নাজমুল হক
বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার ৮৩টি দলিলের মাধ্যমে ১১৪ একর জমি কিনেছিলেন। ১১২ একর জমিই কেনা হয়েছে বেনজীর আহমেদ যখন পুলিশ মহাপরিদর্শক ও র্যাব এর ডিজি ছিলেন। আইজিপি থাকাকালে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫০টি দলিল দিয়ে ৬৩ দশমিক ৯৭ একর জমি কেনেন বেনজীরের পরিবার। র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৭টি দলিল দিয়ে কেনা হয়েছে ৪৮ দশমিক ১৫ একর জমি। বেনজীর ও তার পরিবার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯৭ দশমিক ৮৬ একর, টুঙ্গিপাড়ায় দশমিক ৪৭ একর, কোটালীপাড়ায় ১১ দশমিক ৪৯ একর এবং কক্সবাজারে ২ দশমিক ৪৭ একর জমি কিনেছেন। কয়েকটি দলিলে জিসান মির্জাকে সাভানা বাংলাদেশের চেয়ারপারসন হিসাবে দেখানো হয়েছে। যেটি একটি খামার, একটি ইকো পার্ক, একটি ইকো-রিসোর্ট, একটি কান্ট্রি ক্লাব এবং সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ নামে উদ্যোগের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
সারদা পুলিশ একাডেমির সদ্য অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষ অতিরিক্ত আইজিপি কৃষিবিদ জনাব নাজিবুর রহমানকে নিয়ে উনার এক ছাত্রের লিখা– -সারদায় প্রতিদিন ভোরে পিটিতে যাওয়ার সময় স্যারকে পেতাম ফজরের নামাজে যাওয়ার সময়। মাঝে মাঝে পিটি থেকে ফেরার সময়ও পেতাম। স্যারের একটা করলা কার ছিল। যেখানে এসপিরা পাজেরো গাড়ি চালাতেন, সেখানে তিনি এডিশনাল আইজিপি করলা গাড়ি! ড্রাইভার ছিল না। স্যারকে নিজেই ড্রাইভ করতে দেখতাম। হাত উঁচু করে প্রত্যেকের সালাম নিতেন। মুখে থাকতো মুচকি হাসি।
ওহ কি অমায়িক মানুষ রে বাবা। একাডেমিতে প্রিন্সিপালের বাসভবন সেই ঐতিহাসিক ছোট কুঠিতে তিনি বাস করতেন না। নিজের মায়ের কাপড় তিনি নিজেই ধুয়ে দিতেন। কোন গৃহকর্মীও নাকি তিনি রাখতেন না। পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করতেন। ট্রেনে করে যাতায়াত করতেন। আমাদের ক্যাডেটরা ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থাতেই ছুটি থেকে আসার সময় স্যারকে ট্রেন জার্নিতে পেত। স্যার অভিবাদন নেওয়ার জন্য যখন ডায়েচে আসতেন সিনা তিন ইঞ্চি বড় হয়ে যেত! স্যারকে স্যালুট দিতে পেরে গর্ব হত । স্যার যখন প্যারেড মাঠে আসতেন সারদার ৪৩ক্ক তাপমাত্রা কিছুই মনে হত না। স্যার যখন ডায়েচে দাড়িয়ে আদিকালের গল্প বলতেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতাম। স্যার সবসময় একটা ডায়ালগ বলতেন- ‘পুলিশ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ মানুষ, পুলিশিং হচ্ছে শ্রেষ্ঠ পেশা’।
ঘটনা-১ : স্যার তখন বান্দরবান জেলার এসপি। নগরের কোলাহলমুক্ত, প্রাকৃতিক দৃশ্য আর হরেক রকমের বাহারি ফলের সমারোহ সে জেলাটি। পুলিশ লাইনও তার ব্যতিক্রম নয়। ছোট-বড় নারিকেল গাছে প্রচুর নারিকেল ধরেছে। একদিন লোক দিয়ে গাছের সমস্ত পাকা নারিকেল পাড়লেন। স্যার বললেন; দেখি আমাকে দু’টা নারিকেল দাও। জেলার পুলিশ সুপার নারিকেল খেতে চেয়েছে শোনে সবাইতো চরম খু্শ।ি পরে স্যার দু’টা নারিকেল নিলেন এবং তার সমমূল্য পরিশোধ করলেন এবং বাকি নারিকেল বিক্রি করে সমস্ত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিলেন।
