চিয়া সিড দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে জনপ্রিয়, বিশেষ করে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এর ভূমিকার জন্য। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে আরেকটি আশাজাগানিয়া তথ্য— চিয়া বীজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। ‘পাবমেড’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, নিয়মিত ও সঠিক নিয়মে চিয়া সিড খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চিয়া সিড রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া এতে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হার্ট ও ব্রেইনের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। চিয়া সিড থাকা আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করে। এর ফলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের হয়ে যেতে সাহায্য করে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
গবেষকদের মতে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শুধু রক্তচাপ নয়, মন-মেজাজ স্থির রাখা এবং উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমাতেও কার্যকর। এছাড়া চোখের সুস্থতায়ও এই উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদিও এই ফ্যাটি অ্যাসিড সাধারণত সামুদ্রিক মাছ থেকে পাওয়া যায়, কিন্তু যারা মাছ পছন্দ করেন না বা খাদ্যাভ্যাসে মাছ কম খান, তাদের জন্য চিয়া সিড একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
চিয়া সিড খাওয়ার কিছু কার্যকর উপায়:
১. এক রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই চিয়া সিড দুধ ও শুকনো ফলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর।
২. দইয়ের সঙ্গে চিয়া ও এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে ও পেট ঠান্ডা থাকে।
৩. ভেজানো চিয়া সিড ব্লেন্ড করে দইয়ের সঙ্গে স্মুদি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে, এটি সুস্বাদুও হয়।
৪. ওটমিল, শসা ও চিয়া সিড দিয়ে তৈরি সালাদ লিভারের জন্য উপকারী।
মাত্র দুই চা চামচ চিয়া সিড থেকে আপনি পাবেন প্রায় ১৩৮ ক্যালোরি, যার মধ্যে ৫ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১০ গ্রাম ফাইবার থাকে। এছাড়া এতে ক্যালসিয়াম রয়েছে প্রায় ১৭৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ২ মিলিগ্রাম ও জিঙ্ক ১.৩ মিলিগ্রাম।
তবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন— চিয়া সিড যতই উপকারী হোক, তা অবশ্যই পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। অতিরিক্ত সেবন করলে তা হিতে বিপরীতও হতে পারে।