দৈনিক ফেনীর সময়

ফেনীতে ফোকাস কোচিংয়ের ২৬ শিক্ষার্থীকে আদালতে সোপর্দ

ফেনীতে ফোকাস কোচিংয়ের ২৬ শিক্ষার্থীকে আদালতে সোপর্দ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের ফোকাস কোচিং সেন্টার (বিশ^বিদ্যালয় ভর্তি কোচিং) থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার হওয়া ২৬ শিক্ষার্থীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, বুধবার বেলা ১২টার দিকে ফেনী মডেল থানা থেকে ২৬ জনকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আদালতে মামলাটি শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, “গ্রেফতার সবাই শিবিরের নেতাকর্মী। এখানে তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল।” ঘটনাস্থল থেকে তারা ৬টি অবিষ্ফোরিত ককটেল ও কিছু দলীয় বইপুস্তক উদ্ধার করেছে বলেও দাবী করেন।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র আরো জানায়, শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের ফোকাস কোচিং সেন্টারে শিবিরের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে নাশকতার পরিকল্পনায় মিটিং করছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকালে বিপুল সংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ সেখানে হানা দেয়। এসময় ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হল- ফেনী শহরের মিজান রোডের মক্কা টাওয়ারের আবদুল মান্নানের ছেলে আবদুল আলিম (২১), সদরের দক্ষিন মধুয়াই গ্রামের খিজির হায়াতের ছেলে মোহাইমিনুল ইসলাম (২১), কাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকার মুর্তুজা হারুনের ছেলে হাবিবুল্লাহ (১৮), মোস্তফা ফারুকের ছেলে আনিছুর রহমান (২০), দক্ষিন লেমুয়া এলাকার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন (২৪), ফাজিলপুর এলাকার এনামুল হকের ছেলে শহীদুল ইসলাম (২০), একই এলাকার মো: সিকান্তরের ছেলে মো: সেজান (২০),

শর্শদী ইউনিয়নের আকতার হোসেনের ছেলে আবু জাফর (২৫), সোনাগাজীর চর সাহাভিকারী এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে মেহেদী হাসান (২১), আমিরবাদ ইউনিয়নের আহম্মদপুর গ্রামের জামশেদ আলমের ছেলে নুর মোহাম্মদ (২০), চরছান্দিয়া এলাকার হেদায়েত উল্যাহর ছেলে জহিরুল ইসলাম (২০), ভাদাদিয়া এলাকার আবু নাছেরের ছেলে মোরশেদুল ইসলাম (১৯), দাগনভূঞার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কোশল্যা এলাকার মো: হোসাইনের ছেলে নোমায়ের বিন হোসাইন (১৯), ছাগলনাইয়ার থানার নিশ্চিন্তা এলাকার শাহজাদা বাবুলের ছেলে আবদুল্লাহ আল ফাহাদ (২০), ফুলগাজীর মুন্সীরহাট ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর এলাকার আকবর হোসেনের ছেলে মো: জুনায়েদ (১৯), বাসুড়া এলাকার আমান উল্যাহর ছেলে মো: আরিফ (১৯), পরশুরামের গদানগর এলাকার আবদুল করিমের ছেলে আজিমুন করিম (২০), নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার রামপুর ইউনিয়নের রামপুর এলাকার মাইন উদ্দিনের ছেলে মুনতাছির আহাম্মদ (১৯), সেনবাগ থানার বিঞ্চুপুর গ্রামের জিয়াউল হকের ছেলে নুর নবী (২০), অর্জুনতলা এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে মো: সায়েম (১৮), কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানার মৃত জাফর আলমের ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৮), চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানার পশ্চিম লালানগর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো: সৌরভ হোসেন (২০), শেখেরহাট এলাকার আবু জাফরের ছেলে মো: ফাহিম (১৯), চট্টগ্রামের ভুজপুর থানার পশ্চিম বড় বেতুয়া এলাকার এখলাসুর রহমানের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত (২০), ল²ীপুর জেলার রায়পুর থানার চর আবাবিল এলাকার দুলাল মাতবরের ছেলে আবদুল কাদের (২৫), মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার মিয়ারহাট এলাকার আখতার হোসেনের ছেলে তাহমিদ শাহরিয়ার (১৯)। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সৈয়দ ফারুক বাদি হয়ে রাতে ফেনী মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, নাশকতার পরিকল্পনা করতে শিবির কর্মীরা কোচিং সেন্টারে জড়ো হয়। সেখানে অভিযান চালিয়ে ৬টি ককটেল উদ্ধার ও বেশ কিছু বইপত্র জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে কোচিং সেন্টারের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তাদের একটি ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠান ও সনদ বিতরণী চলছিলো। এসময় হঠাৎ পুলিশ এসে তাদের সবাইকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে শিবিরের কোন কর্মসূচী ছিলো না।

গ্রেফতার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, বিশ^বিদ্যালয় ভর্তি হতে তার ছেলে এখানে গত কয়েকমাস কোচিং করে আসছিল। গতকাল এখানে বিতর্ক কর্মশালা ছিল। কর্মশালা চলাকালে পুলিশ এখানে অভিযান চালায় বলে তিনি শুনেছেন। বিকালে বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কোচিং সেন্টারটি ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!