ঘটনা-২ : বান্দরবন জেলার এসপি থাকাকালীন সময়ে একদিন তিনি দেখলেন তাঁর দুপুরের খাবারের বাটিতে দু’টুকরা মাংস বেশি। জেলার এসপি বলে দু’টুকরো মাংস বেশি খেতে হবে এ বৈষম্যটা তিনি মানতে নারাজ।
তাৎক্ষণিক বাবুর্চিকে ডাকলেন, কী ব্যাপর, আমার প্লেটে মাংস বেশি মনে হচ্ছে কেন? বাবুর্চিঃ না স্যার, আজ সবার ভাগেই একটু বেশি করে পড়েছে।-ওকে, তাহলে আরেকটা বাটি আমার কাছে নিয়ে আসো। বাবুর্চি আরেকটা বাটি নিয়ে আসলেন। স্যারঃ একি এ বাটিতেতো দু’টুকরা মাংস, তাহলে আমার বাটিতে চার টুকরা কেন? বাবুর্চি তখন মাথা নিচু করে ভড়কে গেলেন। আজ জানি কী হয়! স্যারঃ আমার বাটি থেকে দু’টুকরা নিয়ে যাও। আর কোনদিন বেশি দিবা না। একজন কনস্টেবলকে যতটুকু দিবে, আমাকে ঠিক ততটুকু দিবে।
ঘটনা:৩ঃ স্যার যখন ছুটিতে বাড়ি যেতেন, সরকারী কোন প্রটোকল নিতেন না। একবার বাড়িতে যাওয়ার সময় বাসস্টপেজ পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়ার জন্য স্যারের ড্রাইভার রিকোয়েস্ট করলেন। স্যার বললেন, এ গাড়িটা সরকার আমাকে সরকারি কাজের জন্য দিয়েছে, ব্যক্তিগত কাজের জন্য নয়। পরে বাস স্টপেজ পর্যন্ত স্যার সিএনজিতে করে গেলেন।
জনাব সিকান্দার আলি পুলিশের এসআই পদে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৪৪ সালে। সময়টা ছিল ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিক। এরপর ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। তিনি স্থানান্তরিত হয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ বিাহিনীতে। এরপর পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে হল বাংলাদেশ। জনাব সিকান্দার আলী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী থেকে অবসর নিয়েছিলেন ১৯৭৮সালে। তখন তিনি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছিলেন পুলিশ সুপার। পুলিশে চাকরি করেছিলেন দীর্ঘ ৩৩ বছর। তিনি তিনটি পতাকার তলে চাকরি করেছিলেন তিনি। তিনি ব্রিটিশ দেখেছেন, পাকিস্তান দেখেছেন এবং বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার অধীন চাকরি কেরেছেন। অবসর জীবনে সিকান্দার আলী ‘আমার পুলিশ-জীবন’ নামে একিট বই লিখেছিলন। গ্লোব লাইব্রেরি (প্রা) লিমিটেড থেকে প্রকাশিত বইটিতে প্রকাশনার তারিখ লেখা নেই। তবে এটা যে ১৯৭৮ সালের পরে সম্ভবত আশির দশকের প্রথম দিকেই বের হযেছিল সেটা অনুমান করা যায়।
পুলিশ অফিসারদের লেখা বস্তুনিষ্ঠ বইয়ের সংখ্যা অতিনগণ্য। গোটা চাকরি জীবনে যারা লক্ষ লক্ষ পাতার প্রতেবেদন তৈরি করেন, যাদের প্রতিবেদনে অরপরাধীরা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলে কিংবা নিপরপরাধ প্রমাণিত হয়, তারা একটি শত পৃষ্ঠার বইও লিখতে পারেননা। সেদিক দিয়ে জনাব সিকান্দার আলী পিপিএম একজন ব্যতিক্রমী পুলিশ অফিসারই বটে। ব্রিটিশ আমলে চাকরিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ দেখে মৃত্যুবরণ করেছেন এমন মাত্র তিনজন পুলিশ অফিসারের বই আমি পেয়েছি। এদের একজন অতি পরিচিত কাজী আনোয়ারুল হক। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ঔপন্যাসিক কাজী ইমদাদুল হকের ছেলে। ১৯৩৩ সালে ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে যোগদান করে তিনি ১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। তারপর হয়েছিলেন সচিব। তিনি আইয়ুব খানের মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি বাংলাদেশ আমলে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদেরও সদস্য ছিলেন। তাই পুলিশ অফিসা হিসেবে অবসর নিলেও টেকনোক্র্যাট হিসেবে রাজনীতিতেও তার পদচারণা ছিল। আনোয়ারুল হকের লেখা আন্ডার থ্রি ফ্ল্যাগ বইটি আমাদের ইতিহাসেরও মূল্যবান সম্পদ।
এরপরে আছেন জনাব সাদত আলি আখন্দ। তিনি বাংলা সাহিত্যের আধুনিক পর্বের একজন উল্লেখযোগ্য লেখক। যখন ‘দারোগা ছিলাম’, ‘তের নম্বরে পাঁচ বছর’সহ তার বেশ কিছু লিখা ব্রিটিশ বঙ্গ থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা পর্বের ইতিহাস সম্মৃদ্ধ। তিনি ছিলেন বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের চরমপত্র খ্যাত এম আখতার মুকুলের বাবা।
তবে এতিন জন লেখকের মধ্যে সিকান্দার আলীই স্বাধীন বাংলাদেশে পুলিশের চাকরি করেছিলেন। অন্যরা পুলিশ জীবন শেষ করেছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই। এমতাবস্থায় সিকান্দার আলীর ‘আমার পুলিশ-জীবন’ বইটিতে তিনটি পৃথক আমলেরই চিত্র পাওয়া যাবে।
আমার পুলিশ-জীবন বইটির সূচনা হল ১৯৪৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর লেখকের খুলনা থেকে পুলিশ একাডেমি সারদা যাওয়ার ঘটনা দিয়ে। বইটি শেষ হয়েছে ১৯৭৮ সালের ৩০ অক্টোবর লেখকের অবসরে যাওয়ার দিনটির ঘটনা দিয়ে। দীর্ঘ তেত্রিশ বছরের বহু ঘটনা ও সেগুলোর নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ পাওয়া যাবে এ বইটিতে। তবে আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে নয়; মাত্র একটি বিষয় নিয়ে এখানে আলোকপাত করব। এটা হল সেই সময়ের পুলিশের দুর্নীতি। বইটির গোড়ার দিকেই লেখকের প্রথম পুলিশি কাজের অভিজ্ঞতায় কিভাবে ঘুষ সংগ্রহ করা হয় তার বর্ণনা রয়েছে। শিক্ষানবিশ এসআই থাকা অবস্থায় লেখকের উপর দায়িত্ব পড়ল একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলের। বর্ধমানের মহারাজার কাছারি বাড়ির ম্যানেজারের পুত্র কোলকাতায় অপরাধ করে বর্ধমানে পালিয়ে এলে তাকে গ্রেফতারের জন্য কলকাতা পুলিশ থেকে ওয়ারেন্ট আসে। লেখক সেই পরোয়ানা তামিল করতে যান। কাছারি বাড়িতে গেলে অভিযুক্তের পিতা তার সাথে কিরূপ আচরণ করেন ও কিভাবে তার ছেলেকে গ্রেফতার না করতে ৫০ টাকা ঘুষ দেন তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে- ভদ্রলোকের (অভিযুক্তের পিতার) বয়স ষাটের কোঠায়। মুখের স্বাভাবিক ভাবটা বদলে গিয়ে একটু বিচলিত হলেন। সযত্নে বসিয়ে দুচারটা কথা বলে আপ্যায়ন করার পর কাছে এসে আস্তে আস্তে বল্লেন, ‘ও বাড়ি নাই। আপনার কষ্ট করে আসার দরকার হবে না। কোর্টে হাজির হয়ে যাবে।’ এই বলে আমার হাতে ৫০টি টাকা দিয়ে আবারও অনুনয় করে বল্লেন, ‘এই দয়াটুকু করুন’।
