ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দান-সাদাকা। সাদাকা আরবি শব্দ অর্থ দান। ইসলামী পরিভাষায় দান করাকেই সাদাকা বলা হয়। সাদাকা শব্দটি সিদকুন শব্দ থেকে নিষ্পন্ন। অর্থ- সততা, যথার্থতা, পরিভাষায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য স্থায়ী সম্পদ ব্যয় করাকে সাদাকা বলা হয়। কেননা, মানুষ তার সর্বাপেক্ষা প্রিয় বস্তু এবং জীবন যাপনের প্রধান উপকরণ কষ্টার্জিত মাল ব্যয় করে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার প্রতি ভালোবাসা এবং তার নির্দেশনাবলীর প্রতি আনুগত্যের বাস্তব প্রমাণ দিয়ে থাকে বলে এই ব্যয়কে সাদাকা নামে অভিহিত করা হয়। কুরআন মাজীদে সাদাকা কথাটি সালাতের মতো বিরাশি বার এসেছে, যাকাত শব্দটি এসেছে বত্রিশবার, নামাজের সাথে এসেছে ছাব্বিশ বার, স্বতন্ত্রভাবে এসেছে চারবার, পবিত্রতা অর্থে এসেছে দুইবার। পবিত্র কুরআন মাজীদে ফরজ বা আবশ্যিক ও নফল এ উভয় প্রকার দানকেই সাদাকা বলা হয়েছে। তবে প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র নফল দানকেই সাদাকা বলা হয়ে থাকে। ফরজ দান হলো- যাকাত, ফিতরা ও মান্নতের দান।
নফল সাদাকার প্রকারভেদ : সাদাকা দুই প্রকার ১. সাধারণ সাদাকা ২. সাদাকায়ে জারিয়া।
সাধারণ সাদাকা : সাধারণ সাদাকা হলো গরিব-দু:খীকে দান করা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে দান করা, কাউকে সৎ পরামর্শ দেয়া, কাউকে ভালোবাসা ইত্যাদি।
সাদাকায়ে জারিয়া : মহানবী সা. বলেন সাদকায়ে জারীয়াহ তথা মৃত্যুর পরও যে আমলের সওয়াব ¯’ায়ী থাকে তা হলো- ১. সেই ইলম যা সে প্রচার-প্রসার করে গেছে ২. নেক সন্তান ৩. কুরআনের কপি ৪. নির্মিত মসজিদ ৫. নির্মিত মুসাফির খানা ৬. দান-সদকা, যা জীবিত অবস্থায় দান করেছে।
মহানবী সা. ঐ ব্যক্তিকে সর্বাপেক্ষা বড় দাতা রূপে আখ্যায়িত করেছেন, যিনি পবিত্র কুরআন সুন্নাহর ইলম অন্যদের শিক্ষা দেন। এর পরের স্থান মসজিদ, মাদরাসা, এতিম খানা, রাস্তাঘাট নির্মাণ, পুকুর খনন প্রভৃতি কল্যাণকর কাজে দান করা। এ গুলো সাদাকায়ে জারিয়া বা স্থায়ী পুণ্য লাভের মাধ্যম।
হযরত আবু হোরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন- যখন কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমল বন্ধ হয় না। ১. সাদাকায়ে জারিয়া ২. উপকারী জ্ঞান ৩. নেক সন্তানের দোয়া (শরহে মুসলিম ১১/৮৫)।
কুরআনে দানের নির্দেশ : আল্লাহ তায়ালা সকল নবীকে ফরজ দান তথা যাকাতের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন- আর আমি তাদেরকে (নবীদেরকে) নেতা বানিয়ে ছিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসাওে মানুষকে পথ প্রদর্শন করতো এবং তাদেরকে প্রত্যাদেশ করেছিলাম সৎকর্ম করতে, সালাত কায়েম করতে এবং যাকাত প্রদান করতে আর তারা আমারই ইবাদত করতো (সূরা আম্বিয়া-৭৩)।
আরো ইরশাদ করেন- আর স্বরণ করো, যখন বনী ইসরাঈল থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন ও দরিদ্রদের প্রতি সদয় ব্যবহার করবে এবং মানুষের সাথে সদালাপ করবে, সালাত কায়েম করবে ও যাকাত দেবে (সূরা আল বাকারা- ৮৩)।
অন্যত্র ইরশাদ করেন- “আমি তোমাদের সাথে আছি, যদি তোমরা সালাত কায়েম করো, যাকাত দাও, আমার রাসুলগণকে বিশ^াস কর ও তাদেরকে সম্মান কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর (সূরা আল মায়িদা- ১২)।
হযরত ঈসা আ: বলেন- আর আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে (সূরা মারইয়াম-৩১)। আরো ইরশাদ করেন- সে (ইসমাঈল) তাঁর পরিবারবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তাঁর প্রতিপালকের সন্তোষভাজন (সূরা মারইয়াম-৫৫)।
আল্লাহ তায়ালা বলেন – তারা আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, তারা কী ব্যায় করবে? (আল্লাহ বলেন) আপনি জানিয়ে দিন, যা তোমাদের প্রয়োজনাতিরিক্ত তা দান কর (সূরা বাকারা- ২১৯)। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আর তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট হক রয়েছে ভিক্ষুক ও বঞ্চিত সবার (সূরা মাআরিজ ২৪-২৫)। আরও বলেন- নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নি:স্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে (আল আম্বিয়া-১৯)।
হাদীসে দানের নির্দেশ : রাসূল সা. বলেন মানুষ বলে আমার সম্পদ আমার সম্পদ অথচ তিনটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সম্পদই শুধু তার। ১. যা খেয়ে শেষ হয়েছে ২. যা পরিধান করে নষ্ট করেছে ৩. আর যা দান করেছে। আর অবশিষ্ট সম্পদ যা সে ছেড়ে যাবে, মানুষ তা শুধু নিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম)।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, প্রতিদিন সকালে দ’ুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন দান কারীর জন্য এ দুয়া করেন- হে আল্লাহ দাতার মালে বিনিময় দান করুন তথা তার সম্পদ বাড়িয়ে দিন। আর দ্বিতীয় জন সব কৃপনের জন্য বদ দোয়া করে বলেন, হে আল্লাহ কৃপনের মাল ধ্বংস করে দিন (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।
রাসুল সা. বলেন, হে কাব ইবনে উজরা! নামাজ আল্লাহর নৈকট্য দান কারী, রোজা ঢাল স্বরূপ এবং দান- সাদাকা গুনাহ মিটিয়ে দেয়, যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে। (আবু ইয়ালা)
মহানবী সা. বলেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করবেন। (সহীহ বুখারী -৪৫০) হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. এর সময় একদা সূর্যগ্রহণ হলো, তখন রাসূলুল্লাহ সা. লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। অত:পর তিনি লোকদের উদ্দেশ্যে খুতবা দান করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করেন। অত:পর বলেন, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন আল্লাহ কাছে দোয়া করবে, তার মাহাত্ম ঘোষণা করবে, সালাত আদায় করবে ও দান-সদকা করবে (সহীহ বুখারী-১০৪৪)
রাসূল সা. বলেন কিয়ামতের দিন সাত ব্যাক্তি আরশের নিচে ছায়া লাভ করবে। তন্মধ্যে এক ব্যক্তি হলো- যে এমনভাবে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করেছে বাম হাত তা জানে না। (বুখারী ও মুসলিম) রাসুল সা. বলেন খেজুরের একটি টুকরা দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা কর (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)। রাসুল স. আরো বলেছেন- উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাত অপেক্ষা উত্তম (মুসলিম)।
যারা দান পাওয়ার হকদার : দান পাওয়ার হকদার আট শ্রেণীর মানুষ। ১. গরীব। যার সামান্য পরিমাণ সম্পদ আছে কিš‘ তা দ্বারা তার সংসার চলে না। ২. মিসকীন। যার কিছুই নাই ৩. যাকাত আদায়কারী ৪. নও মুসলিমের জন্য (বর্তমানে এই বিধানটি রহিত হয়ে গিয়েছে) ৫. দাস মুক্তির জন্য ৬. ঋণ গ্রস্তের জন্য ৭. আল্লাহর রাস্তায় তথা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যায়ের জন্য ৮. মুসাফিরকে; যে পথে নি:স্ব হয়ে গিয়েছে, যদিও দেশে তার অনেক সম্পদ রয়েছে। (সূরা তাওবা-৬০)
