দৈনিক ফেনীর সময়

ফেনীতে সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি :

ফেনী শহরের হাসপতাাল মোড় থেকে ১৪ কিলোমিটার ফুলগাজী বাজার পর্যন্ত সিএনজি অটোরিক্সায় ভাড়া যাত্রীপ্রতি ৩০-৩৫ টাকা। পুরাতন মুন্সিরহাট আর নতুন মুন্সিরহাট পর্যন্ত নেয়া হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পরশুরাম পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার যেতে ৪০ টাকা আদায় করা হয়। অন্যদিকে মহিপাল থেকে দরবেশের হাট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার যেতে ৫০ টাকা নেন চালকরা। শহরের মাষ্টারপাড়া মৌলভীবাজার থেকে লস্করহাট যেতে ৭ কিলোমিটার সড়কে আদায় করা হয় ৩০ টাকা। সন্ধ্যার পর এসব ভাড়া বেড়ে দ্বিগুন হয়ে যায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং আভ্যন্তরীন এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সায় যাতায়াতে ভাড়া নিয়ে এই নৈরাজ্য দীর্ঘদিনের। কেউ কম ভাড়া দিতে চাইলে চালকদের দুর্ব্যবহারের শিকার হন। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর চালকরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। কেউ কারো কথা না শোনা মনোভাবে থাকায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে দাবীকৃত ভাড়া দিয়ে থাকেন। বিষয়টি নিত্যনৈমিত্তিক হলেও জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এমনকি বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল আমিন শেখ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অজয় চন্দ্র দাস ও সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মাকছুদ আহমেদ এর সমন্বয়ে ফেনী-সোনাগাজী রুটে সিএনজি অটোরিক্সার ন্যায্যা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ফেনী শহর থেকে লালপোল পর্যন্ত ১০ টাকা. ফেনী-বটতলা পর্যন্ত ১৫ টাকা, ফেনী-কুঠিরহাট ১৫ টাকা, ফেনী-বালুয়া চৌমুহানী ২০ টাকা, সোনাগাজী-ধলিয়া ৩০ টাকা, ডাকবাংলা-ফেনী ৩০ টাকা, ফেনী-মতিগঞ্জ ৩৫ টাকা, ফেনী-সোনাগাজী ৪০ টাকা, ফেনী-বাগেরহাট ২০ টাকা, সোনাগাজী-লালপোল ৩০ টাকা, সোনাগাজী-ডাকবাংলা ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চালকদের কেউ কেউ এখনো সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইচ্ছেমত ভাড়া নিচ্ছেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে মহিপাল থেকে দাগনভূঞা যেতে ১৫ কিলোমিটার সড়কে নেয়া হয় ৩০ টাকা। আর সিলোনীয়া পর্যন্ত ২০ টাকা ও বেকের বাজার পর্যন্তও ৩০ টাকা নেয়া হয়। শহরের হাসপাতাল মোড থেকে ছাগলনাইয়া যেতে ১২ কিলোমিটার সড়কে ৩০ টাকা নেয়া হয়। জেলা সদরের সাথে উপজেলা পর্যায়ের কিলোমিটার প্রতি ভাড়ার তুলনায় সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের হাট-বাজারে যাতায়াতে ভাড়ার তারতম্য রয়েছে।

মঙ্গলকান্দি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সেলিম উদ্দিন বলেন, ট্রাংক রোড থেকে ডাকবাংলা পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার যাওয়া-আসায় ৪০ টাকা করে ৮০ টাকা দিতে হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণের কথা বলা হলে চালক উল্টো ক্ষেপে যান। নির্ধারিত ভাড়া তারা আইন মানতে রাজী নন। শুধু তাই নয়, ডাকবাংলা থেকে কাজিরহাট পর্যন্ত গেলে ২০ টাকা দিতে হয়।

প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বলেন, জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে ভাড়া নির্ধারণ করা হোক। প্রতিদিন চালক-যাত্রীদের বাকবিতন্ডা হয়। একটি রুটে একাধিক স্থানে টোল ও নামে-বেনামে সমিতির নামে চাঁদা উঠনো হচ্ছে। টোলের টাকা পাবলিক দিতে হচ্ছে। এ নৈরাজ্য বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!