ঢাকা অফিস :
ভাষা আন্দোলনের প্রথম কারাবরণকারী সাংবাদিক আবদুস সালাম ছিলেন অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সৎ ও সাহসি সাংবাদিকতার পথিকৃত। বর্তমান সময়ের তরুণ সাংবাদিকদের নীতিনৈতিকতা ও আদর্শকে ধারণ করতে তাকে স্মরণ করতে হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক দি বাংলাদেশ অবজারভারের সাবেক সম্পাদক মরহুম আবদুস সালামের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। দি ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, প্রেস ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. আব্দুল হাই সিদ্দিক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক, আবদুস সালামের মেয়ে ও সাংবাদিক আবদুস সালাম স্মৃতি সংসদের সভাপতি রেহানা সালাম ও নাতনী মরিয়ম সুলতানা, ঢাকাস্থ ফেনী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তানভীর আলাদীন, আইনজীবি শহিদুল্লাহ মজুমদার, অধ্যাপক ড. শহীদ মঞ্জুর হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভা সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আবদুস সালাম স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক লোটন একরাম। এসময় তিনি আবদুস সালামের স্মৃতি সংরক্ষণে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, আবদুস সালামের লেখার জন্য পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সর্বজনের কল্যাণে কাজ করার জন্যই তিনি সাংবাদিকতায় এসেছিলেন। তিনি জাতি এবং রাষ্ট্রের কল্যাণেই সবসময় লিখেছেন। তারমতো সাংবাদিকের আজকে দেশে খুব প্রয়োজন। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের তার আদর্শ অনুসরণ করা উচিত।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আবদুস সালাম দেশ, রাজনীতি, সাংবাদিকতা সবকিছু নিয়েই আলোকপাত করে গেছেন। কিন্তু আমরা কি তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হতে পেরেছি? না পারলে আমরা তাদের কিভাবে শ্রদ্ধা জানাবো? আজকে যেখানে রাজনীতি দুর্বৃত্ত¡ায়ন, দুর্নীতি আর পেশীশক্তির সেখানে সাংবাদিকতা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হিসেবে থাকবে তা প্রত্যাশিত নয়।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আবদুস সালামদের মতো সাংবাদিক ছিলেন বলেন এদেশের সাংবাদিকতা এতদূর আসতে পেরেছে। তাদের নীতি, আদর্শ সম্পর্কে যেন তরুণ সাংবাদিকরা জানতে পারে তাই জাতীয় প্রেসক্লাবে তিনটি হলের নাম আবদুস সালম, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও জহুর হোসেন চৌধুরীর নামে হলের নাম করেছেন।
শওকত মাহমুদ বলেন, আবদুস সালাম সারাজীবন সাহসিকতার সাথে সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ সুপ্রীম টেক্সড নামে একটি সম্পাদকীর জন্য সরকার তার সাথে একমত হতে পারেনি। পরে তাকে সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আব্দুস সালাম একজন কিংবদন্তী সাংবাদিক। তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরী, আবদুস সালামদের হাত ধরে নানা ভাঙা গড়া বিধি নিষেধের মধ্য দিয়ে এদেশের সাংবাদিকতা শুরু হয়েছে। আজকের সাংবাদিকদের নীতিনৈতিকতা, আদর্শ, সততা আর সাহসিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য তাদেরকে স্মরণ করতে হবে।
ড. আব্দুল হাই সিদ্দিক বলেন, ‘বর্তমান সময়ের আমলাতন্ত্রের মতো আবদুস সালামের সময়েও আমলাতন্ত্র ছিল। কিন্তু তিনি আমলাতন্ত্রের বাঁধা ঠেলে সাংবাদিকতা করেছেন।