নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী শহরের তাকিয়া রোডে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এবার বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনোয়ার হোসেন দুলালকেও আসামী করা হয়েছে। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিগত সরকারের সময় দলীয় এক কর্মীকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত বুধবার রাতে আবদুল হান্নান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় এ মামলা করেন। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে হামলার ঘটনায় বাদী আবদুল হান্নান নিজে আহত হয়েছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন। মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করে ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আরও ২০০-২৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের বড় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র-জনতা। এতে অংশ নেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ছেরাজুল হকের ছেলে ফেনীর তাকিয়া রোডে ওয়ার্কশপ কর্মচারী মো: আবদুল হান্নান (৩২)। এসময় আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তাদের ছোঁড়া গুলি ও ককটেলের শব্দে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। এসময় হান্নানের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি শটগানের ছররা গুলি লাগে। পরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামিরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যান। গুলির আঘাতে তার বাঁ চোখ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে গেছে ও অন্য চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি রয়েছে। এ মামলায় মনোয়ার হোসেনকে ৬৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানা যায়, ফেনীতে একজন দলীয় কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে মনোয়ার হোসেন এক লাখ টাকা পুরস্কার নিয়েছেন। তাঁকে সংগঠনবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
ফেনী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ রুহুল আমিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।