নিজস্ব প্রতিনিধি :
দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের নয়ানপুর গ্রামে গতকাল শুক্রবার ভোরে আগুনে পুড়লো বসত ঘর। আর সেই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে প্রাণ হারালেন প্যারালাইজড বৃদ্ধা জাকিয়া খাতুন (৬৫)। এসময় গৃহকর্ত্রী হোসনে আরা বেগম ও মেয়ে পারভিন আক্তার (২২) দৌড়ে বের হয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
হোসনে আরা বেগম ও বাড়ির লোকজন জানায়, ভোরে ফজরের নামাজের জন্য উঠলে ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে শোরচিৎকারে প্রতিবেশিদের ডাকাডাকি করেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা হলে লোকজন জড়ো হয়ে পুকুরের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। ৯৯৯ কল দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে পুড়ে বিছানায় অঙ্গার হয়ে প্রাণ হারান প্যারালাইজড বৃদ্ধা জাকিয়া খাতুন।
প্রতিবেশি হোসেন আহমদ জানান, গোয়ালঘর ও রান্নাঘর থেকে বসতঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড়সহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরনের কাপড় ছাড়া তাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। প্রবাসে থাকা রমজান আলী এখনো মায়ের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। জুমার নামাজের পর বেলা ৩ টায় জাকিয়া খাতুনের নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আহাদ স্বপন জানান, বৃদ্ধা জাকিয়া দীর্ঘদিন যাবত প্যারালাইসড রোগী ছিলেন। আগুনের তীব্রতায় তিনি বের হতে না পেরে পুড়ে মারা যান।
ফেনী ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা উজ্জ্বল বডুয়া জানান, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা যায়নি। নোয়াখালীর সেনবাগ ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট ও ফেনী ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট যৌথভাবে আগুন নেভায়। আগুনে বসতঘর, রান্নাঘর ও গোয়ালঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাসিম আগুনে পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বজনদের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে ওই বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা। এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা, খাদ্যসামগ্রী ও কম্বল প্রদান করেন।