নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী সরকারি কলেজ গেইটে ছাত্রদল নেতা জিল্লুর রহমানের চাঁদাবাজীর অভিযোগ প্রকাশের পর ফেনীর সময় এর প্রধান প্রতিবেদক আরিফ আজমকে প্রাণনাশেরও হুমকি দিলে আরো উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে জিল্লুর অপকর্মের শিকার বিভিন্ন ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন মুখ খুলতে শুরু করেছে। এ যেন একের পর এক কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মতো কাহিনী।
কলেজ এলাকা থেকে তার চাঁদাবাজীর থাবা ইতিমধ্যে শহরের অন্যান্য এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে তার সংঘবদ্ধ চক্রের চাঁদাবাজীর শিকার হলেও ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করেনি। এমনকি কেউ কেউ চাঁদা দিয়ে আপস করতে বাধ্য হয়েছে। শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের একটি বেসরকারি ক্লিনিক মালিক জিল্লু চক্রের দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের প্রাচীনতম ওই ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, গত ১৩ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে তিনি ক্লিনিক থেকে বের হয়ে শ্যামলী ফার্মেসীর সামনে আসলে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা দুই যুবক তার কাছে আসেন। তারা তাকে মোবাইল ফোনে ছাত্রদল নেতা জিল্লুর রহমানকে ধরিয়ে দেয়। তখন জিল্লু নিজেকে ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে পরদিন তাকে ফুড গার্ডেনে দেখা করতে বলে। ওই দুই যুবক তাকে জিল্লুর সাথে যোগাযোগ করতে একটি মোবাইল নাম্বার (০১৮৫৬-৬০৩০৫১) দেয়। পরদিন ওই ক্লিনিকের এক কর্মচারী জিল্লুর সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব নিলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফুড গার্ডেনে দেখা করতে যাননি।
তিনি জানান, ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে তিনি ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় আশপাশে ৩০-৩৫ জন যুবককে দেখতে পান। তখন কিছুটা সন্দেহ হলে ফের ক্লিনিকে ঢুকে পড়েন। কর্মচারীরাও আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ওই যুবকরা ভেতরে ঢুকে তাকে একটি কক্ষে আটক করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এসময় ক্লিনিকের অপর এক পরিচালক ও কর্মচারীদেরকেও মারধর করে চক্রের সদস্যরা। টাকা নিয়ে আসতে তার পরিবারকে খবর দিতে বলে দূর্বৃত্তরা। তিনি বিষয়টি স্বজনদের জানালে তারা সেনাবাহিনী ও ফেনী মডেল থানার ওসিকে অবহিত করেন। একপর্যায়ে রাত ১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা সরে পড়েন। তখন ক্লিনিক মালিক দোতলার জানালা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে পাশ্ববর্তী একটি বাসায় আশ্রয় নেন।
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগের পর দূর্বৃত্তরা ফিরে এসে ক্লিনিকে অবস্থান নেয়। তারা প্রতিটি কক্ষে তল্লাশী চালায়। ক্লিনিক কর্মচারীরা জানায়, সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে ক্লিনিকের সিসি ক্যামেরার যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যায়। ওই ক্লিনিক মালিক আতংকে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে কর্মচারীরা জানান।