নাজমুল হক :
বিয়ে দুটো নারী ও পুরুষের নতুন জীবনের সুচনা। বিয়ে করে কেউবা বিপদে পড়ে আবার কেউবা শান্তিতে বসবাস করে। সেজন্য বিয়েতে ভুল করলে অশান্তি এবং ডিভোর্স বা বিচ্ছেদ। বিয়ে মানেই দুইজন নারী ও পুরুষের পারিবারিক জীবন যাপন করার মাধ্যম বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্ভন। কোথাও বিয়ে দুটো মানুষের শান্তির আবাসস্থল, আবার বিয়ে দুটো মানুষের অশান্তির বীজবোপন। ডিজিটাল যুগে বিয়েকে আধুনিকতার নামে বিয়েকে নতুন প্রজন্ম বানিজ্য বানিয়ে ফেলেছে। যার ফলে অনেক সময় বিয়ে সামাজিক এবং পারিবারিক বন্দন মজবুত করে না। আধুনিকতার নামে বিয়ে মানেই কেমন যেন কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া! বিয়ে মানেই যৌতুক, আসবাবপত্র বা টাকার ছড়াছড়ি। বিয়ে মানেই যেন হাট বাজার বা যৌতুকের বাজার। বিয়ে মানেই বধু বা নারী নিযার্তনের নবযাত্রা। বিয়ে মানেই টেনশন, বিয়ে মানেই তালাক, আত্বহত্যা, ডিভোর্স , বিয়ে মানেই একজন নারীর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জীবন বিলিয়ে দেওয়া। বিয়ে মানেই দুই পরিবারের মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি! আমাদের গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলা শহরের নিকটে সুপরিচিত সম্রান্ত মুসলিম পরিবারের মধ্যে অন্যতম একটি পরিবার। ইলাশপুর মিয়াবাড়ি হিসেবে সুপরিচিত। বিগত দুইশত বছরের মধ্যে আমাদের বংশের কোন ছেলের বউকে তালাক দিতে হয় নাই। আমাদের বাড়ির বিবাহিত মেয়েদেরকে স্বামী তালাক বা ডিভোর্স দিয়ে ফেরত দেওয়ার মতো কোন ঘটনা এখনো ঘটে নাই। পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে বিয়ে নিয়ে কোনো মামলা মোকদ্দমা সালিশ ইত্যাদি মোকাবিলা করতে হয় নাই আমাদের মিয়া বাড়ির পরিবারকে।
ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের পরিবারে তিনি প্রজন্মের বায়োডাটা দেখে ছেলে এবং মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে থাকে। বিয়ে শান্তি না অশান্তি এ বিষয়টি একটি মুখরোচক আলোচ্য বিষয়। আজকাল পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় যৌতুকের জন্য নতুন বৌ এর আত্মহত্যা! তালাক! ডিভোর্স! মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি! ধনী বা গরীব, শহর বা গ্রাম কোন ভেদাভেদ নাই। যৌতুক এর মামলা মোকদ্দমা, তালাক ইত্যাদির ছড়াছড়ি চলছে। ২৫- ৩০% বিয়েও টিকছেই না। একান্নবর্তী পরিবার ভেংগে দিন দিন ছোট হচ্ছে। শিক্ষিত ধনীক মুসলিম মাতা ও পিতার স্থান বৃদ্ধাশ্রমে! নতুন প্রজন্মের ধনীক শ্রেণি টাকার উম্মাদনায় বংশ, গোত্র, বর কনে সামাজিক মর্যদা কিছুই দেখেনা, আড়ং এর নতুন জামা খরিদ এর ন্যায় আত্বীয়তা করছে! যার পরিনতি যৌতুকের দাবী! তালাক! ডিভোর্স আত্মহত্যা! মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি মোকাবিলা করতে হচ্ছে অনেক ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারকে, নতুন প্রজন্মের বিয়ের পরিনাম শান্তির বদলে দুটো পরিবারে অশান্তি। শুধুমাত্র টাকার ছড়াছড়ি, দামী বাড়ি গাড়ি, ব্যবসা বানিজ্য, উচ্চ শিক্ষিত ছেলে বা মেয়ের বিয়ে দিয়ে আজ দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে অভিভাবক। বিয়ের পরে অশান্তির মুল কারণ হলো দুটো পরিবারের সামাজিক অবস্থান, আচার আচরণ যাচাই না করা। ছেলের পক্ষের অথবা মেয়ের পক্ষের অভিভাবকদের আয় রোজগার হালাল কিনা যাচাই না