নাজমুল হক :
১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট মুসলিম লীগের প্রধান কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতিতত্ত্ব এর ভিত্তিতে পাকিস্তান স্বাধীন রাস্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৪৮ সালে তমুদ্দিন মজলিস এর প্রধান প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম এবং ডাকসুর লিডারশীপে মাতৃভাষা আন্দোলন গড়ে উঠে যাহা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন একধাপ এগিয়ে যায়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সালাম রফিক শফিক জাব্বার এর রক্তের বিনিময়ে বাংলাভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতির পিতা বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লিডারশীপে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। ডাকসুর লিডারশীপ এনে দিয়েছে মাতৃভাষা বাংলা, জেনারেল আইউব খানের বিদায়, ১৯৭১ সালে লাল সবুজের বাংলাদেশ। স্বেরাচারী জেনারেল এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর শাসন ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকে গেছে ডাকসু নির্বাচনের বিজয়ী লিডারদের আয়ের উৎস কি? ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর এবং ড রেজা কিবরিয়া এর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, টাকার ভাগাভাগি, মোসাদ এবং র কানেকশন ইত্যাদি। সরকারী দল থেকে ৩০০ কোটি টাকার টোপ গ্রহণ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি, টাকার ভাগাভাগি, গাড়ি বাড়ির মালিক হওয়া ইত্যাদি নিয়ে অরুচিকর টকশো এবং টক টু কান্ট্রি। দেশ ও জাতির স্বাথে ডাকসু ভিপি জিএস, ছাত্র সংগঠন এর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার উৎস খুঁজে বের করা উচিৎ।
১৯২৩ -২৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয় । ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদ গঠন করে ফান্ড কালেকশান করে দল পরিচালনা করেন। নুর রেজা দ্বন্দ্ব টাকার ভাগাভাগি নিয়ে। ডাকসু সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইসচ্যান্সেলর এর নিকট কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে ছিলেন, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে প্রধানমন্ত্রী অব্যাহতি দিয়েছেন। দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর বিরুদ্ধে জা বি প্রশাসন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। নুরুল হক নুর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন ড. রেজা কিবরিয়া এবং গণ অধিকার পরিষদের তহবিল আত্মসাৎ অর্থ কেলেংকারী প্রমাণ করতে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন সাবেক ডাকসু ভিপিকে গাড়ি ব্যবহার এবং ছাত্র সংগঠন এর সভাপতিকে গাড়ি ফ্ল্যাট বাড়ি ব্যবহার ইত্যাদি প্রশ্ন করে কোন সন্তোষজনক জবাব আদায় করতে পারেন নাই।
ডাকসু ভিপি নুরু এবং রেজা কিবরিয়া দ্বন্দ্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বের হয়ে আসছে। রাজনৈতিক দল, ডাকসু ভিপি জিএস এবং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ পদবি খুবই লাভজনক বিধায় দ্রুত কোটিপতি হওয়া যায়। গাড়ি বাড়ির মালিক হওয়া যায়। ছাত্র সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলের পদ পদবি বিক্রয় করে কোটি কোটি টাকা এবং বাড়ি গাড়ির মালিক হওয়া যায়। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে ডাকসুর সাবেক ভিপি জিএস এবং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার গল্প জাতির সামনে তুলে ধরা। ডাকসু এবং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কিভাবে ব্যবসা বানিজ্যে চাকুরী না করে কোটি কোটি টাকার মালিক তাদের তহবিলের উৎস খুঁজে বের করা উচিৎ। ডাকসু ভিপি জিএস যাহারা জীবিত আছে তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব, মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমান উল্যাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন, নুরুল হক নুর এবং গোলাম রাব্বানী প্রমুখ লিডাররা কিভাবে বাড়ি গাড়ি কোটি টাকার মালিক তাহা জাতির তুলে ধরা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৩য় শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, নুরুল হক নুর, রেজা কিবরিয়া, মাহি বি চৌধুরী, আন্দালিব রহমান পাথ, জোনায়েদ সাকি, মুজিবুর রহমান মঞ্জু, আব্দুল আউয়াল মামুন প্রমুখ প্রবিণ এবং নবীন লিডাররা দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশের সংস্কার করা, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি। নুরু রেজা কিবরিয়ার দলের তহবিল আত্মসাৎ অর্থ কেলেংকারী অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ দিয়ে ৩য় শক্তির উত্থানকে প্রশ্নের সন্মুখিন করেছে। সাংবাদিক গোলাম মহিউদ্দিন যাদেরকে প্রশ্নের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল পরিচালনার অথের উৎস খুঁজেছেন তাদের কেউই সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেন নাই। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের তহবিল আত্মসাৎ অর্থ কেলেংকারী অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ দিয়ে দল ভেংগে যায়। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উচিত।