এ হল লেখকের নেয়া প্রথম ঘুষ। এ ঘুষগ্রহণের ঘটনাকেও তিনি বিশ্লেষণ করেছেন:‘কোন কেসের কোন কাগজের কতখানি ওজন তাও বুঝে উঠতে পারিনি। তবে এটা আমার জানা হয়েছে থানার বাবুরা কিছু কিছু উপরি পান। এতে কতটা দোষ আছে, না কৃতিত্ব আছে তা না বুঝেই টাকাটা পকেটে নিলাম। মাসিক বেতনের টাকা ছাড়াও বাড়িত টাকা পেয়ে আমার বেশ ভালই লাগল। এ বিদ্যায় এই প্রথম।এছাড়াও বিভিন্ন কাজের তদরারক কতে গিয়ে তিনি শিক্ষানিবশ অবস্থাতেও কিছু কিছু বাড়তি রোজগার করতেন। আর এ কাজে কোথায় কিভাবে ঘুষ নিতে হবে বা পাওয়া যাবে, তা ঝানু পূর্বসূরীগণ শিখে দিত। তারপর তিনি একাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন এবং তা চাকরি জীবনের প্রায় প্রথম সাড়ে তিন বছর চালু রাখেন। তবে একজন ঘুষখোর পুলিশ অফিসার কি কারণে ঘুষ গ্রহণ বাদ দিয়ে সৎ জীবনে ফিরে এলেন এ সম্পর্কেও কৌতুহলোদ্দীপক কাহিনী রয়েছে যা আমরা পরে জানব। এবার ঘুষ সম্পর্কে লেখকের বিশ্লেষণগুলো জেনে নেই:
আমার বয়স তখন ২৬ বছর। সংসারে আমি আর আমার স্ত্রী। বেতন পেতাম ৮০ টাকা। বাড়ি ভাড়া ২০ টাকা, সাইকেল এলাউন্স ৫ টাকা। রেশনে পেতাম ৭ সের তেল বা ঘি বা বাটার, চাল, ডাল, চিনি পর্যাপ্ত পরিমাণে। দুধের বিল বাবদ মাসে পেতাম ৪/৫ টাকা। সর্বমোট যে টাকা এবং সুযোগ-সুবিধা পেতাম তাতে বালভাবেই চলতো। মাসে ৪০/৫০ টাকা পোস্ট অফিসে জমা রাখতাম। তখন ব্যাংক ছিল না। লেখকের বর্ণনা থেকে বোঝা যাবে সেই সময় পুলিশের দারোগাগণ যা বেতন পেতেন তা নিতান্তই কম ছিলনা। মাসিক বেতন আশি টাকা হলেও বাড়িভাড়া ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কম ছিলনা। তাই স্বামী-স্ত্রী মিলে দুসদস্যের সংসার চালিয়ে তিনি ৪০/৫০ টাকা জমা করতে পারতেন যা তার মাসিক মূল বেতনের অর্ধেকের বেশি ছিল। যদি বর্তমান আমলের কথা ধরি, তাহলে বোঝা যাবে সেই সময় পুলিশের বেতন নগণ্য হলেও জীবন যাত্রায় ব্যয় ছিল অল্প। তাই পুলিশ ঘুষ না খেয়েও দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল। লেখকের ভাষায়:
তবুও কেন এই অদৃশ্য আয়ের প্রবণতা? কেন এই লোভ? এটা কি অভাব? না স্বভাব? নাকি পারিপার্শ্বিকতা? নাকি অধিক বিলাসিতার প্রবণতা? আর যাই হোক না কেন ‘অভাব’ আমি স্বীকার করতে রাজি না। অভাবের কোন পূরণ নাই। চাহিদার কোন শেষ নাই। হতে পারে পারিপার্শ্বিকতা। তার থেকে অভ্যাস। অভ্যাস থেকে স্বভাব। অর্থাৎ আর্থিক সংকটের কারণে সরকারি কর্মচারীগণ ঘুষ গ্রহণে বাধ্য হওয়ার যে প্রচলিত বিশ্বাস লেখক তা স্বীকার করেননা তার মতে সরকারি কর্মচারীদের ঘুষ গ্রহণের সাধারণ সূত্রও নয়। তিনি এটাকে পারিপার্শ্বিকতা ও অভ্যাসের বিষয় বলে মনে করেন। তবে কি কি কারণে পুলিশ কর্মচারীগণ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার একটা ব্যাখ্যা বইটিতে পাওয়া যাবে- প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টের একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। কাজের ধরন