fenirshomoy logo black

নিজস্ব প্রতিনিধি :

ফেনীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাতিমা সুলতানা বলেছেন, ‘নারীরা দেশের সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। নারীদের পথচলা শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমীভাবে। ১৮৭০ সালে যখন বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন ছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত। নারীরা দেশের সকল ক্ষেত্রে নিজেকে কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখনকার বাবা-মারা নারীদের পড়াশোনার জন্য ব্যাপক চেষ্টা করছেন। আগে বাবা-মারা চিন্তা করতেন কিভাবে মেয়েকে ভালো পাত্রস্থ করা যায়। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের ফলে বাবা-মা এখন আগের জায়গায় নেই। নারী জাগরণে যারা কাজ করছেন তারা অনেক এগিয়ে রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের আমরা নারী রয়েছি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারী, একাডেমীক সুপারভাইজার নারী, এখানে যিনি অনুষ্ঠানের মডারেটর তিনিও নারী। সুতরাং নারীরা পিছিয়ে নেই। নারী-পুরুষ এখন অনেকটা সমান পর্যায়ে চলে এসেছেন। এখন আর কোটার প্রয়োজন নেই। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেদের ক্ষেত্রে মেয়েরা ভালো করছেন। মেয়েরা অনেক ক্ষেত্রে সিরিয়াস হয়ে যান। এটি আমাদের জন্য ভালো দিন।’ শনিবার দুপুরে পরিবর্তনের কেন্দ্রে তরুণ শক্তি বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার ওপর অনুসরণমূলক গবেষণা শীর্ষক পলিসি ক্যাফে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সেন্টার ফর ইউনিভার্সাল এডুকেশন-এর আওতাধীন লার্নিং অ্যান্ড অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ফর গার্লস’ এজেন্সির উদ্যোগে পরিবর্তনের কেন্দ্রে তরুণ শক্তি বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার ওপর অনুসরণমূলক গবেষণা শীর্ষক পলিসি ক্যাফে শীর্ষক একটি পলিসি ক্যাফে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাসরিন আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা এবং জয়নাল হাজারী কলেজের সভাপতি প্রফেসর এম এ খালেক।


অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক কাজী নাসরিন সিদ্দিকা। তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন।
প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফেনী জেলার সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সোলিম উল্লাহ, একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুন নাহার, ফকিরহাট আবু বকর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর চৌধুরী, এবং হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল মিস তাহমিনা তোফা সিমা।
কাজী নাসরিন সিদ্দিকা তাঁর মূল বক্তব্যে এলএএজিএ-র মিশন, ভিশন, নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। এরপর গবেষণা উপস্থাপন করেন ইসিএস-এর গবেষণা উপদেষ্টা এস.এম মামুন মোর্শেদ। তাঁরা দু’জনই ফেনীতে কিশোরীদের উপর পরিচালিত গবেষণার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফাতিমা সুলতানা কিশোরীদের এজেন্সি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন এবং শিক্ষকদের ও সমাজ নেতৃবৃন্দের প্রতি কিশোরীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা কিশোরীদের জন্য আরও গবেষণা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং ফেনীর কিশোরীদের জন্য খঅঅএঅ-এর প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার প্রশংসা করেন।


প্যানেল আলোচনায় বক্তারা স্কুলছাত্রীদের ঝরে পড়া রোধ, বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব এবং পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। একই সঙ্গে কিশোরীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং “৩ অর্থাৎ (অঙ্গীকার), (সামর্থ্য) ও (সমন্বয়)- এই তিনটি মূলভিত্তির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনার পরে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব ও মুক্ত আলোচনা, যেখানে শিক্ষক, সিভিল সোসাইটি সদস্য এবং সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন ও মতামত প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিএসএন স্কুল, ফেনী-এর প্রধান শিক্ষক পরিবর্তনের কেন্দ্রে তরুণ শক্তি বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার ওপর অনুসরণমূলক গবেষণা শীর্ষক পলিসি ক্যাফে অনুষ্ঠানে হক ওথেলো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।


এই নীতিগত সংলাপে জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় সমাজ নেতৃবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি সদস্য, সাংবাদিক ও ইসিএস-এর গবেষণা দলসহ বিভিন্ন অংশীজন অংশগ্রহণ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!