করা। বিয়ে হলো দুটো পরিবারকে সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করা। আত্বীয় হিসেবে একে অপর এর পাশে থাকবে, সবাই সবাইকে শ্রদ্ধা, সন্মান এবং ভালো বাসার চোখে দেখবে! দুটো নারী ও পুরুষের মিল হবে কিনা তা যাচাই করে না বিধায় বিয়ে মানেই অশান্তি। মেয়ের বা ছেলের পরিবার রাস্ট্র বা সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত কিনা, ঘুষখোর, সুদখোর, সন্ত্রাসী, টাকার প্রতি লোভী, প্রতারক, নারী নির্যাতনকারী, যৌতুক লোভী, অসামাজিক ও চোরাচালানের কার্যকলাপে লিপ্ত ইত্যাদি যাচাই না করে আত্বীয়তা করাই বিয়ে অশান্তির অন্যতম কারণ।
বিয়ে শান্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে অথবা অশান্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে তা বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে বুঝা যায়! সেজন্য বিয়ের আগে ধনী শ্রেণীর পারিবারিক অবস্থা, সামাজিক অবস্থা যাচাই করেনা, শুধু আমার এই ছেলেকে এই মেয়ের জামাই বা আমার মেয়েকে এই ছেলের বউ হিসেবে দেখতে চাই! এই চাহিদাই বিয়ে অশান্তির মুল কারণ নিহিত রয়েছে! একটি বাস্তব ঘটনা আমার সুপরিচিত একজন ভদ্রলোক, তার বাড়ি গোপালগঞ্জ, তিনি অবসর প্রাপ্ত সরকারী অফিসার ছিলেন। ভদ্রলোকের ২জন ছেলে এবং ২জন মেয়ে! ছেলে ২জন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। বড় মেয়ে পোস্ট গ্যাজুয়েট। আমাকে বললেন আমার বড় মেয়ের জন্য একটা সুপাত্র দেখার জন্য। আমি বললাম আমাকে একটা বায়োডাটা দেওয়ার জন্য। উনি বললেন আপনি আমাকে চিনেন। আবার বায়োডাটা লাগবে কেন? পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সময় মসজিদে দেখা স্বাক্ষাত হয়। আমিও বিনয়ের সাথে বললাম আপনার বংশের পরিচয় আমি জানি না। আপনার সামাজিক মর্যদা ও পারিবারিক অবস্থান আমি কিছুই জানি না। তিনি আমাকে বললেন এখন ডিজিটাল যুগ এতো কিছুই লাগে না। আমি ভদ্রলোকের উপর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপ থাকা উচিত মনে করি। কিছু দিন পর বললেন আমার বড় মেয়েকে আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশী ছেলের নিকট বিয়ে দিয়েছি। আমি শুনে আলহামদুলিল্লাহ পড়লাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ঘটক কে? গ্রামের বাড়ি কোথায়? ছেলের বাড়ি বা গোষ্টি বা সামাজিক অবস্থা দেখেছেন কি? তিনি আমাকে বললেন এত সব দেখার সময় কোথায়। ছেলের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় আমার বন্ধুর ভাগিনা এতেই আমি খুশী। এরপরও আমি বললাম একজেলার এক এক সংস্কৃতি একটু গ্রামের বাড়ি থেকে পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থা জেনে নেয়া ভাল ছিলো। আমেরিকা বা ইউরোপের চাকরিজীবি পুরুষ অনেক সময় টাকা থাকলে ২/৩টা বিয়ে করে। আমার কথা শুনে তিনি কিছুটা বিভ্রত হলেন মনে হয়েছে। ৬ মাস পর তাকে জিজ্ঞাসা করলাম মেয়ে এবং জামাই কেমন আছে। কোন জবাব নেই, আলাপকালে দুঃখের সাথে জানতে পারলাম নব বিবাহিত মেয়েটা জামাইকে তালাক দিয়েছে।
জামাইকে কেন তালাক দিলো? ভদ্রলোক বললেন জামাই ৩ মাস হলো আমেরিকার যাওয়ার পর একটিবারও মেয়েকে ফোন করে নাই। মোবাইল নাম্বারও দিয়ে যায়নি ইত্যাদি। এই ঘটনার পরে ভদ্রলোক ছেলের গ্রামের বাড়ি যাচাই করে জানতে পারেন নতুন জামাই বিবাহিত এবং ২ সন্তানের জনক। এই বিয়ের মুল রহস্য আমেরিকার জামাই এবং ডলার দেখে মেয়ের পিতার অধিক সুখের উল্লাস। টাকার লোভের জন্য পিতামাতা মেয়েটার জীবন শেষ করে দিল। বিয়ে ভেঙে গেল তিন বছর হয়েছে এখনও সেই মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয় নাই। মেয়ে মুসলিম পারিবারিক আইন মোতাবেক মোহরানার ক্ষতিপুরন পায়নি। ছেলে গ্রামের ঠিকানা ভুল দিয়েছে কাবিন নামা মোতাবেক মেয়ের খোরপোষ এর কোনও মামলা করা যায়নি ইত্যাদি।
