আরিফ আজম :
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় প্রায় গোটা সড়কজুড়েই গর্ত ও খানাখন্দ। প্রায় সবটুকুর পিচ উঠে গেছে। ওই সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে। চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বেশি ভোগান্তিতে পড়েন স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা। শুধু তাই নয়, হাসপাতালগামী নারী-পুরুষরা বেকায়দায় পড়েন প্রায়ই। সামান্য বৃষ্টি পড়লেই এসব খানাখন্দ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। শহরের কোলঘেঁষা তুলাবাড়িয়া এলাকায় সরেজমিনে এ চিত্র। প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কটি কালিদহ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, তুলাবাড়িয়া হাই স্কুল সংলগ্ন স্থান থেকে দশমি ঘাট, জয়নাল হাজারী কলেজ ও লালপো এলাকা পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বেহাল। এই এলাকায় তুলাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, তুলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, দূর্গামন্দির, তপবনাশ্রম রয়েছে। এই সড়কে তুলাবাড়িয়া ও আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ইট-খোয়া উঠে যাওয়ায় বর্ষায় হেঁটে চলাচলও মুশকিল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০০২-২০০৩ সালের দিকে সড়কটি পাকাকরণ করা হয়েছিল। ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর তৎকালীন সংসদ সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি সড়কটির উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর ২০১১ সালের দিকে মেরামত করা হয়। তবে সেটি বেশিদিন টিকেনি। এরপর এ সড়ক আর মেরামত করা হয়নি। সড়কটি সংস্কার করা ছাড়া বিকল্প নেই বলে তারা জানান।
রাহুল চন্দ্র দাস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, তিনি ফেনী শহরের মহিপালে একটি ফলের আড়তে চাকুরী করেন। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল অবস্থা দেখে আসলেও প্রতিকারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানান।
তুলাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জিত কুমার দাস ফেনীর সময় কে জানান, তার স্কুলে তুলাবাড়িয়া, আলোকদিয়া, চেওরিয়া, মহেষপুর, মধুপুর, পশ্চিম সিলোনীয়া এলাকা থেকে ১৬ জন শিক্ষক সহ সাড়ে ৩শ শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এই সড়কে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত বরণ দাস জানান, তুলাবাড়িয়া এলাকা হিন্দু অধ্যুষিত। এখানে স্কুল-কলেজ এমনকি তিনটি হিন্দু ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। একটি রাস্তা সংস্কারের অভাবে পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে।
কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম ফেনীর সময় কে জানান, দীর্ঘদিন বরাদ্দের অভাবে রাস্তাটি সংস্কার হয়নি। ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর ঐকান্তিক চেষ্টায় এলজিইডি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাস গুপ্ত বলেন, ইতিমধ্যে সড়কটি সংস্কারে এলজিইডির পক্ষ থেকে ৪ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। সংস্কার হলে মানুষের দূর্ভোগ কমে যাবে।
জানতে চাইলে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল ফেনীর সময় কে বলেন, তুলাবাড়িয়ায় সড়কের পাশে ছোট-বড় ১৭টি পুকুর রয়েছে। নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছানো এবং টেকসই সংস্কার নিশ্চিতের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। আশা করছি নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কাজ শুরু হবে।