নিজস্ব প্রতিনিধি :
‘স্কুলের সামনে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে পার পেয়ে যাবা ভাবার কোন কারণই নাই। ওয়ার্নিং দিচ্ছি। ফেনীর পাঁচগাছিয়ার ঘটনাটি নজরে আনা হয়েছে। আশাকরি বাকিরা বুঝতে পেরেছে…’ নিজ ফেসবুক ওয়ালে এমন একটি স্ট্যাটাস দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাদিয়া ফারজানা। গত তিনদিনের ব্যবধানে তার দুটি স্ট্যাটাস ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পুলিশের এ উদ্যোগকে নেটিজেনরা সাধুবাদ জানাচ্ছে। একইভাবে উদ্যোগটি সফল হবে কিনা এনিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
ফেনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাছনাত তুষার কমেন্টসে লিখেছেন, ‘পারবেন না আসল অপরাধীদের ধরতে। কারন আগেও এমন লিস্ট বের হয়েছিল। যেখানে আসল অপরাধী যারা তাদের নাম গোপন করে কিছু নিরপরাধীদের নাম দেওয়া হয়েছিল। ফলাফল হিসেবে অপরাধী যারা তারা বেঁচে গিয়েছিলো এবং এখনো তারা সক্রিয়ই আছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সরিষা খেতেই ভূত।’
মো: সাইফুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘ম্যাডাম আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা একটা ভালো কাজ, তবে আপনি জানেননা, এইসব কিশোর গ্যংয়ের সাথে কিছু কিছু পুলিশ সদস্যের হাত আছে, যারা ইয়াবা বিক্রি করে তাদের কথা বিট পুলিশ সবসময় জানে এবং দেখে কিন্তুু কিছু করে না, কেউ যদি দেখে নালিশ করে তার উপরে নেমে আসবে হামলা-মামলা। ওইসময় পুলিশ তাদের পক্ষে থাকবে, উল্টো যে নালিশ দিবে তাকে বানিয়ে দিবে মাদক কারবারি, বাকীটা ইতিহাস।’
ইয়াকুব ওবায়দী নামে একজন লিখেছেন, ‘বেশীরভাগ জনপ্রতিনিধিরা কিশোর গ্যাং এর আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা। যার কারনে অল্প বয়সী এই কিশোররা লেখাপড়া বাদ দিয়ে বড় ভাইদের সাথে বিভিন্ন রাজনিতিক মিটিং মিছিল ও সমাবেশে যায়, এবং সমাজে মাদক ইভটিজিং সহ নানা অপরাধে লিপ্ত হয়ে যায়। এদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ভাল পথে আনা আমাদের সবার দায়িত্ব। যদি সম্ভব না হয় তাহলে এদের নাম-ঠিকানা পুলিশকে দেওয়া উচিৎ।’
আবদুল হালিম সাগর লিখেছেন, ‘কিশোর গ্যাংকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে গড়ে তুলে, রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে, মাদক-অস্ত্র দিয়ে পুষে আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে স্যার। নয়তো ওদের দমন করা কঠিন হবে। কিশোর গ্যাং এর শক্তির মূল উৎস হচ্ছে বড় ভাই টাইপের রাজনৈতিক নেতারা। আগাছার যদি শিকড় না উপড়ানো হয়, তাহলে এটা আবার গজিয়ে উঠবে, শিকড় উপড়ে দিলে একেবারে দমন হয়, এই বিষয়টা ঠিক তেমন স্যার।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাদিয়া ফারজানা ফেনীর সময় কে জানান, গ্যং কালচার অপরাধ নির্মূল করতে নানামুখী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জনজীবন বিঘিœত হয় এমন কাজ কোনভাবেই করতে দেয়া হবেনা। কিশোর গ্যাংয়ের খবর পেলেই তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আইনের আওতায় আনছে।
তিনি আরো বলেন, ডাটাবেজ একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। নিজকে শুধরে নিলে ডাটাবেজ থেকে নাম বাদ দেয়া হবে। অনেক সময় দেখা যায় সন্তান কী করে তা অভিভাবক জানেই না। অনেকে অভিভাবকদের কথাও শুনতে চায় না। অনেকের অভিভাবকদের ডেকে এনে বোঝানোর চেষ্টা করছি। তবে কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবেনা।