দৈনিক ফেনীর সময়

নুরুল্লাহপুর-রতনপুর থমথমে

নুরুল্লাহপুর-রতনপুর থমথমে

নিজস্ব প্রতিনিধি :

দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর ও ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নৃশংসতার বলি হয়ে সজিব নামে এক মারা যাওয়ায় দুই এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে মামলা দায়েরের ১৭ দিনেও পুলিশ এজাহারভুক্ত একজন ও সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করলেও অপর আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এনিয়ে এলাকার জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সোমবার বিকালে নুরুল্লাহপুর ও রতনপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই টাঙ্গানো হয়েছে সজিব হত্যায় জড়িত আসামীদের ছবি সংবলিত ব্যানার। একই ব্যানার লাগানো হয়েছে সজিবের বাড়ি সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে। এলাকার দোকানপাট বন্ধ থাকলেও একটি চায়ের দোকান খোলা। সেখানে জটলা বেঁধে কিছু মানুষ বসে আছেন। টেলিভিশন স্কিনে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ঘটনার ভিডিও দেখছেন। এলাকার কিছু ব্যক্তি মাঝে মাঝে ওই ব্যানারটি দেখছেন। সবার চোখে-মুখে সংশয়ের ছাপ আর আতংক। ইয়ার নুরুল্লাহপুরের সর্বস্তরের জনগনের লাগানো ওই ব্যানারে সজিব-তৌহিদের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করা হয়। একইসাথে কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।

পাশ্ববর্তী রতনপুর এলাকায়ও একই চিত্র। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে সুমনের চা দোকানটি বন্ধ রয়েছে। সজিবের মারা যাওয়ার পর থেকে আতংকে এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাফেরা কমে গেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার এসআই রতন কান্তি দে জানান, ওই মামলায় সুমন জামিনে রয়েছেন। এজাহারভুক্ত রিফাত ও সন্দেহভাজন ইমন গ্রেফতার হয়েছে। অপর আসামীদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত; প্রায় ২ মাস আগে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর ও পাশ্ববর্তী ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় দুটি দল নিয়ে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। ঈদুল আযহার আগের দিন রতনপুর এলাকায় ইলেক্ট্রিকের কাজ করতে গেলে পূর্ব বিরোধের জেরে সজিব ও তৌহিদের উপর হামলা চালাায় ইউসুফের ছেলে রিফাত (১৮), রফিকের ছেলে শামীম (১৮) ও মোস্তফার ছেলে আফসার (১৯) সহ কয়েকজন যুবক। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করলে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন হামলাকারিরা তাদের ফেলে চলে যায়। তারা পাশ্ববর্তী ফেনী সদর উপজেলার রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় ঈদের দিন রাতে সজিবের বাবা সোলেমান বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। আহত সজীবকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রেরণ করে। ১৫ দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মারা যায় সজিব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!