দৈনিক ফেনীর সময়

বিশ্ব ইজতেমা এবং ঈদের মিলাদুনবী বিভ্রান্তিতে মুসলমান

বিশ্ব ইজতেমা এবং ঈদের মিলাদুনবী বিভ্রান্তিতে মুসলমান

খন্দকার নাজমুল হক

তাবলিগ জামাত ১৯২৬ সালে মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি কর্তৃক ভারতে প্রতিষ্ঠিত। তাবলিগ ভিত্তি হিসেবে ৬টি উসুল বা মূলনীতিকে ধারণ করা হয়। কালিমা, নামায, ইলম ও যিকির এবং একরামুল মুসলিমিন। তাবলিগ জামাত কঠোরভাবে ইসলামের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রয়েছে। তাদের অনুসারীরা দুর্বল হাদিসের বই তাবলিগী নেছাব ছাড়া মহাগ্রন্থ আল কুরআনের তাফসির, বুখারী, মুসলিম, আবুদাউদ, নাসাঈ ইবনে মাজাহ তিরমিজি শরীফের সহীহ হাদিসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পড়েনা এবং সিহাহসিত্তার হাদিস গ্রন্থ অনুসরণ করে না। সুদখোর ও ঘুষখোর দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিরবতা পালন করে। ইসলাম বিরোধী ও ধর্মহীন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা মসজিদে তাবলীগের প্রচারণা চালিয়ে আসছে। তাদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল, সমাজের সুদখোর এবং সুদখোরেরা মসজিদে সেল্টার দিয়ে থাকে। বিশ্ব ইজতেমাকে গরীবের হজ্জ বলে প্রচারনা চালিয়ে বেহেশতের যাওয়ার সহজপদ্ধতি এবং লোভ দেখিয়ে অশিক্ষিত দরিদ্র মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে আসছে । ওরা মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর ইসলামী খেলাফতে বিম্বাস করেনা এবং খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কোন আন্দোলন করেনা। ওরা রাজনৈতিকভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলের অনুসারী এবং সহয়োগী। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ওরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদের রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে থাকে।

তাবলীগ জামাতের প্রথম বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা ১৯৪৬ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর পাগার গ্রামের মাঠে বর্তমান ভেন্যুতে বার্ষিক অনুষ্ঠানের সময়সূচী করার অনুমতি দেয়। ১৯৭২ সাল থেকে ইজতেমা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯১২ সাল থেকে তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য ইজতেমাকে দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করেছে। ২০২৪ সালে বিশ্ব ইজতেমা দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমপর্যায় ২রা থেকে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব ৯ থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বের উদ্বোধনী খুতবা দেন পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাটুল্লাহ। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক এবং মাওলানা কারি জোবায়েরের মতো বিশিষ্ট ইসলামী পণ্ডিতদের বক্তৃতা এবং শিক্ষামূলক বক্তৃতা ছিল। মাওলানা সাদ কান্ধলভির বড় ছেলে ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভি দ্বিতীয় পর্বে জুমার খুতবা প্রদান করেন। ১২ ডিসেম্বর বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে তাবলীগ জামাতের ইজতেমা মাঠে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নিহত ৪। ইজতেমা মাঠে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মাওলানা জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই (প্রথম আলো)।

১২ রবিউল আউয়াল আসলে চট্রগ্রামে পালিত হয়ে থাকে জশুনেজুলশে ঈদে মিলাদুনবী। পাকিস্তানের পীর তাহের শাহ চট্রগ্রাম এসে মিলাদুন্নবী মিছিল বের করে থাকে! পীর সাহেব হাদিয়া হিসেবে কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মানিল্যান্ডারিং বিভাগ থেকে তদন্ত করে দেখা উচিৎ তাহের শাহ বাংলাদেশ থেকে কতো কোটি টাকা পাচার করেছেন। চট্রগ্রাম থেকে উৎপাদন করা মিলাদুনবী পালন নিয়ে মাজারপুজারী মুফতি মাওলানা সাহেবদের মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি আছে। আলেমদের মধ্যে শিরক কুফর এবং বিদায়াত নিয়েও পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি আছে। কেউ কেউ শিরক এবং কুফরির পক্ষে মতামত দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে রেখেছে। ওরা অনেক সুন্দর সুন্দর শ্লোগান বের করেছে “ঈদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ঈদ ঈদে মিলাদুনবী”। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) মুসলমানদেরকে দুইটি ঈদ পালনের জন্য হুকুম দিয়েছেন। তিনি জীবিত থাকাবস্থায় দুটো ঈদ উৎসব পালন করেছেন। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য ফরজ ইবাদত হিসেবে অনুমোদন দিয়েছেন। খোলাফায়ে রাশেদিন রাসুল (সাঃ) কে অনুসরণ করে দুটো ঈদ উৎসব পালন করেছেন। রাসুল (সাঃ) যাহা করেন নাই, কুরআন ও হাদিসে যাহা নেই তাহা পালন করা এবং প্রচার করার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশে একশ্রেণির ফটকাবাজ মাজারপুজারী গোষ্ঠী মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে ঈদে মিলাদুন্নবী আবিষ্কার করেছেন। জাহেলি যুগে ইসলামকে বিক্রিত করে মুসলমানদের ইবাদত বন্দেগীকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মুসলিম জাতিতে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে, শিরক কুফরি এবং বিদায়াত প্রবেশ করেছে। তেমনই ঈদে মিলাদুনবীকে মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ উৎসব হিসেবে প্রচার করে জাহেলিয়াত যুগের দিকে ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মুসলমান।

ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, নবী (স)-এর সময়, খোলাফায়ে রাশেদিনের সময় এমনকি তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের সময়েও ঈদে মিলাদুন্নবী (স) নামে কোনো উৎসবের প্রচলন ছিল না। ৩৫২ হিজরিতে বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফার প্রধান প্রশাসক ও রাষ্ট্রের প্রধান নিয়ন্ত্রক বনী বুয়াইহির শিয়া শাসক মুইজলি দীনিল্লাহ্ ১০ মহরম আশুরাকে শোক দিবস ও জিলহজ মাসের ৮ তারিখ ‘গাদীরে খুম দিবস হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে এই দুই দিবস সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয়। ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করার ক্ষেত্রেও শিয়ারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ইতিহাসবেত্তাদের মতে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে মিসরের ফাতেমীয় শাসকরা মিলাদুন্নবী উদযাপন করতেন। রাসুল (স), হজরত আলী (রা), হজরত ফাতিমা (রা), ইমাম হাসান (রা) ও ইমাম হুসাইন (রা)-এর জন্মোৎসব উদযাপনের মূল প্রবর্তক ছিলেন খলিফা মুইজলি দীনিল্লাহ্।

ইবনে জারীর সূত্র মতে, আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে বাদশাহ্ হারুনুর রশীদের মাতা খায়জুরান বিবি ১৭৩ হিজরিতে মদিনা শরিফে নবী (স)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করা ও সেখানে দরুদ ও দোয়া পাঠ করার যে ব্যবস্থা রয়েছে, ঠিক সেভাবে নবী (স) মক্কায় যে ঘরে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন, সেই ঘরটির জিয়ারত ও সেখানে দোয়া করার প্রথা সর্বপ্রথম চালু করেন। পরবর্তীকালে ১২ রবিউল আউয়ালে ওই নারীর নেতৃত্বে তীর্থযাত্রীরা প্রতিবছর নবী (স)-এর জন্মদিবস ধরে নিয়ে ওই ঘরে আনন্দোৎসব পালন করা শুরু করেন। মুসলিমদের মাঝে এই জন্মবার্ষিকী চালু হওয়ার পর আফজাল ইবনু আমিরুল জাইশ ৪৮৫ হিজরীতে মিসরের ক্ষমতা দখল করে এই মিলাদুন্নবীসহ আরও ৫টি আলী (রা), ফাতিমা (রা), হাসান (রা), হুসাইন (রা) ও জাইনুল আবেদিন (রা) জন্মবার্ষিকীর প্রথা বাতিল করে দেন। ৫১৫ হিজরিতে শিয়া খলিফা আমির বিল আহকামিল্লাহ্ তা পুনরায় চালু করেন। পরে কুরআন সুন্নাহর অনুযায়ী গাজী সালাহউদ্দীন আইয়ুবি ৫৩৩ হিজরিতে ঈদে মিলাদুন্নবীসহ সব জন্মবার্ষিকী উৎসব বন্ধ করে দেন। ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রবর্তক ইরাকের ইরবিল প্রদেশের শাসক আবু সাঈদ মুজাফফর উদ্দীন কুকুবুরী। তিনিই প্রথম মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রবর্তন করেন। ৬০৪ হিজরি থেকে আনুষ্ঠানিক মিলাদুন্নবী উদযাপন শুরু হয়।

