আরিফ আজম :
ফেনী শহরের সুলতানপুরে গরু ব্যবসায়ী শাহজালাল হত্যা মামলার তিনবছর আজ। বহুল আলোচিত এ মামলার দুই দফা সাক্ষগ্রহণের তারিখ পার হলেও সাক্ষীরা না আসায় বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিচ্ছে। মামলার তিনি আসামী সবাই জামিনে বেরিয়েছেন। প্রধান আসামী বহিস্কৃত আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম ইতিমধ্যে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ফেনৗ পৌরসভার কাউন্সিলর পদ ফিরে পেলেও দায়িত্ব বুঝে পাননি।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৪ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেহ মোহাম্মদ রুহুল ্ইমরানের আদালতে মামলাটির চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে ১৫ জুলাই কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট আদালতে চার্জশীট জমা দেয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) আবদুর রহিম সরকার চার্জশীটে এজাহারভুক্ত আসামী কাউন্সিলর আবুল কালাম, তার সহযোগি নাঈমুল হাসান ও আশরাফ উদ্দিন রাজুকে অভিযুক্ত করেন।
সূত্র আরো জানায়, এ মামলায় অভিযুক্ত নাঈমের স্বীকারোক্তি ছাড়াও আরো তিনজন সাক্ষ্মী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এলাকাবাসী, পুলিশ, চিকিৎসক সহ ৪০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এ বছরের ২৪মার্চ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও সাক্ষীরা আসেনি। এরপর ২১ মে পরবর্তী তারিখেও কোন সাক্ষী না আসায় ১৫ জুলাই (আজ সোমবার) পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করেন আদালত। ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর কালাম, ২০২২ সালের ১৬ মার্চ রাজু ও একই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি নাঈম উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়। আদালতে আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এম. শাহজাহান সাজু, জাহাঙ্গীর আলম নান্টু ও শৈবাল দত্ত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহমেদ বলেন, সাক্ষীদের হাজির করতে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তারা না আসায় সাক্ষ্যগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। মামলাটি অতিদ্রুত নিষ্পত্তি করতে তিনি সবধরনের সহযোগিতা করবেন।
এদিকে চলতি বছরের ৬ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মো: আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে কাউন্সিলর পদ ফিরে পান কালাম।
প্রসঙ্গত; ২০২১ সালের ১৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে গরুর হাটের জন্য ট্রাক ভর্তি করে ১৫টি গরু নিয়ে সুলতানপুর আমিনবাজার সড়কে এলে আসা শাহজালালকে গুলি করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয় আবুল কালাম। তাৎক্ষনিক পুলিশ কালামের ঘর থেকে রক্তমাখা পাঞ্জাবী ও ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। নিহত কালাম কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের শাহাগুলি (শাগলি) ফকিরবাড়ীর আবদুল জাব্বারের ছেলে। ঘটনার পর কালামকে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। দীর্ঘ ১ বছর ৮ মাস পলাতক থেকে ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ কালাম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।