দৈনিক ফেনীর সময়

আ’লীগ সমর্থিতদের সাথে কারা লড়ছেন

আ’লীগ সমর্থিতদের সাথে কারা লড়ছেন

নিজস্ব প্রতিনিধি :

আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠেয় ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ এবং ৫ জুন অনুষ্ঠেয় ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চলছে জমজমাট। তারা প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যা রুটিনমাফিক দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পোষ্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকা। দুপুরের পর থেকে শুরু হয় মাইকিং। বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনী কার্যালয়ও। কিন্তু এ নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্ধী কারা এটি জানেন না বেশিরভাগ ভোটাররা। ফলে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের তুমুল প্রচারণা নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল দোয়াত কলম প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তার সঙ্গে প্রার্থী রয়েছেন সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মনজুর আলম। পেশায় আইনজীবী মনজুর রাজনীতির মাঠে নতুন মুখ। বিভিন্ন এলাকায় মোটর সাইকেল প্রতীকে হাতেগোনা পোষ্টার ঝুলালেও তাকে গণসংযোগ করতে দেখা যায়নি।

একইচিত্র ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এ.কে শহীদ উল্যাহ খোন্দকার টিউবওয়েল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুর্শিদা আক্তার কলস প্রতীকের সাথে যথাক্রমে গোলাম কিবরিয়া উড়োজাহাজ ও আঞ্জুমান আক্তার প্রজাপতি প্রতীকে প্রার্থী রয়েছেন। মনজুর আলমের মতো গোলাম কিবরিয়া ও আঞ্জুমান আক্তারকেও ভোটের মাঠে দেখা পাচ্ছেনা ভোটাররা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মনজুর আলম ফেনীর সময় কে বলেন, “দুইদিন প্রচারণা চালালেও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারনে প্রচারণা করা যাচ্ছেনা। আমি প্রার্থী না হলে তো ভোটই হতো না। সেজন্যই প্রার্থী হয়েছি।”

দাগনভূঞা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারবারের চেয়ারম্যান জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতনের দোয়াত কলমের সাথে চিংড়ী মাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বিজন ভৌমিক। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জায়লস্কর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন হায়দারের টিউবওয়েল প্রতীকের সাথে ইউছুপ আলী উড়োজাহাজ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামীলীগ সমর্থিত দিদারুল কবির রতন ও মহিউদ্দিন হায়দার ছাড়া অন্যদের দেখা মিলছেনা। তাছাড়া প্রতিদ্বন্ধী বিজন ভৌমিক দিদারুল কবির রতনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। শুধু তাই নয়, প্রতীক বরাদ্দ শেষে দিদারের গাড়ীতে করে বিজন ভৌমিককে দাগনভূঞায় ফিরে যেতে দেখা গেছে। ফলে এখানেও নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে তেমন কৌতুহল নেই।

সোনাগাজীতে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের দোয়াত কলমের সাথে নুর আলম মিষ্টার ঘোড়া, মজিবুল হক লাঙ্গল, মহিউদ্দিন আনারস, ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটুর টিউবওয়েলের সাথে আইয়বু আলী হায়দার উড়োজাহাজ প্রতীকে প্রার্থী হন।

স্থানীয়রা জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে কোন ধরনের প্রচারণা না করলেও গতকাল ঘোড়া ও লাঙ্গলের কিছু পোষ্টার লাগানো হয়েছে। দোয়াত কলম আর টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া কোন প্রার্থী ভোটারদের কাছে যাচ্ছেনা। তাছাড়া আনারস ও উড়োজাহাজ কোন ধরনের প্রচার-প্রচারণায় নেই।

অন্যদিকে ছাগলনাইয়ায় চেয়ারম্যান পদে মিজানুর রহমান মজুমদার কাপপিরিচের সাথে প্রার্থী হয়েছেন এএসএম শহীদ উল্যাহ দোয়াত কলম ও ফারুক হোসেন টেলিফোন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিবি জোলেখা শিল্পীর সাথে লড়ছেন নাছিমা আক্তার। এখানেও ভোটের মাঠে মিজানুর আর শিল্পী ছাড়া অন্য কারো প্রচারণা দেখা যাচ্ছেনা।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, কোন প্রার্থীকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী একজন আইনজীবী। শিক্ষিত মানুষ। নিজকে যোগ্য মনে করেছেন বলেই তিনি প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন।

জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাষ্টার আলী হায়দার ফেনীর সময় কে বলেন, যেসব প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছেন তারা কেন প্রার্থী হয়েছেন বুঝে আসছেনা। অনেকে মনে করেন প্রার্থী হলে নাম-যশ বাড়বে, সেজন্য কেউ কেউ প্রার্থী হতে পারেন।

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পিপি হাফেজ আহম্মদ ফেনীর সময় কে বলেন, প্রতিদ্বন্ধীরা ভোটের মাঠে না দেখা গেলেও ট্রাংক রোড, আদালত প্রাঙ্গণ সহ বিভিন্ন স্থানে কিছু পোষ্টার দিয়েছেন। প্রচারণা কেন কম করছেন এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!