অনলাইন ডেস্ক:
রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তিটা প্রায় করেই ফেলেছিল কিলিয়ান এমবাপে। কিন্তু হঠাৎ করেই ইউটার্ন নেন তিনি। শুক্রবার রাতেই রিয়াল মাদ্রিদ বুঝতে পারে, তাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে সেটা এখন পুরোই বৃথা। কারণ, পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি এবং প্যারিসেই নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন।
এমবাপেকে রিয়াল পেতো ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে। কোনো ট্রান্সফার ফি লাগতো না। এ কারণে এমবাপেকে উচ্চ পারিশ্রমিক এবং উচ্চ সাইনিং বোনাস দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সেটা শুনেই হয়তো এমবাপে রাজি হয়েছিলেন মাদ্রিদে যাবেন।
কিন্তু হঠাৎ পিএসজি থেকে এমন কী প্রস্তাব পেলেন, যেটার কারণে তিনি রিয়ালে গেলেন না? স্কাই স্পোর্টস রিপোর্ট প্রকাশ করেছে পিএসজিতে এমবাপের নতুন পারিশ্রমিক সম্পর্কে এবং সে সঙ্গে জানিয়েছে কী কী বোনাস পাচ্ছেন তিনি পিএসজিতে।
স্কাই স্পোর্টসের রিপোর্ট অনুযায়ী, পিএসজির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ১ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড (প্রায় ১১ কোটি টাকা) পারিশ্রমিক পাবেন এমবাপে। শুধু তাই নয়, নতুন চুক্তির সময় সাইনিং বোনাস হিসেবে এমবাপের অ্যাকাউন্টে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১ হাজার ৯৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা) জমা করে দিয়েছে প্যারিসের ক্লাবটি।
সপ্তাহে ১ মিলিয়ন পাউন্ড পারিশ্রমিক হলে, বছরে এমবাপের মোট পারিশ্রমিক দাঁড়াচ্ছে ৫২ মিলিয়ন পাউন্ড (৫৭২ কোটি টাকা)। যা এমবাপেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ফুটবলারে পরিণত করেছে। যদিও, এমবাপের সে সামর্থ্যও রয়েছে। নতুন চুক্তির দিনেই হ্যাটট্রিক করে পিএসজির প্রত্যাশা পূরণ করার পথে হাঁটতে শুরু করেছেন তিনি।
শুধু পারিশ্রমিক আর সাইনিং বোনাসই নয়, পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে এমবাপের আরও অর্থযোগ রয়েছে। এমবাপের ইমেজ রাইটস ছেড়ে দিয়েছে ক্লাবটি। সঙ্গে গোল করলে, ব্যালন ডি’অর পেলে বা সেরা তিনে নাম থাকলে এবং সর্বোপরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারলেও উচ্চহারে বোনাসের ব্যবস্থা রয়েছে এমবাপের জন্য।
এদিকে রিয়াল মাদ্রিদ অভিযোগ করেছে, পিএসজি এমবাপের চুক্তি নিয়ে ফাইনান্সিয়াল ফেয়ার প্লের নিয়ম ভঙ্গ করেছে। যেভাবে তারা চুক্তি করেছে, তাতে উয়েফা, ফান্স, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন- সবার অর্থনেতিক নিয়মকে ভঙ্গ করেছে। এ কারণে এসব জায়গায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করবে রিয়াল।
রিয়ালের মতে, গত মৌসুমেই ২২০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২ হাজার ৩৩ কোটি টাকা) লস করেছে পিএসজি এবং গত কয়েক মৌসুম মিলিয়ে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা) লস করেছে তারা। এই হিসেব রিয়াল মাদ্রিদ দিচ্ছে পিএসজির কাছ থেকে প্রকাশ হওয়া তথ্য থেকেই।
আবার পিএসজি গত ২০২১-২২ মৌসুমের পুরো বছরে ফুটবলার থেকে শুরু করে তাদের স্টাফদের পারিশ্রমিক দিয়েছিল প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ইউরো।
সে হিসেবে এমবাপের মত একা এক ফুটবলারের পেছনে যে অর্থ ব্যায় করে চুক্তি করেছে পিএসজি, তাতে ইউরোপের পুরো অর্থনেতিক সিস্টেমকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেবে বলে বিশ্বাস রিয়াল মাদ্রিদের।
গত বছরই এমবাপেকে কিনতে চেয়েছিল রিয়াল। তখনও এক বছর চুক্তি বাকি থাকায় পিএসজিকে ট্রান্সফার ফি হিসেবে ২৩০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা) দিতে চেয়েছিল রিয়াল। সে সঙ্গে এমবাপের সঙ্গে ট্যাক্স ফি ছাড়া বাৎসরিক ২০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ২১৯ কোটি টাকা) পারিশ্রমিক দিতে চেয়েছিল তারা।
চুক্তি সাক্ষরের সময় দিতে চেয়েছিল ১১০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১ হাজার ২০৩ কোটি টাকা) বোনাস দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন ব্যাটে-বলে মিলেনি বলে এমবাপের আর পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে আসা হয়নি।