এম মাঈন উদ্দিন:
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ২৫টিরও অধিক দোকান। বুধবার রাত ১২টার সময় উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের জোরারগঞ্জ বাজারের প্রজেক্ট রোড়ের ইদ্রিস বলি মার্কেটে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিসের ৩ টি ইউনিট, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী ও স্থানীয়রা এসে প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা হলো, বিমল বৌদ্ধর বিমল টিম্বার এন্ড ফার্নিচার, জামশেদ আলমের মা ফার্নিচার শোরুম, মঞ্জুর সাউন্ড সিস্টেম, সরওয়ারের নকশার দোকান, বাবলুর ফার্নিচারের দোকান, বিকাশ চক্রবর্তীর বানুভুষণ ফার্মেসি, নুর আলমের কুলিং কর্ণার, গফুর সওদাগরের কুলিং কর্ণার, চন্দ্র বেদনাথের বৈশাখী টেইলার্স, মনির আহম্মদের সাব্বির গ্লাস এন্ড এসএস, আবুল কাশেমের কাঠের দোকান, নুর হোসেনের কাঠের দোকান, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল দেওয়ানজীর ব্যক্তিগত অফিস, বাবুর নকশা ঘর, কালুর সবিতা মেটাল দেবু দেবনাথের ডিমের আড়ত, নাজিমের মোটরসাইকেল গ্যারেজসহ প্রায় ২৫ টির বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার ( মিরসরাই সার্কেল) ইফতেখার হাসান, জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদ হোসেন ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ মা ফার্নিচারের সত্ত্বাধীকারি জামশেদ আলম জানান, সবিতা মেটাল ওয়েল্ডিংয়ের মেশিন থেকে শর্ট সার্কিটের আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে চড়িয়ে পড়ে একে ২৫ টির বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী মো. মঞ্জু জানান, এনজিও থেকে ৮ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়ে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়েছিলাম। আগুন এখন আমার সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। কি করে ঋণের টাকা দিবো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা এখন পথে বসে গেছি।
জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রেজাউল করিম মাষ্টার বলেন, বুধবার রাতে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ছাত্রলীগ ও স্থানীয়দের নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করেছি। সময়মতো যদি ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস না আসতো তাহলে পুরো জোরারগঞ্জ বাজার পুড়ে ছাই হয়ে যেতো।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
জোরারগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রষার কান্তি বড়ুয়া জানান, আগুনে পুড়ে ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে গেছে। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে তাদের। আমরা বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা আলোচনা করবো।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আমাদের ৩ টি ইউনিট গিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্তাধীন।