নিজস্ব প্রতিনিধি :
দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনীয়া বাজার যেন ভূমি দখলবাজদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। রাত গভীর হলেই ওঁতপেতে থাকা কতিপয় দখলবাজ তাদের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে দখল করে সরকারী খালি জায়গা, দখল করে অন্যান্য ব্যক্তি মালিকানাধীন দোকানের আশপাশের গলিপথ। বাদ যায়না সাধারণের চলাচলের ফুটপাতও।
এমনই এক দখল দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে গত ১০ মে শুক্রবার গভীর রাতে বাজারের সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী প্রয়াত আম্বর মিয়ার ছেলে শফিকুর রহমানের দোকানস্থ ছাদের তলার বহিঃরাংশে টিনের চাপরা ঘর তোলার মাধ্যমে। হঠাৎ করে সকাল বেলা পাকাপোক্ত ঘর দেখে বাজারের লোকজন শফিক মিয়াকে জানালে তিনি বিষয়টি বাজার কমিটিসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের অবহিত করেন। জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলনকে অবহিত করা হলে তিনি শক্তহাতে এসকল হীন তৎফরতা বন্ধ করতে সদিচ্ছার কথা জানান এবং দখল উচ্ছেদ করতে বলেন। পরে দোকান মালিক স্থানীয়দের সহযোগিতায় দখল উচ্ছেদ করে নিজের জায়গা পরিস্কার করে নেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ছোট ফেনী নদীর উপর নির্মিত ফেনী-মাইজদী আঞ্চলিক মহাসড়কের সিলোনীয়া ব্রীজের নীচ থেকে পশ্চিম দিকে চিহ্নিত দখলবাজ চক্র ১০/১২টি ঘর তুলে মোটা অংকের জামানত নিয়ে ভাড়া তুলে খাচ্ছে। বাদ যায়নি বাথরুমের পাশে পস্রাব খানার জায়গাটিও। সেখানেও টিনের চাপরা তুলে ভাড়া দিয়েছে এক কামারের কাছে।এর আগেও ফেনী মাইজদী ফোরলেন আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে বিভিন্ন সময়ে অর্ধ শতাধিক দোকান তুলে লাখলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র।
স্থানীয়রা জানান, কখনো টুল ফেলে, বাকসো বসিয়ে আবার সুবিধাবুঝে রীতিমত টিনের চাপরা দিয়ে ঘর তুলে দখল করায়ত্ব করে লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে মোটা অংকের টাকা হাতানো এই চক্রের কাজ। এছাড়া বাজার রাস্তার পশ্চিম দিকে ফুটপাত লাগোয়া গজারিয়া রোডের মাথা থেকে ছোট ফেনী নদীর ব্রীজের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় বিশটি টিনের চাপরা দোকান চক্রের বানানো। বিভিন্ন সময় অবৈধ উচ্ছেদ চললে ক্ষতিগ্রস্থ হয় নীরিহ দোকানী। হারায় দোকান, রুটিরুজি এবং পুঁজি। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই জায়গাগুলোতে আবার দোকান বসায় দস্যু চক্র। তৈরি হয় নতুন খদ্দের। ফোরলেন সড়কের পূর্বদিকে ব্রীজ লাগোয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের খালি জায়গায় কয়েকমাস আগে টিনের চাপরা তুলে চারলাখ টাকা জামানত নিয়ে হোটেল ও সেলুন দোকানদারের কাছে ভাড়া দিয়েছে মর্মে স্থানীয়রা জানায়। তারও আগে দক্ষিণ জায়লস্কর গ্রামের দরিদ্র নুরুল আমিন ও উত্তর জায়লস্কর গ্রামের বাবুল এনজিও থেকে ঋণ করে ফুটপাতে তোলা ঘর কিনে উচ্ছেদে স্বর্বস্ব হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ দস্যু চক্রের এমন কর্মকান্ডে সিলোনীয়া বাজারের নিরাপত্তা হুমকীর মুখে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা এ ধরণের নৈরাজ্য বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা জানান, বিষয়টি তিনি আগে জানতেননা। শীঘ্রই এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে অবৈধ দখলবাজদের বীরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, তিনি লোক পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে সওজ এর জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত যে কোন স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।