দানের ফজিলত : দানের রয়েছে অনেক ফজিলত। যেমন- ১. জীবনের সফলতা : যাকাতে রয়েছে সফলতা। যেমন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- অবশ্যই ঐসব মুমিন সফলকাম হয়েছে, যারা নিজেদের নামাজে বিনম্র এবং যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকে আর যারা যাকাত দানে সক্রিয় (সূরা মুমিনুন ১-৪)।
২. বর্ধিষ্ণু ব্যবসা : আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন – নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই এমন ব্যবসায়ের আশা করতে পারে যার ক্ষয় নেই (সূরা ফাতির-২৯)
৩. অধিক সওয়াব : আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- যারা নিজেদের ধন সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস্যবীজ, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রত্যেক শীষে থাকে একশত শস্যকণা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ (সূরা বাকারা- ২৬১)।
৪. চিরস্থায়ী প্রশান্তি : আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তাদের পুরষ্কার রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট এবং তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দু:খিত ও হবে না (সূরা আল বাকারা- ২৭৭)।
৫. ক্ষমা লাভ : শয়তান তোমাদেরকে (দানের ফলে) দারিদ্রতার ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়। আর আল্লাহ তোমাদেরকে (দানের বিনিময়ে) তাঁর ক্ষমা এবং অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন (সূরা বাকারা-২৬৮)।
৬. আত্মার পরিশুদ্ধি : দানের ফলে আত্মা পরিশুদ্ধ হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- তাদের সম্পদ থেকে সাদাকা গ্রহণ করো, তার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করো এবং তাদেরকে পরিশোধিত করো (সূরা তাওবা-১০৩)।
৭. আল্লাহর নৈকট্য লাভ : দানের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন আর মক্কাবাসীদের কেউ কেউ আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে এবং যা ব্যায় করে তাকে আল্লাহর সান্নিধ্য ও রাসুলের দোয়া লাভের উপায় মনে করে। বাস্তবিকই তা তাদের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপায় আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই নিজ রহমতে দাখিল করবেন। নি:সন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু (সূরা তাওবা- ৯৯)।
৮. বঞ্চিতদের প্রতিপালন : আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আর তাদের (মুমিনদের) ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। (সূরা মাআরিজ ২৪-২৫)।
৯. দ্বীনের সাহায্য : দান দ্বারা দ্বীনের সাহায্য করা হয়। যেমন- আল্লাহর বানী- হে মুমিনগণ অভিযানে বের হয়ে যাও হালকা অবস্থায় হোক বা ভারী অবস্থায় এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে তোমাদের মাল ও জীবন দিয়ে (সূরা তাওবা-
৪১)।
দান না করার পরিণতি : আল্লাহ তায়ালা বলেন- আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন। যেদিন জাহান্নামের অগ্নিতে তা উত্তপ্ত করে দেওয়া হবে, সে দিন বলা হবে- এই তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে (সূরা তাওবা ৩৪-৩৫)। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আল্লাহ সুদ নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন (সূরা বাকারা-২৭৬)। হযরত সালেম রা: হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেন, শুধু দু’জন লোকের উপর ঈর্ষা করা যায়।
একজন ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তায়ালা কুরআনের মান দান করেছেন আর সে রাত দিন তা চর্চা করে। অপরজন হলেন যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন আর সে রাতদিন তা মানব কল্যাণে খরচ করে (সহীহ বুখারী)। রাসূল স. বলেছেন- সদকা বিপদাপদ দূর করে দেয়। হযরত আলী রা. এর কাছে একজন মা তার সন্তানের জন্য দোয়া করতে বললে হযরত আলী রা. তাকে কিছু দান করে দিতে বলেন।
