নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ৭টিতে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে দাপ্তরিক কাজ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত সেবা দিচ্ছেন চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা। ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে এসব ভবনে এসে সেবা নেন নারী-পুরুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরো ভবনই ভঙ্গুর অবস্থা। মাঝে মাঝে পলেস্তরা ঝরে পড়ে। মোটবী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনও জরাজীর্ণ। শুধু লেমুয়া ও মোটবী নয়, জেলা সদরের ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ধলিয়া, ফরহাদনগর, কালিদহ, ধর্মপুর ও বালিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
লেমুয়া ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিষদ ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় তৎসংলগ্ন স্থানে ওই এলাকার বাসিন্দা সাবেক রাষ্ট্রদূত হাসান আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা ২৫ শতাংশ জায়গা দান করেন। গত কয়েকবছর আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম নির্ধারিত ওই ভবনের জায়গা বুঝে নেন। সেখানে তিনি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নিজের নাম সম্বলিত বিশালাকৃতির একটি গেইট তৈরি করেন।
জানা গেছে, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে মাঝে মাঝে মেরামত করে কার্যক্রম চালানো হয়। বালিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ ও ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ায় দুটি কক্ষ তৈরি করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, লেমুয়া ও মোটবী ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ৩য় প্রজেক্টের আওতায় প্রকল্প পরিচালকের কাছে তৎকালীন উপজেলা প্রকৌশলী অনুপ কুমার বড়ুয়া প্রস্তাবনা পাঠান।
কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম জানান, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অনেক কষ্ট করে নাগরিক সেবা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।
মোটবী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, ভবন জরাজীর্ণ হলেও প্রতিদিন ৩শতাধিক নারী-পুরুষকে সেবা নিতে আসেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত রয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাস গুপ্ত জানান, ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের মধ্যে ২টি ভবনের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ভবনগুলোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল জানান, ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে বালিগাঁও ও মোটবী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়েছিল। দুটি ভবনের নকশাও তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে কোভিড পরিস্থিতির কারণে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ধীরগতিতে চলে। এর মধ্যে কয়েকটি ভবনের জন্য নির্ধারিত জায়গার সংকট থাকলেও সেটি ইতিমধ্যে কেটে গেছে। এসব ভবন নির্মাণ হলে নাগরিক সেবার মান আরো বাড়বে।