আরিফ আজম :
ফেনী শহরের মহিপালে ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতাকে গণহত্যায় অংশ নিতে লিটন সহ ৮ জনের হাতে শর্টগান তুলে দেয় পৌর যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম ভূঞা ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বাবলু। সেদিনের হামলায় ৪০ থেকে ৫০ জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী গুলি চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের ঘটনার বর্ণনা দেয় র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি লিটন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাইয়েদ মো: শাফায়াত দীর্ঘ ৫ ঘন্টাব্যাপী তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, লিটন আদালতকে জানিয়েছে- ৪ আগস্ট সকালে সে সহ ৮ জন পৌরসভায় আসে। সেখানে আরো ৩শ থেকে ৪শ লোক ছিল। জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী সবার উদ্দেশ্যে রাখা বক্তব্যে যেকোন মূল্যে ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। এসময় তার পাশে ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল ও পৌর সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। এরপর মাষ্টারপাড়া থেকে সাদা প্রাইভেটকারের মাধ্যমে ব্যাডমিন্টন ব্যাগে করে শর্টগান আনা হয়। পৌরসভার লিবার্টি সুপার মার্কেটের নিচতলায় কৃষকলীগের অফিস কক্ষে লিটন সহ ৮ জনকে ডেকে নিয়ে ৮টি শর্টগান ও ১০ রাউন্ড করে গুলি দেয় রফিক ও বাবলু। যারা অস্ত্র চালাতে জানতো না তাদের শিখিয়ে দেয়া হয়।
ওই সূত্র আরো জানায়, মহিপালে হামলার সময় জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য মজিবুল হক রিপন ও ফুলগাজী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদারকে অনুসরন করতে অস্ত্রধারীদের নির্দেশ দেয়া হয়। ৪০-৫০ জন বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও ১শ থেকে ২শ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহিপালের দিকে যায়। অস্ত্রধারী ও অস্ত্র ছিল না এমন বেশ কয়েকজন ব্যক্তির নাম আদালতকে জানায় লিটন। মহিপালে ছাত্র-জনতার গুলি করার সময় চৌধুরীবাড়ীর মুখে অবস্থান করায় উপরের দিকে ৮ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে লিটন। সংঘর্ষ শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কৃষকলীগের অফিসে গিয়ে রফিক-বাবলুর কাছে অস্ত্র জমা দেয় তারা। এসময় ব্যবহার না হওয়া ২ রাউন্ড গুলিও ফেরত দেয় লিটন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো: মোতাহের হোসেন ফেনীর সময় কে জানান, জবানবন্দিতে লিটনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তদন্ত কাজ চলছে। তদন্তের স্বার্থে তিনি অপর জড়িত কারো নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।