নিজস্ব প্রতিনিধি :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার মধ্যরাত থেকে সোনাগাজীতে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসের তীব্রতা এতটাই বেশি যে সড়ক বা বাইরে খোলা জায়গায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা পড়ে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি ভেঙে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব না কাটা পর্যন্ত উপকূলীয় ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিলেও সোমবার সকাল থেকে পৌর শহরে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিতে ভিজে বিদ্যালয়ে আসতে দেখা গেছে।
সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানায়, ঘূর্ণিঝড় হলেও তাদের স্কুল বন্ধ দেওয়া হয়নি। সোমবার তাদের মডেল টেস্ট পরীক্ষা থাকায় বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও তারা বিদ্যালয়ে এসেছে।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বলে, দুর্যোগ পরিস্থিতির মধ্যে অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে আসার পর বন্ধের বিষয়টি জানতে পেরেছে সে। আবার বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ির ফিরে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, দুর্যোগ ও উপকূলীয় এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবর টেলিভিশনে দেখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বন্ধের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলায় বন্ধ দেওয়া হয়নি। তবে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সোমবার সকাল নয়টার দিকে বিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে বন্ধের নোটিশ দিয়েছেন।
এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সোনাগাজী জোনাল অফিসের ডিজিএম বলাই মিত্র বলেন, রোববার রাতে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে বেশ কিছু এলাকায় গাছপালা পড়ে তার ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মেরামতের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। তবে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে একটু সময় লাগবে।
উপজেলার দক্ষিণ–পূর্ব চর চান্দিয়া এলাকার বাসিন্দা ও সিপিপির দলনেতা নুর নবী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বলবৎ থাকায় তারা এখনো মাঠে থেকে প্রচার চালিয়ে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলছেন। কিন্তু ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস হলেও মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছেন না।
উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, যেকোনো দুর্যোগে তার ইউনিয়নের লোকজন বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতির কথা শুনেছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, মধ্যরাত থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সব এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাসে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জানা যাবে।