ভিন্ন। সুযোগ-সুবিধা ভিন্ন। যে ধরনের কাজ করা হয় এবং যে ধরনের লোকের সাথে মেলামেশা হয় বা যা দেখা যায় বা শোনা যায়, অনুভব করা যায়, চরিত্রও অনেকাংশে সেইভাবে গড়ে ওঠে। পুলিশের কাজ-কর্ম ভিন্ন, চালচলন ভিন্ন, সুযোগ-সুবিধা অনেক। এখানে উপরি আয়ের প্রচলন প্রথা ও সুযোগ বহু পূর্ব থেকে ক্রমাগত চলে আসছেন। কাজেই যারা পুরাতন তারা আগে থেকেই অভ্যস্ত হয়ে আসছেন। যারা নবাগত তারা পরিষ্কার মন নিয়ে ডিপার্টমেন্টে ঢুকেই পুরাতনদের সংশ্রবে আসেন। নানান রকম গল্প শোনেন, বহু ঘটনা চোখে দেখেন, অনেক কিছু অনুভব করেন, তাই তাদের চরিত্রও বহুলাংশে ঐভাবে গড়ে ওঠা স্বাভাবিক। ডিপার্টমেন্টাল ট্রেনিং এর সাথে ঐসব ট্রেনিংও এস যায়। তাদের অজান্তে, অজ্ঞাতে, পরোক্ষভাবে। এ কথা অনস্বীকার্য। ক্রমান্বয়ে তাদের ঐ পথ ধরাই স্বাভাবিক। যদি নবাগতরা ডিপার্টমেন্টে পা দিযে দেখতে পেতেন সব্ইা পাকসাফ, উপরি আয়ের কোন প্রচলন নাই, তবে নিশ্চয় দুর্নীতি তাদের মনে স্থান পেতো না; মন প্রলুব্ধ হতো না। এই সর্বনাশা ব্যাধি তাদের কচি মনকে আক্রমণ করতে পারত না। বক্তব্যের মধ্য দিয়ে লেখক পুলিশ বিভাগের উপ-সংস্কৃতিকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। একজন পুলিশ অফিসারের উপর বাইরে যে প্রভাব তার চেয়েও বেশি প্রভাব পড়ে তার ভিতরের সংস্কৃতির। ব্রিটিশ ভারতের পুলিশই শুধু নয়, প্রত্যেক সেক্টরেই ক্রমান্বয়ে একটি ঘুষ-দুর্নীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল।
ব্রিটিশ ভারতের সিভিল সার্ভিসের কর্মকতারা একজন পুলিশ কনস্টেবলের চেয়ে প্রায় ৬শত গুণ বেশি বেতন পেতেন। তারপরও ছিল তাদের নানা প্রকার সুযোগ সুবিধা। কিন্তু নিম্নপদস্থদের বেতন ছিল নেহায়তই সামান্য। যদিও ভারতীয় মানদণ্ডে এটা খুব নগণ্য ছিলনা, তবুও এই সিনিয়র জুনিয়র বা বিলেতি-ভারতী বিভেদ তা অনেক দেশি কর্মচারিকে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তে মানসিক যুক্তি যোগাত। সেই সময় পুলিশের সিনিয়র অফিসারগণ ঘুষ গ্রহণ করতেন না। কেবল পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে দারোগা বা এসআই পর্যন্ত পদের কর্মকর্তাগণই ঘুষ গ্রহণে অভ্যস্ত ছিলেন। সেই সময় থানার অফিসার-ইন-চার্জ ছিলেন একজন সিনিয়র এসআই। ইন্সপেক্টরগণ সাধারণভাবে হয় সার্কেলে নয়তো কোর্ট পুলিশ বা অন্যান্য শাখায় দায়িত্ব পালন করতেন। ইন্সপেক্টর হলে তারা নিজেদের সিনিয়র অফিসারের সমমর্যাদায় ভাবতেন। আর এজন্য ইতোপূর্বে যাই করে থাকুন না কেন পদের মর্যাদা রক্ষার জন্য ঘুষ গ্রহণ করতেন না। বিষয়টি লেখক এভাবে বর্ণনা করেছেন: সেদিনে পুলিশকে উপরি পয়সা দেওয়া-নেওয়া দারোগা পর্যন্ত সীমাব্ধ ছিল। তার উপরে বড় একটা শোনা যায়নি। যারা অর্থলোভী বা যারা মনে করতেন বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চলবে না বা ভোগ-বিলাসের ব্যাঘাত হবে তারা ইন্সপেক্টর হতে চাইতেন না বলে পরীক্ষাও দিতেন না। দারোগায় ভর্তি হয়ে দারোগায়ই অবসর নিতেন। কিন্তু একবার ইন্সপেক্টর হলে আর ওপথে পা বড়াবার রেওয়াজ ছিল না। ঐ পদে অধিষ্ঠ থেকে উপরি আয় গ্রহণ করা লজ্জাকর। বৃটিশ আমলে এটা প্রচলন ছিল। এমন কি পাকিস্তান হবার পরও এই হাওয়া চলছিল।