ছেলে মেয়ের বিয়ে নিয়ে অভিভাবকদের একটি বিয়ে কোভিড মহামারির আকাল চলছে। অভিভাবকদের পাত্র পাত্রী পছন্দের তালিকা দেখলে অবাক হয়ে যাবেন! অভিভাবকদের প্রথম পছন্দের তালিকা (১) ঢাকা চট্রগ্রাম এবং জেলা শহরে যদি ছেলের পিতা বাড়িওয়ালা হয় তাহলে বাড়ীওয়ালার মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে দেখতে চায়! (২) তেমনি মেয়ের পিতা বাড়ি ওয়ালা হয় তাহলে বাড়ীওয়ালা ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবে। (৩) মেয়ের বাপের অঢেল টাকা থাকলে আগেই জানিয়ে দেয় আমার মেয়ে গাড়ীতে চলাফিরা করে! ছেলের গাড়ি বাড়ি আছে কি? (৪) ছেলের পক্ষ থেকে দেখা হয় পাত্রীর ধন সম্পদ। (৫) আবার কেউবা মনে করে অমুক লাঠিয়াল বাহিনী থেকে ছেলে বা মেয়ে বিয়ে দিয়ে সামাজিক অবস্থান বাড়াবে? বিয়ের আগে কেউই দেখছেন না দুটো নারী পুরুষ সমগোত্রীয় কিনা! পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকবে কিনা। গাছে আর মাছের আত্বীয়তা হচ্ছে কিনা। ভদ্রলোক পরিবারের সঙ্গে বাটপার পরিবারের আত্বীয়তা হচ্ছে কিনা। ছেলের বা মেয়ের পিতা সমাজ ও রাস্ট্র বিরোধী কিনা। মাদকসেবি ও চোরাচালানের সাথে জড়িত কিনা। কালোবাজারি ও সন্ত্রাসী কিনা! মেয়ে এবং ছেলে মাদকাসক্ত কিনা। পিতা-মাতার আয় রোজগারে কালো টাকার ছড়াছড়ি কিনা। বিয়ের মাধ্যমে দুটো পরিবারে শান্তির বদলে অশান্তির আমদানি হচ্ছে কিনা! সবাই ছুটছে টাকার পিছনে, শুধু টাকা আর টাকা, টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতে সবাই এক সময় ক্লান্ত হয়ে থেমেছে বৃদ্ধাশ্রমে। কোট কাচারিতে দৌঁড়। শেষ বয়সে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু। কেউ বলছেনা ভালো মনের পরিবার চাই। ভালো মনের ছেলে বা মেয়ে চাই।
ফেসবুকে অনেকই আমার বিয়ে এবং পারিবারিক জীবন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। সেই বিষয়ে লিখছি। লিখতে গেলে অনেক টক মিষ্টি ঝাল বেরিয়ে যাবে। আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি হলো ছেলে বা মেয়ের তিন প্রজন্মের বংশ পরিচয়ের মিল না হলে আত্বীয়তা হবে না। আর একটা সামাজিক এবং পারিবারিক সমস্যা হলো আমরা মিয়া বাড়ির উচ্চ শিক্ষিত প্রথম প্রজন্ম। এছাড়াও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্যাক্টিসিং মুসলিম হিসেবে বিয়ে করাই একটা সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিয়ে নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার জন্য জড়তা আছে, আবার আলাপ করার মতো নির্ভরযোগ্য আত্বীয়স্বজনের অভাব। মোবাইলের যুগও নেই ইত্যাদি। বাবা চিন্তাভাবনা এবং মায়ের পছন্দ আলাদা আলাদা। আমার বাবা মেট্রিক পাশ এবং আম্মা ৮ম শ্রেণি পাশ। পাত্রী বাছাই ও দেখা নিয়ে জটিল অবস্থার মধ্যে পড়েছি। পারিবারিকভাবে পাত্রীর বায়োডাটা বাছাই কার্যক্রম তিন বছর পার করেছে, এদিকে পাত্রের বয়স ৩০ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেয়ে জেনারেল এরশাদ তাড়ানোর আন্দোলনে ৪ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবন ৮ বছর চলে গেছে। চাকুরীসুত্রে সিরাজগঞ্জ কুষ্টিয়া এবং ফরিদপুরের সুধীমহল দেখা হলেই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতো। মনে হতো ব্যাচেলর জীবনে অনেক দামী পাত্র।
