ঢাকা অফিস :
সোনাগাজীতে মাকে বেঁধে ১৩ বছরের কিশোরী মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক আসামি দেড় যুগের বেশি সময় পলাতক ছিলেন। সোমবার রাতে ঢাকার মেরুল বাড্ডা এলাকা থেকে লাতু মিয়া নামের ওই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
র্যাব বলছে, লাতু মিয়া ছদ্মবেশ ধারণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিলেন। সর্বশেষ তিনি খাদেম সেজে ঢাকার একটি মাজারে আত্মগোপনে ছিলেন। লাতু মিয়াকে গ্রেফতারের পর গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, লাতু মিয়ার দৃশ্যমান কোনো পেশা নেই। তার নামে ফেনীর ফুলগাজী থানায় একটি ডাকাতি, দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলাসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
র্যাব জানায়, কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে ২০০৩ সালের ১৩ মে। গভীর রাতে সোনাগাজীতে মাকে বেঁধে রেখে মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করে লাতু মিয়া, ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম ও কাশেম। এ ঘটনায় পরদিন কিশোরীর মা চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষ করে ওই বছরের ১৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচারিক কার্যক্রম শেষে চলতি বছরের ১৪ জুলাই আদালত জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কাশেম ও লাতু মিয়াকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। তবে ফারুকের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ২০০৩ সালে গণধর্ষণের পর লাতু মিয়ার পলাতক জীবন শুরু হয়। ঘটনার পর তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে রিকশা চালানো শুরু করেন। তবে কায়িক পরিশ্রম তার ভালো না লাগায় চুরি ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
একটি ডাকাতির ঘটনায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জামিনে বের হয়ে তিনি আত্মীয়স্বজনের বাসায় অতিথি হিসেবে জীবন যাপন করতে শুরু করেন। কখনো কখনো তিনি নিজের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে আসতেন। পলাতক থাকা অবস্থায় কিছুদিন তিনি সিলেটের মাজার এলাকায় থেকেছেন। একপর্যায়ে তিনি ঢাকায় এসে ফেরি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করেছেন। পরে তিনি নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ নেন। মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ হওয়ার পর তিনি ঢাকার একটি মাজারে গিয়ে খাদেম সেজে আত্মগোপন করেন।