দৈনিক ফেনীর সময়

সিত্রাং- ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন সোনাগাজী

সিত্রাং- ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন সোনাগাজী

নিজস্ব প্রতিনিধি :

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়ো বাতাসে উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলায় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০-২২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে পৌরশহরসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার গ্রমাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন রয়েছে। এর আগে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সোমবার বিকাল সাড়ে চারটা থেকে গ্রামাঞ্চলে এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে পৌরশহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। একইদিন রাত ২টা থেকে উপজেলায় ইন্টারনেট সেবা ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পর মঙ্গলবার দুপুর দুইটা থেকে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল হয়। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত পৌরসভায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে। তবে উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সোনাগাজী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী সনৎ কুমার ঘোষ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮০টিস্থানে ৩৩ হাজার কেভি লাইনের ওপর গাছ পড়ে তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। এছাড়া সিত্রাংয়ের তা-বে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙ্গে বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০টি খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া ১২টি ট্রান্সফরমার বিকলসহ ৮-১০টি পুল নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো মেরামতে কাজ চলছে। মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে কয়েকটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও প্রায় ঘন্টাখানেক বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্য্যে ছিল। তবে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা উপড়ে পড়া গাছপালা কাটায় বিদ্যুৎ বিভাগকে সহযোগিতা করছেন। ঘূর্ণিঝড়ের গতি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের লাইন মেরামতের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা রাতে কাজ শুরু করেন। তবে উপজেলার অনেক এলাকায় গ্রাম-গঞ্জের রাস্তাঘাট চলাচলের উপযোগী করা হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য দ্রুত মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কাটিয়ে মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে উপজেলায় ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। সকাল থেকেই মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্যতা দেখা গেছে। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গভীর রাতেই উপজেলার বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থান করা লোকজন বাড়িতে ফিরে গেছেন। সকালে বড় ফেনী নদীতে জোয়ারের উচ্চতা কমায় নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় চারটি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তা নিরুপনে কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!