অনলাইন ডেস্ক:
আগামী ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরু করার জন্য যেসব প্রস্তুতি প্রয়োজন তার সবকিছুই রয়েছে বিমানের বলে জানিয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী। সোমবার (২৩ মে) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হজ ফ্লাইটের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রস্তুত। তবে হজ ফ্লাইটের কারণে যেসব রুট কম লাভজনক সে সব রুটে তথা অন্যান্য গন্তব্যের শিডিউল ফ্লাইট কমানো হবে। একইসঙ্গে আগামী ৩১ মে থেকে হজ ফ্লাইটের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু একটি সমস্যা রয়েছে। হজে যারা যাবেন তাদের বাড়ি ভাড়া এবং মোয়াল্লেম নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো এখনো শেষ করতে পারেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে আমাদের বিশ্বাস নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করবে সৌদি আরব। আমরা ৩১মে হজ ফ্লাইট চালুর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
মাহবুব আলী আরও বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে হজ ফ্লাইট চালু নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও প্রায় সব প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরু করব। আমরা নিজেদের বিমান দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করব। বাইরে থেকে লিজ নিয়ে যে বিমান আনার কথা ছিল সেটি বাতিল করা হয়েছে। বিমানের বহরে ২১টি এর মধ্যে চারটি বোয়িং-৭৭৭ রয়েছে। ২০১৯ সালে এই চারটি দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছিল। এ বছরও সেটি করা হবে। এতে বিমানের অন্যান্য গন্তব্যের শিডিউল ফ্লাইট এর ফ্রিকোয়েন্সি আমরা কমিয়ে দেব। কম গুরুত্বপূর্ণ ও কম লাভজনক রুটের ফ্রিকোয়েন্সি কমানো হবে। এটি দুই মাসের বিষয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সিং কমানো হবে না। আমাদের বাংলাদেশিরা যে সব দেশে রয়েছেন তাদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা হবে না।’
বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘বিমানবন্দরে যার যা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। যারা ডিউটি করে তারা নির্দিষ্ট সময়ের আধঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে ঢুকতে হবে। ডিউটি শেষে পরে বের হতে হবে। যেন আমরা যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পারি।’
আগামীবছর থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনা মহামারির সময়েও কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত না হওয়ায় আগামী বছরেই হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর তদারকি এবং নির্দেশনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের সব বিমানবন্দরের উন্নয়ন হয়েছে। কক্সবাজার, সৈয়দপুর, যশোর সব বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ চলছে। আর থার্ড টার্মিনাল হলে বাংলাদেশে অনেক বিমান আসবে। যাত্রীদের চাপও বাড়বে।’
বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি বন্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দরে ২১ হাজার যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করে তাদের সবাইকে প্রশ্ন করা সময়সাপেক্ষ ও অসম্ভব ব্যাপার। কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে যেন নির্দিষ্ট যাত্রী বা সন্দেহভাজন ১-২ শতাংশ যাত্রীকে যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ই-গেট চালুর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ট্রলি যেন মিসিং না হয় সে জন্য বিমানবন্দরের বাইরে ট্রলি নিয়ে যেতে বারণ করা হয়। তবে যারা বৃদ্ধ বা বয়োজ্যেষ্ঠ সেটি অন্য বিষয়।’
হুইল চেয়ারে সরাসরি বিমানযাত্রীরা গেট পার হতে পারে না কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিমান চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি দেখব আমরা, যেন এ সমস্যার সমাধান হয়।’
এদিকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নতুন ভাইরাস মাংকিপক্স নিয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘করোনার মতো এই ভাইরাসটি মোকাবিলায় দেশের সব বিমানবন্দর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া সব যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা এরইমধ্যে দেশের সব বিমানবন্দর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব বিমানবন্দরে যেসব ডাক্তার এবং অন্যান্য কর্মকর্তা যারা আছেন তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। আগে করোনার জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে যেভাবে দেখা হতো এই মাংকিপক্সের বিষয়েও তারা সেভাবে নজরদারি করবেন। এছাড়া বাংলাদেশে আসার জন্য সকল যাত্রীকে এখন একটি হেলদ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করতে হয়। সেই ফরমে আমরা মাংকিপক্সের বিষয়টি যুক্ত করেছি। সেখানে যাত্রীকে জানাবে তার মধ্যে এ ধরনের কোনোকিছু আছে কিনা।’
এ সময় বিমানবন্দরে আরও উপস্থিত ছিলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান,বাংলাদেশ বিমানের এমডিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।