এ প্রসঙ্গে লেখক একটি বাস্তক গল্পের অবতারণা করেছেন: একটি কেসের বাদীর সঙ্গে খুলনা জেলায় কোন এক থানার ওসির সঙ্গে লেনদেনের কথাবার্তা ঠিক হয়। ৫০% টাকা আগেই দিয়ে দেয়। বাকি টাকা কার্য শেষে দিবে। ইত্যবছরে ওসি প্রমোশন পে ইন্সেপেক্টর হলেন। বাদীগণ এ খরর জানতেন না। পূর্বের কথামত একদিন তার বাসায় কাকি টাকাটা দিতে গেলে তিনি লজ্জিত হয়ে বল্লেন, ছি! আপনি জানেন না আমি ইন্সপেক্টর হয়েছি? ও টাকা আমি আর স্পর্শ করতে পারিনা।
পুলিশ বিভাগের দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে নিজে এ ব্যধি থেকে কিভাবে মুক্ত হলেন তার একটি সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। তার বর্ণনায় জানা যায় তিনি দুর্নীতিমুক্ত হয়েছেন তার স্ত্রীর চাপে পড়ে। তার স্ত্রী লেখকের সকল খবর রাখতেন। মাসিক বেতনের টাকা তিনি তার স্ত্রীর হাতেই দিতেন। স্ত্রী তা মিতব্যায়ীতার নীতিতে খরচ করতেন। কিন্তু যখন তার হাতে ঘুষের টাকা আসত তিনি সেটা আর লুকাতে পারতেননা। তাই স্ত্রীর কাছে ধরা পড়তেন। তার স্ত্রী তাকে ঘুষ গ্রহণে শুধু নিরুৎসাহিতই করতেন না, রীতিমত তিনি এটা প্রতিহত করতেন। তিনি পুনর্বার ঘুষ গ্রহণ করবেন না বলে প্রতিজ্ঞাও করাতেন। কিন্তু ঘুষ একটি নেশার মতো। তিনি এ থেকে মুক্ত হতে পারতেন না। তাই সংসারে চলত অশান্তি। লেখক একাধিক বার ঘুষ গ্রহণ করবেন না বলে প্রতিজ্ঞাও করেছিলেন। কিন্তু সে প্রতীজ্ঞা রাখতে পারেননি। তার ভাষায়, ‘এ বড় কঠিন ব্যাধি। চিকিৎসা করা বড়ই কঠিন’। তবে সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য তাকে শেষ পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ চিরতরে বন্ধ করতে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন: চাকরিতে কনফার্মড হওয়ার পর অর্থাৎ দফতর পাওয়ার পর এ কাজে হাত পাকা হতে থাকে। এ সময় আমার স্ত্রীর চোখে ধরা পড়লাম। তিনি ভীষণভাবে আপত্তি তুললেন। ও পথে যেতে পারবে না বলে আমাকে প্রতীজ্ঞা করালেন এবং সোজা ভাষায় বলে দিলেন, আমাকে যদি তোমার কাছে রাখতে চাও তবে দুর্নীতি বন্ধ করবে এবং হালাল রুজি খাবে। যেমন করে সিগারেট খাওয়া বন্ধ কারা হয়েছে অমনি করে এটাও বন্ধ করা হবে। জনাব সিকান্দার আলী এর পরও প্রায় ত্রিশ বছর পুলিশে চাকরি করেছিলেন। কিন্তু ঘুষ খাননি বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েননি। কিন্তু দুর্নীতি করেননি বলে তিনি ও তার স্ত্রী জীবনে যেমন অসুখী ছিলেন না তেমনি বস্থগত বিষয়ে অতৃপ্তও ছিলেননা। তার ভাষায়, ‘আমার যতটুকু সামর্থ্য তার মধ্যেই তার(স্ত্রী) চাহিদা সীমাবদ্ধ রেখেছেন। জীবনসায়াহ্নে হিসাব করলে দেখা যায় আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের সব ইচ্ছা পূরণ হয়েছে’।
