটা নেতা ইউসুফ, নাসিম খাঁন, গাজি বাবা ইয়াসিন, ওমর খান তাদের নামও আজ ইতিহাসে নেই। ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর কুদরতুল্লাহ খানের মৃত্যু হয় কারাগারে। ইতিহাসের পাতায় নেই তার মৃত্যু ঘটলো কিভাবে? সুভাষ চন্দ্র বসুর ডান হাত আর বাম হাত যারা ছিলেন। ইতিহাসে তাদের নাম খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা হলেন আবিদ হাসান, শাহ নেওয়াজ খান, আজিজ আহমদ, ডি এম খান, আব্দুল করিম গনি, লেফট্যানেন্ট কর্নেল জেট কিলানি, কর্নেল জ্বিলানী প্রমুখ। এদের অবদান ধর্মচোরা ইতিহাস কারকরা বিলীন করে দিতে চায়? বিদ্রোহী গোলাম রব্বানী, মাওলানা আক্রাম খাঁ, সৈয়দ গিয়াসুদ্দিন আনসার। এদের খুন আর নির্মম মৃত্যু কি ভারতের স্বাধীনতায় কাজে লাগেনি? বিখ্যাত নেতা জহুরুল হাসানকে হত্যা করতে মোটা অঙ্কের পুরষ্কার ঘোষনা করে ইংরেজ সরকার। মাওলানা হযরত মুহানী তিনিই সর্বপ্রথম আওয়াজ তোলেন ব্রিটিশ বিহীন স্বাধীনতা চাই।
তিতুমিরের বাঁশের কেল্লার যুদ্ধ। হাফেজ নিশার আলি যিনি তিতুমীর নামে খ্যাত। তার সেনাপতি গোলাম মাসুমকে কেল্লার সামনে ফাঁসি দেওয়া হয়। বিখ্যাত নেতা আসফাকুল্লা। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বীর আব্দুস সুকুর ও আব্দুল্লা মীর, কলকাতার হিংস্র বিচারপতি জর্জ নরম্যান হত্যাকরী আব্দুল্লাহর নামও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছে বা হচ্ছে। সত্য হচ্ছে এই- ইতিহাসের অমর সত্য কেউ মুছে ফেলতে পারেনা। অধর্ম, কুটিলতা দিয়ে কখনো ধর্ম প্রতিষ্ঠা হয়না। মিথ্যা প্রহসন দিয়ে সাময়িক সুখ আস্বাধন করা যায় মাত্র, তবে তা চিরস্থায়ী হয়না।
ছুটকী : এক ক্যনভাসার রোজ মাইকে তার আয়ুর্বেদিক ঔষধের পক্ষ্যে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেন- চিটিংবাজী বাটপারী দীর্ঘ দিন চলে কিন্তু চিরদিন চলেনা। গেরুয়া উগ্রবাদী মোদিদের হিংসার রাজত্ব হয়তো আরো দীর্ঘ মেয়াদী হবে কিন্ত চিরস্থায়ী হবেনা। এটাই ইতিহাসের সত্য।
– লেখক : চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, প্রাবন্ধিকর ও সাংবাদিক।