নিজস্ব প্রতিনিধি :
জ্বালানি তেল, পরিবহনের ভাড়া সহ সকল দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশ কর্তৃক গুলি করে ছাত্রনেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিমকে হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ফেনীতে রবিবার বিকালে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের ইসলামপুর রোডের জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে নেতারা বলেছেন, কঠিন গণআন্দোলনের মধ্যদিয়ে এ ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তারেক রহমানকে মুক্ত করে দেশে আনা। আওয়ামীলীগ সারদেশের ন্যায় ফেনীতেও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ-গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, আবু তালেব ও মশিউর রহমান বিপ্লব।
সদর উপজেলা আহবায়ক ফজলুর রহমান বকুলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির ও যুগ্ম-আহবায়ক তপন করের যৌথ সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, এয়াকুব নবী ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, পৌর আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুল ও সদস্য সচিব এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁঞা, জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবির চৌধুরী, মহিলা দলের সভাপতি জুলেখা আক্তার ডেইজী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার নাসির উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এসএম কায়সার এলিন, ছাত্রদলের সভাপতি সালাহ উদ্দিন মামুন, সাধারন সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, সদর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক নিজাম উদ্দিন, সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন, ছাত্রদল আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ভিপি জয়নাল বলেন, এ দেশ আমরা স্বাধীন করেছিলাম গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সেগুলো ভুলন্ঠিত করে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এসময় এসেছে আপনারা আন্দোলন-সংগ্রাম করার জন্য প্রস্তুতি নিন। যখনি ডাক দেয়া হবে আপনারা রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এ সরকারকে বিদায় করতে হবে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে তাদের উপর খোদার গজব নেমে আসবে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শক্তিধর ফেরাউনেরও পতন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশে গুম-খুন রাহাজানি চলছে। হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই। যারা জেলখানায় আছে তাদের বের করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের জামিন নেয়া হবে। ভয়ের কোন কারন নেই। ভয় করে আমাদেরকে মরে না গিয়ে আমরা লড়াই করে আমরা এগিয়ে যাবো। আপনারা সবাই দুর্বার গণআন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিন।
রেহানা আক্তার রানু বলেন, আওয়ামী লীগ সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা নিপীড়ন-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছেন। শুধু তাই নয় তারা পুলিশ দিয়েও বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যখন যে নেতাকর্মীর সাথে কথা হয় তখনি তারা বলেন আমরা আদালতে হাজিরা দিচ্ছি। চরম নির্যাতন ও চারিদিকে হাহাকার এবং ক্ষুদার্ত মানুষের আত্মচিৎকারের মাঝেও নেতাকর্মীদের সাহসী মানসিকতাকে আমরা সম্মান জানাই।
তিনি আরো বলেন, যে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে পারে না। এ সরকার মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। এ সরকার ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পারে না, এমন সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। সোনাগাজীতে নুসরাতের মতো মেয়ের নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। কিছুদিন আগে ইউপি নির্বাচনে ঝিনাইদহে একজন হিজড়ার কাছে নৌকা মার্কার প্রার্থী হেরে গেছেন। শ্রীলংকার মন্ত্রীরা শর্ট প্যান্ট পরে পালিয়েছেন। কিছুদিন পর হাসান মাহমুদ এর মতো মন্ত্রীরাও কিভাবে পালাবে বাংলার মানুষ দেখবে। ২০১৪ ও ১৮ সাল মার্কা নির্বাচন বাংলাদেশে আর কখনো হবে না। আমরা মানুষের ভোটে অধিকার ফিরে আনা পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।