জনাব সিকান্দার আলী পুলিশ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ১৯৭৮ সালে। তার বইয়ের ভাষায় পুলিশের ঘুষ দুর্নীতি ক্রমশঃ নিম্ন পর্যায় থেকে ঊর্ধ্বতন পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। শুধু আর্থিক সংকট বা নিম্ন বেতনের জন্যই যে সরকারি কর্মচারীগণ ঘুষ গ্রহণ করেন সেটা লেখক যেমন বিশ্বাস করতেন না, তেমনি অপরধা বিজ্ঞানী, জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সমাজ বিজ্ঞানীরাও মনে করেননা। তার মতে ঘুষ গ্রহণএকটি ‘পারিপার্শ্বিকতা’। এ পারিপার্শ্বিকতা থেকে আসে অভ্যাস। আর এ ঘুষ গ্রহণের অভ্যাসটি শেষ পর্যন্ত মানুষের স্বভাবে পরিণত হয়। আমার মনে হয়, ঘুষ-দুর্নীতি নিয়ে জনাব সিকান্দার আলীর এ মূল্যায়ন একজন প্রতিষ্ঠিত সমাজ বিজ্ঞানীর মূল্যায়নের চেয়েও গভীর ও সত্য।
ফখরুদ্দীন সরকারের সময় ঘুষ খোরদের কিয়ামত : ১) ওয়ান ইলেভেনের সময় একজন উর্ধতন কর্মকর্তা গ্রেফতার হলেন। সাথে তাঁর স্ত্রী। এসময় তাঁদের সম্পদের তদন্ত করা হচ্ছিলো। দায়িত্ব প্রাপ্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্য হিসেবে ভদ্রমহিলাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম,এ বিপুল সম্পদ জোগাড়ের উৎস সম্পর্কে আপনার কিছু বলার আছে? তিনি উত্তর দিলেন, আমার হ্যাজবেন্ডকে জিজ্ঞেস করুন। তাঁকে আপনারা জেলে দিন, ফাঁসি দিন, কিন্তু আমাকে নিয়ে টানাটানি করছেন কেন? আমি বললাম, কিন্তু আপনি তো তাঁর সম্পদের সুবিধাভোগী -কথা শেষ হওয়ার আগেই তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলিনি চুরি করে আমাকে সম্পদ বানিয়ে দিতে। সে দিয়েছে,আমি এনজয় করেছি। আমার কী দোষ? তাঁকে শাস্তি দিন, আমাকে নয়। তাঁর পাপের শাস্তি আমাকে কেন দেবেন?
২) আরেকজন। বাড়ির সংখ্যা কুড়ির ওপর। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই, এত বাড়ি কেন করলেন? কার জন্য? কয়টা বাড়ি এক জীবনে লাগে? অন্তত একটি জায়গায় এসে থামতে তো পারতেন! তিনি উত্তর দিলেন, স্যার, প্রথম বাড়িটি করার পর কেমন নেশার মতো হয়ে গেলো। কেন এত বাড়ি করলাম নিজেও জানি না। এর কিছুদিন পর জামিনে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। কয়েক দিন পর তাঁর আইনজীবী মৃত্যুর খবর দেওয়ার জন্য অফিসে এলেন। তখন শুনলাম ভয়ংকর এক কাহিনী।
ভদ্রলোকের নাকি দুই বিয়ে ছিলো। তাঁর লাশ উঠানে ফেলে দুই পক্ষ তীব্র ঝগড়ায় মাতলো সম্পত্তির বিলি বন্টন নিয়ে। উভয় পক্ষের জিদ তাঁকে দাফন করার আগেই এ বন্টন নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে বুঝালেন যা হবে আইন অনুযায়ী হবে। কে শোনে কার কথা। উভয় পক্ষের দাবী তাঁদের প্রাপ্যতা বেশি। তাঁরা ঝগড়া করছেন আর সম্পদ উপার্জনকারীর লাশ উঠানে পিঁপড়ায় খাচ্ছে।
৩) অন্য আরেকজন। অতি পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। আমার সাথে দেখা এ শতকের প্রথম দিকে। তখন তাঁর বয়স প্রায় পঁচাশি। আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম, স্যার, কিছু মনে করবেন না, এ বয়সে আপনার কি এতো ঝামেলা করে অফিসে অফিসে ঘুরার দরকার আছে? বাড়িতে আর কেউ নেই? তাঁর চেহারা কুঁচকে গেলো, সেখানে কিলবিল করতে লাগলো হতাশা। তিনি বললেন, আপনি আমার পুত্র না, নাতির বয়সী। আপনাকে একটি কথা বলি, চাকুরি জীবনে আমি প্রয়োজনের চাইতে বেশি