তাবলিগ জামাত ১৯২৬ সালে মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি কর্তৃক ভারতে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৪৮ সালে হযরত মাওলানা ইউছুপ সাহেব-এর উপস্থিতিতে ঢাকার কাকরাইলে ১ম বার্ষিক এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। ইসলাম ধর্ম ও জ্ঞান বিজ্ঞানে অজ্ঞ কিছু লোকজন অজ্ঞতা প্রসূত তাবলিগ ইজতেমাকে পবিত্র হজ্জের সাথে তুলনা করে বক্তব্য দিয়ে আসছে। ইসলামের ধর্মীয় জ্ঞানহীন একশ্রেণির মিডিয়া এটাকে ফলাও করে প্রচার করে আসছে। পবিত্র হজ্জের সাথে ইজতেমার কোন তুলনাই হতে পারেনা। টংগীর তাবলিগ ইজতেমা তাবলীগওয়ালাদের একটি সন্মেলন। সারা বছর ব্যাপি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় ইজতেমা হয়। আর টংগী ইজতেমা সারাদেশের সকলকে নিয়ে। অতি সাধারন একটি কথা। অথচ উদ্দেশ্য প্রনোদিত হোক আর অজ্ঞতা প্রসূত হোক এটাকে হজ্জের সাথে তুলনা করে আসছে। তাবলিগ এর ঘোষণা মোতাবেক আখেরী মোনাজাত নিয়ে বাড়াবাড়ি। সেই দিন ঢাকা শহরের সাধারণ মানুষের জন্য এক কষ্টদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে ফেলে। তাবলীগের দোয়ার জন্য ফালাফালি অবস্থা সৃষ্টি, অফিস আদালত অঘোষিত ছুটি। আখেরী মোনাজাত তাবলীগের সাথীদের জন্য। হুজুগে বাংগালী দেশবরেণ্য সকল হাক্কানী ওলামা মুফতি মাওলানা মাশায়েখ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ, বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রনালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উচিত তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা তাবলীগী নেসাব পড়ে ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে কিনা মনিটরিং করা।

রাসুলুল্লাহ সা: নবুয়াত লাভ করেন মক্কায় কিন্তু সেখানে ঈদে মিলাদুনবী নামে কোন প্রোগ্রাম নেই, সৌদি আরবের কোথাও ঈদেমিলান্নবী পালিত হয় না, মাজার পুজারী গোষ্ঠী নেই। মুসলমানদের কিবলা মক্কার ক্বাবা শরীফ সেখানে তাবলীগের বিশ্ব ইস্তেমা নেই। মাজার নেই, মদীনায় রাসুলুল্লাহ সাঃ মুসলিম রাস্ট্র পরিচালনা করেন, সেখানে ওরশ নেই, মাজার পুজারী নেই, মিলাদুন্নবী নামে কোন প্রোগ্রাম নেই। বিশ্ব ইস্তেমা নেই। পীরের অনুসারী নেই। এখন প্রশ্ন থেকে যায় রাসুলুল্লাহ সাঃ দেশে এবং সাহাবীদের দেশে যাহা নেই তাহা কিভাবে আমাদের বাংলাদেশে আছে? হাক্কানী আলেম মুফতি মাওলানা সাহেবদেরকে ভাবতে হবে বাংলাদেশ ইসলামের ধর্মীয় উৎসব পালন নাম দিয়ে শিরক বিদায়াত এবং কুফরির দিকে ধাবিত হচ্ছে কি?

বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর হলো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাবলিগ এর বিশ্ব ইস্তেমাকে পবিত্র হজ্জ্বের সাথে তুলনা করে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম জমায়েত বলে প্রচার করছে। সমগ্র পৃথিবী পূর্ণ করে অন্য মুসলমানদের কোন ইস্তেমা জমায়েত হলো। সেই জমায়েত হজ্জের তুলনায় বড়ো হলো, তাহলে কি সেই জমায়েতকে হজ্জের চেয়ে বৃহত্তম সওয়াবের জমায়েত বলা যাবে? হজ্জ্বের সওয়াব তো আল্লাহ সুবহানহু তায়ালা ফরজ করেছেন। সামর্থবানদের জন্য হজ্জ এর ছওয়াবও তিনি দেবেন। পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষ বিশ্ব ইস্তেমায় জমায়েত কখনই ১জন হাজীর সমান সাওয়াব পাওয়ার সুযোগ আছে কি? ক্বাবা শরীফে ১ রাকাত নামাজ পড়া দুনিয়ার মসজিদে ১ লক্ষ রাকাত নামাজ আদায়ের সমান। পৃথিবীর সকল মসজিদই আল্লাহর ঘর। তবে তিনটি মসজিদের মর্যাদা আলাদা। পৃথিবীর প্রথম ঘর মক্বার কাবাগৃহ বা মসজিদুল হারাম। এ মসজিদে হারাম বলে কাবাগৃহসহ চারিদিক পরিবেষ্টিত মসজিদকে। এখানে ‘হারাম শব্দের অর্থ সম্মানিত। এ মসজিদের মধ্যখানে কাবাঘর অবস্থিত। মসজিদে হারামে এক রাকাত নামাজ অন্য স্থানের ১ লাখ রাকাত নামাজের সমান। মসজিদে নববী : মসজিদে নববী হলো ইসলামের সোনালি যুগের সব কর্মকাণ্ডের প্রথম কেন্দ্র। এ মসজিদের এক রাকাত নামাজ ৫০ হাজার রাকাত নামাজের সমান। মসজিদে আকসা : মসজিদে আকসার বিবরণ কোরআনে কারিমে একাধিকবার এসেছে। হজরত নবী করিম (সা.) মিরাজ রজনীতে সেখানে গমন করেন। রাসূল (সা.) বলেন, মসজিদে আকসার এক রাকাত নামাজ ৫০ হাজার রাকাত নামাজ আদায়ের সমান সওয়াব।

তাবলীগ জামায়াতের সিলেবাস তাবলীগি নেছাবের বইতে উল্লেখিত হাদিসগুলো সহীহ বুখারী মুসলিম আবুদাউদ তিরমিজি নাসাঈ শরীফে নেই। দেশবরেণ্য হক্কানি আলেম মুফতি মাওলানা, ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ, দাওয়াত ও হাদিস বিভাগ ধর্মমন্ত্রনালয়ে এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে তদন্ত করে দেখা উচিৎ। বিশ্ব ইস্তেমা হজ্জের চেয়েও বেশি সওয়াব এবং গরীবের হজ্ব প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে আইনানুগ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তাবলিগ জামাত ইসলামের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রয়েছে। তাদের অনুসারীরা দুর্বল হাদিসের বই তাবলিগী নেছাব ছাড়া মহাগ্রন্থ আল কুরআনের তাফসির, বুখারী, মুসলিম, আবুদাউদ, নাসাঈ ইবনে মাজাহ তিরমিজি শরীফের সহীহ হাদিসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পড়েনা এবং সিহাহসিত্তার হাদিস গ্রন্থ অনুসরণ করে না। সুদখোর ও ঘুষখোর দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিরবতা পালন করে। ইসলাম বিরোধী ও ধর্মহীন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা মসজিদে তাবলীগের প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বিশ্ব ইজতেমাকে গরীবের হজ্জ বলে প্রচারনা চালিয়ে বেহেশতের যাওয়ার সহজপদ্ধতি এবং লোভ দেখিয়ে অশিক্ষিত দরিদ্র মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে আসছে ওরা রাজনৈতিকভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলের অনুসারী এবং সহয়োগী।

একশ্রেণির মাজার পুজারী গোষ্ঠী বাংলাদেশ সরকারের ইসলামীক ফাউন্ডেশন এর ঘোষণা মোতাবেক রোজা রাখা ও ঈদুল আজহা ঈদুল ফিতর পালন করেনা। সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা আইন ভংগ করে সৌদি আরবের সাথে রোযা ও ধর্মীয় উৎসব দুটি ঈদ পালন করে। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে আইনানুগ প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। ওদের রোযা ও ঈদ উৎসব হলো কিনা ফতোয়া দেওয়া উচিৎ। সারাদেশে একই দিন রোয়া রাখা, ঈদ উৎসব পালন করা ইসলামিক ফাউণ্ডেশন এর ঘোষণা কার্যকর করা এবং সরকারী ঘোষণা ভংগকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সুদখোর ও ঘুষখোর দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিরবতা পালন করে। ইসলাম বিরোধী ও ধর্মহীন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় মাজারপুজারীরা মসজিদে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ওরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদের রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে থাকে।

লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!