দৈনিক ফেনীর সময়

বন্যায় ৬শ সেচ্ছাসেবীদের নিরাপদ আশ্রয় হক টাওয়ার

নিজস্ব প্রতিনিধি :

সাবিনা ইয়াসমিন মাধুরি। জাহাঙ্গীর নগর থেকে মাষ্টার্স শেষ করে হয়েছেন উদ্যোক্তা। কারো বিপদ থেকে সাহায্যে এগিয়ে আসাই তার নেশা। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় ফেনীর মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ২৬ বছর বয়সী এ তরুনী। গত শুক্রবার থেকে একদল বন্ধুদের নিয়ে জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে চলছেন মাধুরী। শুধু মাধুরী নন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা আশ্রয় নিয়েছেন শহরের মিজান রেড়ের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারে।

নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা মাধুরী জানান, তার নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের একটি জেলার দুর্গম এলাকায় শুরুতে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে। এরপর ৩শ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়। সব কার্যক্রম পরিচালনা হয় হক টাওয়ার থেকে। হক পরিবারের তত্তাবধানে থাকা-খাওয়াও হচ্ছে।

হক টাওয়ারের পরিচালক ইমন উল হক জানান, বন্যার শুরু থেকে হক পরিবারের উদ্যোগে সারাদেশ থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের থাকা-খাওয়ার ব্যাবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুক্রবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ৬শ স্বেচ্ছাসেবক মানুষের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপর টানা ৭ দিন ধরে ফেনী জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলো চষে বেড়িয়েছে তারা। কোমরপানি মাড়িয়ে বন্যাকবলিত মানুষের কাছে খাবার, পানি, ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন। যেখানে ডুবে যাওয়ার ভয় ছিল, সেখানে নৌকা নিয়ে গেছে।

ইমন আরো জানান, তিনি ছাড়াও হক টাওয়ারের চেয়ারম্যান বাহাউল হক শাহের, পরিচালক মুশফেকুল হক মাসুম, সামিউল হক শাহীন, তারিন উল হক, তুহিন উল হক এসব স্বেচ্ছাসেবকদের দেখভাল করেছেন। প্রতিদিন ৬ স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য টেস্ট এন্ড বেস্ট থেকে রান্না করা খাবার খাওয়ানো হয়। তার বাবা সাংবাদিক ও ক্রীড়া সংগঠক মাহবুব উল হক পেয়ারার নামে গঠিত ফাউন্ডেশন থেকে ৫ হাজার মানুষকে শুকনো খাবার, খিচুড়ি, ডিম ও পানি দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার হক টাওয়ারের সামনে কথা হয় মাষ্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা শিপ্রা বনিকের সাথে। তিনি জানান, স্বামী তপন বনিক ফেনী বাজারে দোকান চাকুরী করেন। বন্যায় পানিবন্দি থাকার সময় কোন খাবার পাননি। ফলে তিনি সহ পরিবারের ৫ সদস্যোর অর্ধাহারে।দিন কেটেছে। খবর পেয়ে হক টাওয়ারে এলে ইমন ভাই ত্রাণের প্যাকেট ও একটা পানির বোতল দিয়েছেন।

সেখানে জানা গেছে, এখনো খুলনা ইউনিভার্সিটি থেকে আসা ৭ শিক্ষার্থী দাগনভূঞার পানিবন্দি মানুষের সাহায্যার্থে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তারা বৃহস্পতিবার রাজাপুর এলাকায় ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। ময়মনসিংহ জেলার ৭ বাসিন্দা সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ছোট ধলিয়ায় গরুর খাদ্য হিসেব এক ট্রাক খড় দিয়েছেন।।এছাড়া পরশুরামে ৭ স্বেচ্ছাসেবী স্যানিটারি ন্যাপকিন, মোমবাতি, শুকনো খাবার দিয়েছেন। দিন গড়িয়ে রাত হলে তাদের সবার ঠিকানা হক টাওয়ার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!