কামিয়েছিলাম। সেটিই আমার জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি মাত্র ছেলে। পড়াশুনা করেনি। সারাদিন ঘুমায় আর সন্ধ্যা হলে ক্লাবে গিয়ে মদ নিয়ে বসে। মাঝরাতে পাঁড় মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভোরের দিকে ঘুমায়। তারপর সারাদিন বিছানায়। বিয়েশাদিও করাতে পারি নাই। বলতে বলতে তিনি কাছে ঝুঁকে বললেন, ভাই, আমার ছেলে মানুষ হয় নাই কেন জানেন? আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে আছি। তিনি বলতে লাগলেন, কারণ সে জানে তাঁর বাবার টাকা এক জন্মে খেয়ে সে শেষ করতে পারবে না। আমি যদি প্রয়োজনের বেশি উপার্জন না করতাম তাহলে এটা হতো না। সন্তান ‘অমানুষ’ হওয়ার মতো কষ্ট আর কিছুতে নেই ভাই।
৪) এবার একদম নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি। একবার আমি আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, আমার উপার্জনে যদি কোনো কালো দাগ থাকে তুমি কি তার দায়ভার নেবে? আমার স্ত্রী কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, আমি জানি আমার উত্তরে তুমি মন খারাপ করবে, তবু সত্য কথাটা বলি। তাহলো, পরিবার প্রধান হিসেবে আমাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব তোমার, কিন্তু সে উপার্জনের দায়ভার ইহকালে বা পরকালে আমি বা অন্য কেউ কখনোই নেবে না। অতীতেও কেউ নেয়নি,ভবিষ্যতেও নেবে না। কেউ চাইলেও নিতে পারবে না। একই ভাবে আমি যে রোজগার করি তার দায়িত্ব তুমি নেবে না।ইউ মাস্ট ডাইজেস্ট দিস বিটার ট্রুথ।
সংবিধান মোতাবেক দেশের মালিক জনগণের ঘুষখোর এবং দুনীতিবাজ সম্পকে অভিমত: ছাগলকান্ডে মতিউরের পরিবাবে কিয়ামত থেকে কিয়ামত, দুনীতির রাজপুত্র বেনজীর ক্ষুন্ন করেছে জনগণের বন্ধু পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি। ড্রাইভার মালেক এবং আবিদের দেখিয়ে দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের ঘুষখোর এবং দুনীতিবাজদের চেহারা। দুনীতি লুটপাট এর অভয়ারণ্য বাংলাদেশ। বিসিএস (আবিদ) থেকে উপজেলা নিবাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব, যুগ্ন সচিব, এডিশন্যাল সচিব, সচিব, সিনিয়র সচিব হলে জাতীর চোরের রাজ্যচাড়া পরিচয় দেওয়ার কিছুই নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে উঁচু পদে বিভিন্ন আবিদ ক্যাডারের কর্মকর্তা বসে থাকবে সংবিধান মোতাবেক দেশের মালিকেরা দেখতে চায় না। যাহারা ১৫ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে (প্রশ্নপত্র) ক্রয় করে বিসিএস ক্যাডার (আবিদ) হয়েছে তাদেরকে রাস্ট্রের উঁচু পদ থেকে অপসারণ করতে হবে!! ১৭ জন জাতীয় চোর থেকে প্রশ্নপত্র ক্রয়কারী বিসিএস (আবিদ) ক্যাডারের তালিকা প্রকাশ করা হউক। কালো বিড়াল থেকে ক্যাডার (আবেদ আলী)!! প্রশ্নপত্র কিনে যারা বিসিএস ক্যাডার তাদের কি করা হবে রাস্ট্রের প্রেসনোট চাই। তায়েব আলী ক্যাড়ার = ৪৪% (প্রশ্নপত্র ফাঁস)। কোটার ক্যাডার= ৫৬%। মেধা ক্যাড়ার= ০% মোট ১০০% সরকারী চাকুরী! এর অবসান চাই।
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।