৩য় শক্তির উত্থান জণগনের অন্যতম প্রত্যাশা। স্বাধীন বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতা দখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে দুনীতি লুটপাট স্বজনপ্রীতি টাকা পাচার মানবপাচার ঘুষ বানিজ্য ইত্যাদির অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ইত্যাদি ৩য় শক্তির উত্থানকে অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।
ডাকসু ভিপি নুরু-রেজা কিবরিয়া দ্বন্দ্ব তহবিল আত্মসাৎ অর্থ কেলেংকারী অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে সোস্যাল মিডিয়াসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়। বিষয়টি জনসম্মুখে নিয়ে আসেন ড. রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হক নুর। তাদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও আস্তা নেই। নতুন প্রজন্ম থেকে রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হবে ৩য় শক্তির উত্থান ঘটাচ্ছে এই আশা এখন গুড়েবালি। নুরু রেজা কিবরিয়া জাতির প্রত্যাশা শেষ করে দিয়েছে। ওরা কেউবা বলে ৩০০ কোটি টাকা সরকার দিয়েছে, কেউবা বলে নুর গাড়ি ব্যবহার করে কিভাবে, কেউবা বলে মোসাদের দালাল ও এজেন্ট। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট। রাজনৈতিক দলের লিডার বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট কিনা সাধারণ নাগরিকদের বুঝার কোন উপায় নেই। এইটা একমাত্র বলতে পারে যারা রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বাদ দিয়ে হালুয়া রুটির জন্য রাজনৈতিক দল গঠন করে।
৩য় শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না নাগরিক ঐক্য গঠন করেন। মান্না সাহেব জাসদ বাসদ আওয়ামী লীগ করে এখন নাগরিক ঐক্য গঠন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন করে যাচ্ছন। তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এর জিএস ছিলেন। তার দলের বিরুদ্ধে টাকার ভাগবাটোয়ারা ইত্যাদি অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ইত্যাদি আসে নাই।
৩য় শক্তির উত্থান ঘটানোর ভাবনা নিয়ে এরদোয়ান, মাহাথির মোহাম্মদ, আনোয়ার ইব্রাহীমদের মতো মানবিক মর্যাদা সম্পন্ন জাতি এবং মানবিক রাস্ট্র গঠনের প্রত্যাশা নিয়ে জামায়াত ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যরিষ্টার আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সচিব এএফএম সোলাইমান চৌধুরী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মজিবুর রহমান মন্জু নতুন প্রজন্মদের নিয়ে গঠন করেছেন আমার বাংলাদেশ পাটি (এবি পাটি)। রমজানের রোজার সময় ইফতার মাসব্যাপী প্রোগ্রাম ও ফুড প্যাকেট বিতরণ ইত্যাদি মানবিক রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম করে টিকে আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের গুডবুকে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিবেচনায় আছেন। বড় দল ছেড়ে দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হলে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে নাগরিকদের নিকট ছুটে যায় নতুন দল। জামায়াতের ভুলত্রুটি সংস্কার, ৭১ ইস্যু ভুলত্রুটি, ইত্যাদি মিডিয়ার প্রচার৷ অপরদিকে জামায়াত ইসলাম প্রচার করে মুজিবুর রহমান মন্জুর কর্মকান্ড দলের শৃংখলা বিরোধী ইত্যাদি। ফলে রাজ্জাক মঞ্জুদের পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক সোশ্যাল মিডিয়ার বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মিডিয়াগুলো এটাকে লুপে নিয়ে ব্যাপক ঝড় তোলে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করতে হলে ৭১ এর ভুমিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়ে ব্যরিষ্টার আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করেন। মজিবুর রহমান মন্জু নিজেকে সংগঠন থেকে গুটিয়ে নিয়ে নতুন একটি উদ্যোগের দিকে হাটতে থাকেন। জামায়াতের প্রতি একরকম চ্যালেন্জ ছুড়ে দিয়ে রীতিমত পত্রপত্রিকা, টকশো ও সোস্যাল মিডিয়ায় নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করেন। ইতিমধ্যে তারা একটি বই প্রকাশ করেছে, যাতে জামায়াতের ভুলত্রুটির বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। মজিবুর রহমান মন্জু ও তার অনুসারীরা অত্যন্ত আত্মপ্রত্যয়ের সাথে দৃঢ় আশাবাদী যে তারা দেশের রাজনীতিতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন। তাদের