দানের পদ্ধতি : দান করতে হলে ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতি অনুসরণ করা আবশ্যক। আর তা হলো, ক. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করা : আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই ব্যয় করে থাক। (সূরা বাকারা- ২৭২)।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ও নিজেদেও আত্মা বলিষ্ঠ করনার্থে ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ হলো উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যানের ন্যায়, যাতে মুশলধারে বৃষ্টি হয়, ফলে তার ফলমূল দ্বিগুণ জন্মায়। যদি মুশলধারে বৃষ্টি নাও হয়, তবে লঘু বৃষ্টি যথেষ্ট। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দৃষ্টা। (সূরা আল বাকারা- ২৬৫)
খ. রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা পরিহার : রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা দানকে বিনষ্ট করে দেয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন হে মুমিনগন, দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে ঐ ব্যক্তির ন্যায় নিস্ফল করো না, যে নিজের ধন লোভ দেখানোর জন্য ব্যায় করে থাকে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ^াস করে না। (সূরা আল বাকারা – ২৬৪)।
গ. গর্ব-অহংকার বর্জন : দান করে গর্ব করা যাবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন আর যারা তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে এই বিশ^াসে, তাদের যা দান করার তা দান করে, ভীত-প্রকম্পিত হৃদয়ে (সূরা মুমিনুন-৬০)।
ঘ. ইসারের মানসিকতা নিয়ে দান : আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তারা আহার্যের প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও অভাবগ্রস্ত, এতিম ও বন্দিদেরকে আহার্য দান করে এবং বলে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি। আমরা তোমাদের নিকট হতে প্রতিদান চাই না, কৃতজ্ঞতাও নয়। (সূরা দাহর ৮-৯)।
ঙ. বিনম্র ব্যবহার : দাতার ব্যবহার হতে হবে কোমল ও বিনম্র। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যদি তাদের থেকে তোমার মুখ ফিরাতে হয়, যখন তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় থাক, তখন তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল। (সূরা বানী ইসরাইল- ২৮)। আরো ইরশাদ করেন, আর প্রার্থীকে ভৎর্সনা করো না। (সূরা দোহা-১০)।
চ. হৃদয়ের প্রশস্ততা : আল্লাহ তায়ালা বলেন, মুমিনদের মধ্যে যারা স্বত:ষ্ফূর্তভাবে সাদাকা দেয় এবং যারা নিজ শ্রম ব্যতিরেকে কিছুই পায় না। তাদের যারা দোষারোপ ও বিদ্রƒপ করে আল্লাহ তাদের বিদ্রƒপ করেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (সূরা তাওবা-৭৯)।
ছ. হালাল অর্থ দান : আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা উৎকৃষ্ট যা উপার্জন করো তা থেকে আল্লাহর রাহে ব্যয় করো। (সূরা বাকারা- ২৬৭)।
জ. সর্বোত্তম বস্তু দান : আল্লাহ তায়ালা বলেন আর তোমরা আল্লাহর রাহে তোমাদের উপার্জনের নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করো না। (সূরা বাকারা- ২৬৭)।
আরো ইরশাদ করেন তোমরা যা ভালোবাসো তা থেকে আল্লাহর রাহে ব্যয় না করা পর্যন্ত কখনো পূন্য লাভ করতে পারবে না (সূরা আল-ইমরান ৯২)।
লেখক : বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ।