নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী শহরের ট্রাংক রোড, বড় বাজার সহ প্রায় সব ফুটপাত চাঁদাবাজদের দখলে। দিনে কোন কোন ফুটপাত থেকে তিন দফায় চাঁদা দিতে হয়। ফুটপাতে দোকান বসানোর জন্য চাঁদার একটি বড় অংশ শহর ব্যবসায়ী সমিতি পায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ফুটপাত দখলমুক্ত না হওয়ায় যানজটের মাত্রা ট্রাংক রোডের মডেল থানা, অপরপ্রান্তে বড় মসজিদ, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এতে পথচারী ও সাধারণ মানুষকে নিত্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও পৌরসভা বারবার উদ্যোগ নিয়ে অভিযানে নামলেও ফুটপাত আগের চেহারায় ফিরে যায়। সকালে উচ্ছেদ করা হলে বিকালে আবার বসে যায়। দিনের বেলায় দোকানের সামনে ফুটপাতে দোকান বসানো হলেও রাতে সড়ক দখল করে ভ্যানগাড়ির পসরা বসে। শহরের বড় বাজারের অলিগলিতেও একই দৃশ্য। সড়কে ফুটপাত দখল হওয়ায় হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব দোকান থেকে দিনে তিনবার চাঁদা তোলা হয়। দোকান মালিকরা টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতে বসার জন্য জায়গা দিলেও এখন চাঁদা আদায়ের তালিকায় নাম উঠেছে ব্যবসায়ী সমিতি। মঙ্গলবার বিকালে পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর সঙ্গে সাংবাদিকদের এক আলোচনায় বিষয়টি প্রকাশ্য হয়। এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, “হকার বসানোর জন্য দোকান মালিকদের দায়ী করা হয়। ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলে থাকেন- ব্যবসায়ী সমিতির শীর্ষ নেতার চাপে ফুটপাতে দোকান বসাতে বাধ্য করা হয়।”
সভায় আরেক সাংবাদিক বলেন, “ফুটপাতের একটি দোকান থেকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক দফা চাঁদা তোলা হয়। দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত আর সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আরো দুই দফা চাঁদা তোলা হয়। এর একটি অংশ ফুটপাতের পেছনের স্থায়ী দোকান মালিক, একটি অংশ চাঁদাবাজ চক্র, আরেকটি অংশ ব্যবসায়ী সমিতি পায়। ফুটপাত উচ্ছেদ করতে স্থায়ী দোকান মালিকের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করা হলে এটি কমে যাবে।”
পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এ প্রসঙ্গে বলেন, কেউ চাঁদাবাজি করলে ছাড় দেয়া হবেনা। সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেননা। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে পৌরসভা সহযোগিতা করবে। ফুটপাত দখল মুক্ত করতে মাইকিং করে প্রচারণা করা হবে। খুব সহসা এ ব্যাপারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
ব্যবসায়ী সমিতির নামে চাঁদা আদায় করা হয় কিনা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, “অভিযোগটি একেবারেই সত্য নয়। চাঁদাবাজদের শনাক্ত করে প্রশাসন ও পৌরসভা ব্যবস্থা নিতে পারে। বরং ফুটপাত উচ্ছেদের বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাংক রোডে মানবিক বিবেচনায় মেয়র মহোদয় কিছু ব্যবসায়ীকে সাময়িক অনুমোদন দিয়েছেন।”