নতুন এই উদ্যোগের সাথে জামায়াত, বিএনপি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা সম্পন্ন সুশীল সমাজের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকেরা দলে দলে সম্পৃক্ত হবে। একটি জাতীয় ঐক্য তৈরী করে তারা দেশের নেতৃত্ব গ্রহন করতে পারবেন। তারা মজিবুর রহমান মন্জুকে বাংলার এরদোয়ান হিসাবে প্রচার করছেন। সুশীল সমাজ এবং সংস্কারবাদীদের দৃষ্টিতে জামায়াত একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দল। জামায়াতের কর্মকৌশল সেকেলে, ৭১ এর ভুমিকার জন্য এদেশে জামায়াতের ভবিষ্যত পুরো পুরি অন্ধকার। অপরদিকে সংস্কারবাদীদের এমন মারাত্মক সমালোচনার জবাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দ কোন প্রকার নেতিবাচক মন্তব্য না করে বরং নেতা কর্মীদেরকে সংযত আচরণের পরামর্শ দিয়ে একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেন। অবশ্য এটা জামায়াতের চিরাচরিত ঐতিহ্য। জামায়াত সমালোচনার বিপরীতে সমালোচনা বা ফতোয়ার বিপরীতে ফতোয়া দান করেনা। তথাপিও জামায়াত সমর্থকদের একটা অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্জাক সোলাইমান মন্জুদের ব্যপারে বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায়। এখন দেখার বিষয় এবি পাটির ৩য় শক্তি হিসেবে উথানের অভিযাত্রা কতদুর।
তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য বিএনপি জোট সরকারের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা: বদরুদ্দোজা চৌধুরী মেজর আব্দুল মান্নান এবং মাহি বি চৌধুরীর বিকম্প ধারা বাংলাদেশ গঠন করেন। বি চৌধুরী ও মান্নান ভুইয়া বেয়াই এবং মান্নান ভুইয়ার জামাই মাহি বি চৌধুরী। বিএনপির সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার ঘটনা শোনালেন মাহি বি. চৌধুরী ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯ জাতীয় সংসদে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা তুলে ধরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরী। রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘটনা তুলে ধরেন। মাহি বি. চৌধুরী বলেন, এ সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। এক তরফভাবে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিষদগার করা হয়েছিলো। অন্যায়ভাবে তাকে অপসারণ করা হয়েছিলো। আমি তখন এ সংসদের সদস্য ছিলাম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম শ্রদ্ধার রাজনীতি শুরু হোক। আমি যখন থেকে রাজনীতি শিখেছি, তখন থেকেই জেনেছি আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু আমি দেখেছি আমার বাবা বদরুদ্দোজা চৌধুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কিভাবে শ্রদ্ধা করতেন। তিনি আরও বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিলো, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো, তিনি একজন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির (জিয়াউর রহমান) কবর জিয়ারত করতে যাননি। এ কারণে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাত্র সাত মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একদিন বিএনপি নেতা তারেক রহমান আমাকে ফোন করে বললেন, আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিনার করবো, তিনি মেন্যুও জানিয়েছিলেন। আমি আমার মাকে জানালাম। ডিনার তৈরি হচ্ছে এ সময় বঙ্গভবনের নিরাপত্তার পরিবর্তন হলো। পিজিআরকে (স্বতন্ত্র প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট) সরিয়ে এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) নিয়ন্ত্রণ নিলো। এরপর বিএনপির সংসদীয় দলের সভায় রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির সংসীয় দলের নেতার খালেদা জিয়া আমাকে বললেন, তুমি দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, তুমি এ সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে দেবে এবং পদত্যাগপত্র নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। এরপর ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ২৯ বার আমার ওপর আক্রমণ করা হয়। আমাদের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন নিয়ে কোনো রকম আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। আমরা বাসা ভাড়া পাইনি, বাসা ভাড়ার জন্য সেখানে যাই সেখানেই সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বাঁধা দেয়। আজ ১২ বছর পর হয়ে গেছে আমরা একটি মামলা করেছি, তার কোনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে আমরা নির্বাচন করেছি। এর আগে আমরা ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে একটি জোট করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট হবে না। কিন্তু এতে তারা রাজি হননি। ড. কামাল হোসেন তার বাসায় আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তার বাড়ি দরজা বন্ধ রেখেছিলেন। লুকিয়ে লুকিয়ে তারা অনৈতিক চুক্তি করলেন। যার ফলে অনৈতিক ঐক্য-জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেন। তখন আমরা আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, জাতীয় পার্টির জোটে যাই। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে অংশ নিলাম। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে, কিন্তু যখন মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন, স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রশ্ন আসবে, তখন আমাদের ঐক্য অক্ষুণ্ন থাকবে। অথচ বি চৌধুরী এবং মাহি বি চৌধুরী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তি। ৩য় ধারা বাদ দিয়ে মহাজোট সরকারের সাংসদ সদস্য। নিজের ক্ষমতাভোগ করাই যেন ৩য়ধারা। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনিয়ম খাদ্যের লাগামহীন মুল্য বৃদ্ধি রোধে বি চৌধুরী, মেজর মান্নান ভুইয়া এবং মাহী বি চৌধুরীর কোন প্রতিবাদ মিছিল নেই। হতাশ এদেশের বিভেকবান দেশপ্রেমিক নাগরিকরা। বিকল্প ধারার ৩য় শক্তি হলো জোট মহাজোট থেকে ক্ষমতার ভাগাভাগি।
তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য মেজর জেনারেল ইব্রাহীম ও আব্দুল আউয়াল মামুন প্রমুখ লিডাররা দীর্ঘদিন যাবত কল্যাণ পাটির মাধ্যমে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পযন্ত নাগরিকদের অপেক্ষা করতে হবে।
তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য জাসদের হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, বংগবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, জোনায়েদ সাকি, মাহি বি চৌধুরী, আন্দালিব রহমান পাথ ড. কামাল হোসেন ইত্যাদি রাজনীতিবিদ এবং ওদের রাজনৈতিক দল ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করতে যেয়ে বড় দলে বিলিন হওয়ার পথে। ১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমানের বিএনপিতে যোগদানের মাধ্যমে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করা শুরু হয়েছে, তা আজও বন্ধ হয়নি৷ ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধার জন্য কেউবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আবার কেউবা ক্ষমতার জন্য জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাসী। এদেশে ক্ষমতার জন্য শেয়ার বাজার লুটকারী, ক্যাসিনো বানিজ্য, ঘুষখোর, দুনীতিবাজ, লুটপাটকারী, দ্রব্যের লাগামহীন মুল্য বৃদ্ধি ওদের চোখে পড়েনা। যাহারা হালুয়া রুটির জন্য উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ভুমিকা রাখেনা তারা কিভাবে ৩য় শক্তির উত্থান ঘটাবে।
তৃতীয় শক্তির উত্থান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল সবুজের বাংলাদেশ এর জনগণের চিন্তা চেতনা এবং আশা আকাঙ্ক্ষার উপর নির্ভরশীল। রাজনৈতিক দলের কোয়ালিটি এবং জনবান্ধন প্রোগ্রামের উপর নিভর করবে কোথায় যাবে ৩য় শক্তি। বাংলাদেশে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং মাওলানা ভাষানীর মতো দেশপ্রেমিক লিডার নেই। বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ক্যারিশমেটিক লিডার নেই। ভিপি নুরুল হক নুর রাজনীতির চোরাবালিতে আটকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলের লিডারদের সততা দেশপ্রেম এর অভাবে জাতীর ত্রাহিত্রাহি অবস্থা।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন বাংলাদেশের সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারাফ হোসেন। তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা গ্রহণ করেন বিদেশে। ৯ বছরের সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদ চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন বিদেশে।
১০ বছরের সফল প্রেসিডেন্ট চিকিৎসা সিংগাপুর ও আমেরিকা। বিরোধী দলের নেত্রী চিকিৎসা গ্রহণ করেন বিদেশে। স্বাধীন দেশের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী সাংসদ স্পীকার স্বাস্থ্য সচিব চিকিৎসা গ্রহণ করেন বিদেশে, তারপরও সাংবাদিক, রাজনীতিবিদরা তাকে সফল মন্ত্রী সাংসদ হিসেবে শ্লোগান দিয়ে থাকে। একটি স্বাধীন দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ক্ষমতাভোগ করে নিজের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দেশে নিশ্চিত করতে পারেনা। ১৮ কোটি নাগরিক, দেশ ও জাতীর প্রতি ওদের দ্বায়বদ্ধতা আছে কি? মাহাথির মোহাম্মদ ইমরান খান মোদি আনোয়ার ইব্রাহীম ফিদেলকাস্ত্রো এরদোয়ান নিজের দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করে। আমাদের দেশের ক্ষমতার মালিক যারা তারা দেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করবে কখন। যারা দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করেনা তাদের সাংবিধানিক কোন পদে অধিষ্ঠিত থাকা উচিৎ কি?
টিভিতে দেখলাম চরঅঞ্চলে অনেক মুসলমান কুরবানির পশুর গোশত ভক্ষণ করতে নাই। তাদের জন্য সরকারের কোন খোশত বিতরণ প্রোগ্রাম ছিলোনা। এসডিজি অর্জনের ধাপ হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা, সুশাসন, দারিদ্র্য বিমোচন, উদ্যোক্তা তৈরি, খাদ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা।
মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মেডিকেল কলেজ ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় না বাড়িয়ে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী স্পিকার বিরোধীদলীয় নেত্রী মন্ত্রী সাংসদ এবং ধনীদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করুন। এতে অনেক ডলার সাশ্রয় হবে। চেন্নাই দিল্লি আমেরিকা ইউরোপ সিংগাপুর থাইল্যান্ড থেকে লাশ বহনের ঝামেলা কমে যাবে।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের শব্জি চাষ। ১) কাচা পেপে, মরিচ, আদা, পেয়াজ আলু, ঢেড়স, বরবটি পটল মুলা বেগুন লাউ সাজনি পাতা, শষার দাম আকাশচুম্বি। ২) দেশের আখের খেতে আখের চাষ হচ্ছেনা তাই চিনির দাম লাগামহীন। মালেশিয়া থেকে তেল চিনি আসে, সেখানে কিভাবে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের হাওয়া লাগলো। ডবল দামে গুড়ো দুধ মাত্র ৪৫০ টাকার গুড়োদুধ প্রতি কেজি ৮১০ টাকা। ৩) মুরগির খাদ্য ইউক্রেন ছাড়া পাওয়া যায়না সেজন্য একটা ডিমের দাম ১৭ টাকা। মুরগির গোশতের দাম হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ৪) টাংগাইলের আনারস তিনগুন দামে বিক্রি হচ্ছে ঢাকা শহরে। দেশি কাচা পেপে মাত্র ৮০ টাকা। কাচা মরিচ ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। ৫) বেনাপোল সীমান্ত থেকে কলিকাতা ৮০ কি: মি: সেখানে গরুর গোশত বাংলাদেশের চেয়ে অধেক দামে বিক্রি করে। তবে বিদেশি ফল কমলা আপেল নাশপতি আংগুল ড্রাগন মালটা ইত্যাদির দাম হাতের নাগালের মধ্যে। এখানে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রভাব বিস্তার করতে পারে নাই। কুরবানির পশুর চামড়া ট্যানারি সিন্ডিকেটের দখলে থাকার কারনে চামড়ার দাম পানির দামের চেয়েও কম। মাত্র ৩০০ টাকায় গরুর চামড়া ট্যানারি সিন্ডিকেট পেয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল এরশাদ এর শাসনকালে গরীবের ২ কেজি আটার দামে ১ কেজি নাজিরশাইল চাল পাওয়া যেতো। ১ কেজি চিনির দামে গরীবের ১ কেজি চিনির জিলাপি বিক্রি হতো। ১ কেজি চিনির দামে ২ কেজি গরীবের গুড় পাওয়া যেতো। এখন চিনির জিলাপি দামও আকাশচুম্বি গুড়ের খেজুরের দোকানে গরীবের ঘ্রাণ নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। নারিকেল পিঠার ওপর শকুনির ছোবল পড়েছে। একটি ডাবের দামে ২টি জুনা(পাকা) নারিকেল পাওয়া যেতো। এখন একটি নারিকেল ১৫০ টাকা। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য যাদুঘরে যাবেনা। বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও উন্নত দেশ। অচিরেই আমরা পারমাণবিক শক্তির অধিকারী দেশের কাতারে চলে যাবো সেজন্য বাংলাদেশের সাথে ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজারের সাথে তুলনা চলে।
যাহারা ভবিষ্যতে ৩য় শক্তি হিসেবে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা বলবেন কি? কতো দামে খাদ্যের বাজারের আগুন নিবিয়ে দেবেন। চাল ডাল আটা তেল চিনি গুড়োদুধ মুরগী গরুর গোশত, গরুর চামড়ার দাম কত টাকা হবে! ফটকাবাজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে থাকবে কি? সিনিয়র সিটিজেন জানতে চায় আপনাদের রাজনৈতিক দলের রোডম্যাপ কি?
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।