আমি বৃহত্তর নোয়াখালী জেলায় বিয়ে করতে চাই বিধায় অন্যজেলায় বিয়ের আগ্রহ দেখাইনি বিধায় কোন পাত্রী দেখি নাই। বিশেষভাবে অন্য জেলার কৃষ্টি কালচার বৃহত্তর নোয়াখালী থেকে আলাদা। শেষ মেষ আমার আম্মার পছন্দ মোতাবেক ৩টি বায়োডাটা আমার হাতে দেওয়া হয়েছে। আমি বায়োডাটার উপর খাতা কলম নিয়ে গবেষণা শুরু করে একটি বায়োডাটা পছন্দ করলাম এবং দুটো বায়াডাটা রিজেক্ট করলাম। (১) মেয়ের আব্বা অডিটর জেনারেল অফিসের অডিটর, ১ ছেলে এবং ১ মেয়ে, যাত্রাবাড়ীতে বাড়ি আছে মেয়ের জামাইকে টয়েটা করোলা গাড়ি দিবে। আমি হবু শশুর ঘুষখোর বিধায় এই বায়োডাটা রিজেক্ট করে দিয়েছিলাম। ২) মেয়ের আব্বা উপজেলা পশু ডাক্তার মেয়েরা ২ বোন ১ ভাই। তিনি শশুরবাড়ি ঘরজামাই থাকেন। ওরা মেয়েকে গয়না এবং ফানিচার দিবে। নোয়াখালীতে ঘরজামাই এর মেয়ে সম্রান্ত পরিবারের ঐতিহ্যের সাথে মিলেনা এবং আমি যৌতুকমুক্ত বিয়েতে বিশ্বাসী বিধায় এই বায়োডাটা রিজেক্ট করে দিয়েছি। ৩) বায়োডাটা শশুর অগ্রণী ব্যাংক বসুরহাট শাখার ম্যানেজার মেয়েরা ৪ বোন এবং দুই ভাই। কোন সোনাদানা ফানিচারের লোভনীয় অফার নেই বিধায় এই বায়োডাটা পছন্দের তালিকায় নিলাম। বাবার মতামত নিলাম তিনি মত দিলেন। আম্মা মত দিলেন না, কারণ এখানে উপরি পাওনা কিছুই নেই। আমি অনেকটা জোর করে আম্মাকে নিয়ে জীবনে প্রথম পাত্রী দেখতে গেলাম। পাত্রীর ইসলামীক জ্ঞান এবং মুসলিম ঐতিহ্যের রীতি অনুযায়ী মিয়াবাড়ির সাথে মিলবে বিধায় আমি মত দিলাম। আম্মা খুবই রাগ করেছে কেন আমি অন্য পাত্রী না দেখে এখানে মত দিলাম। এখানে কিছুই পাওয়া যাবেনা। আমি আম্মাকে বললাম ইসলামী শরীয়া মোতাবেক এই বায়োডাটা মোতাবেক পরিবারটি ভেজালমুক্ত পরিবার এবং আমাদের বড় পরিবারের সঙ্গে মিলমিশ ভালো হবে। আমি পাত্রী দেখে চাকুরীতে চলে আসি।
আম্মার পছন্দ মোতাবেক পাত্রী না দেখায় বিয়ে নিয়ে অচলাবস্থা বিরাজমান। ৩ মাস পরে আম্মার রাগ ভাংগলো। আমিও আর কোন পাত্রী দেখি নাই। জীবনে একটি মাত্র পাত্রী দেখে বিয়ে করলাম। আমার শশুর বাড়ি বসুরহাট, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপ-রাস্ট্রপতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এর বাড়ি, নানা শশুর বাড়ি কবিরহাট উপজেলার সাবেক প্রধান বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী বাড়ি। আমার স্ত্রী উচ্চতর বংশের নারী হয়েও আমার বাবা এবং আম্মাকে ঢাকায় নিজ বাসায় রেখে সেবা সুস্থতা করে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। আমার ৪ ভাইয়ের বৌ ছিল, আমার আব্বা ও আম্মার পছন্দের বউ ছিলেন আমার স্ত্রী। আমার বাবা এবং আম্মা আমার স্ত্রীকে মা হিসেবে সম্মোধন করতেন।আমার স্ত্রী নেককার পরহেজগার নারীর মধ্যে অন্যতম। আমার ছেলের বঊ যারা হবে তারা একজন ভদ্রমহিলা শাশুড়ী পাবে এবং সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। এরকম একজন দ্বীনদার এবং ঈমানদার স্ত্রী পাওয়া পুরুষের জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমার স্ত্রী এবং দুই ছেলে নিয়ে আমাদের সুখের সংসার। আমার ছেলেরা মায়ের মতো অতিথি পরায়ন এবং ভদ্রলোক। সবাই দোয়া করবেন।
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।