দৈনিক ফেনীর সময়

ফেনীতে জনবল সংকটে মৎস্য বিভাগে ধীরগতি, ৫৯ পদের ৩৩টিই শূন্য

ফেনীতে জনবল সংকটে মৎস্য বিভাগে ধীরগতি, ৫৯ পদের ৩৩টিই শূন্য

আলী হায়দার মানিক :

ফেনীতে জনবল সংকট ও বিভিন্ন অত্যাধুনিক কারিগরি সুবিধার অভাবে মৎস্য বিভাগ চলছে অনেকটা ধীর গতিতে। জেলার মৎস্য বিভাগে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫৯ পদ থাকলেও ৩৩ পদ শূন্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেনী জেলায় সরকারীভাবে মৎস্য খামার রয়েছে ৪টি। সদর উপজেলায় ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় হ্যাচারী রয়েছে। সোনাগাজী ও ফুলগাজীতে খামার রয়েছে। এদের মধ্যে দুটিতে পোনা ও রেণু উৎপাদন হয় এবং বাকী দুুটিতে শুধুমাত্র পোনা উৎপাদন করা হয়। সরকারী খামার ও হ্যাচারীগুলোতে রুই, কাতল ও মৃগেল মাছের পোনা ও রেণু উৎপাদন করা হয়। সারাদেশে সরকারীভাবে ১১৭টি মৎস্য ফার্ম রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ফেনীতে। জেলায় মাছের চাহিদা ৩১৭৪৪ মেট্রিক টন। জেলা উৎপাদন ৩৩ হাজার ২শ ২৫ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় ১৪৮১ মেট্রিক টন বেশী উৎপাদন হয়। তবে জনবল সংকট না থাকলে জেলায় পোনা ও রেণু চাহিদা পূরণ করে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে রপ্তানি করা সম্ভব হতো। এতে করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পেতো। ফেনীতে পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লা থেকেও পোনা আসে। ফেনী থেকে চট্টগ্রামের বারইয়ার হাট ও মিরসরাইতে পোনা সরবরাহ হয়।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানায়, সরকারের এ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগটির জন্য ফেনী জেলায় ১ম শ্রেণির ১২জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ৭জন, তৃতীয় শ্রেণির ২৩জন, ও চতুর্থ শ্রেণির ১৭জন কর্মকর্তার অনুমোদিত পদ রয়েছে। মোট ৫৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মাঝে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সহ ২৬জন কর্মরত রয়েছেন। বাকী ৩৩টি পদ শূন্য পড়ে আছে। বেসরকারী পর্যায়েও রেজিষ্ট্রিকৃত ১৪টি পোনা ও রেণু উৎপাদন খামার রয়েছে। জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ে প্রায় অর্ধশত খামার ও হ্যাচারী রয়েছে। এদের মধ্যে ফেনী শহরতলীর ইলাশপুরে রকমারী মৎস্য খামার ও শর্শদী ইউনিয়নের আল আমিন মৎস্য খামার অন্যতম। জেলার বিদ্যমান জলাশয়ের সুষ্ঠু ব্যব¯’াপনার লক্ষ্যে কারিগরি পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে মৎস্য খামারীদের উৎসাহ দেয়া হয়।

জানা যায়, দেশের মৎস্য ও চিংড়িসহ অন্যান্য জলজ সম্পদের স্থায়িত্বশীল উৎপাদন বৃদ্ধি করা। দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং রপ্তানী বৃদ্ধিতে অভিষ্ট জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে উন্মুক্ত জলাশয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ ক্ষেত্র হতে প্রাপ্ত সুফলের মাধ্যমে দারিদ্র মৎস্যজীবীদের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে কাঙ্খিত উন্নয়ন সাধন করা এ বিভাগের অন্যতম কাজ। এছাড়াও প্রাকৃতিক দূর্যোগকালিন সময় সার্বক্ষণিক মনিটরিং কক্ষ খুলে মাঠ পর্যায় থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা ও তা একীভুত করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার মাধ্যমে ব্যব¯’া গ্রহনে সহায়তা করা হয়।

জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ফেনীর সময় কে জানান, জেলায় মাছের উৎপাদন হয় ৩৩ হাজার ২শ ২৫ মেট্রিক টন। তবে শূন্যপদগুলো জনবল দেয়া হলে জেলা মৎস্য বিভাগে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। শূন্যপদে জনবল নিয়োগের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। মৎস্যজাত উৎস হতে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, দারিদ্র বিমোচন ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি হচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তরের ভিশন। মৎস্য অধিদপ্তর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখলে সমস্যা লাঘবে হবে বলে বিশ্বাস করি। পুষ্টির চাহিদা পূরণে মৎস্য বিভাগের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!