নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল্লাহ বলেছেন, নেক আমলের আমলের মাধ্যমে প্রাণবন্ত হোক জিলহজ্বের প্রথম দশক। জিলহজ্ব মাস হলো ৪টি সম্মানিত মাসের মধ্যে অন্যতম একটি মাস। এ মাসের সম্মানে আমরা বেশি বেশি করে নেক আলম করবো এবং গুণাহ মুক্ত জীবন যাপন করবো। তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বাকী মাসগুলোতে বেশি করে নেক আমল করার ও গুণাহ মুক্ত জীবন যাপন করার তাওফিক দিবেন। জিলহজ্ব মাস হলো হজ্বের মাস। কেন না এ মাসে আল্লাহর মেহমান হাজী সাহেবেরা হজ্ব করার জন্য মক্কায় অবস্থান করেন। জিলহজ্ব মাসের মর্যাদা হলো যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা এ মাসে কোরবানি করে থাকেন।
গতকাল শুক্রবার জুমার খুতবার আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জিলহজ্ব মাসের অন্যতম একটি মুস্তাহাব আমল হলো- যে ব্যক্তি কোরবানি করার ইচ্ছা পোষণ করবেন সে যেন চাঁদ দেখা যাওয়ার আগে চুল ও নখ এবং শরীরের অবাঞ্চিত পশম পরিস্কার করে নিবেন। চাঁদ দেখা গেলে আর এগুলো পরিস্কার করে না নেন। এ আমলটির সময় হলো কোরবানি করা পর্যন্ত। কোরবানি করার পর চুল ও নখ এবং শরীরের অবাঞ্চিত পশম পরিস্কার করতে পারবেন। সাহাবীরা তাদের সন্তানদেরও এসময় চুল ও নখ কাটতে দিতেন না। ছোট ছোট আমলগুলো আমাদের পরকালে মুক্তির জন্য সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে এ দশকে বেশি বেশি করে তাকবির দেয়া সুন্নত। ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর নারী-পুরুষ উভয়ে ১ বার তাকবির বলা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চস্বরে ও নারীরা আস্তে আস্তে তাকবির বলতে হবে। এসময় কারো নামাজ কাজা হলেও তার জন্যও তাকবির বলা ওয়াজিব।
মাহমুদা খাতুন কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আরো বলেন, বিশ্ব নবী বলেন পুরো বছরের দিবস সমূহের মধ্যে জিলহজ্ব মাসের প্রথম ১০দিনের চেয়ে উত্তম, সেরা এবং আল্লাহর কাছে অধিক ভালোবাসা ও পছন্দের আর কোন আমল উত্তম হতে পারে না। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করেন ইয়া রাসুলাল্লাহ এ ১০টা দিন কি আল্লাহর পথে কোন মুজাহিদ জিহাদ করে সেই দিন থেকেও উত্তম ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ? নবীজি বলেন এ ১০দিনের আমল তার চেয়েও উত্তম। তবে সেই ব্যক্তির জিহাদ এরচেয়েও উত্তম যে নিজের জানমাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছে। এ ১০ দিনের যে কোন ইবাদত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকে রাতের বেলায় ইবাদত করবো। কোন বর্ণনায় পাওয়া যায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ ১০ রাতের আমলকে লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমান সওয়াব দিবেন। আমরা জিলহজ্ব মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত নফলগুলো রোজা রাখার চেষ্টা করবো। বর্ণিত আছে প্রত্যেক রোজার পরিবর্তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ১ বছরের সমান সওয়াব দিবেন। বিশেষ করে আমরা আরাফার রোজার বিষয়ে গুরুত্ব দিবো। কেউ যদি আরাফার দিবসে রোজা রাখেন তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ওই ব্যক্তির পিছনের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহও মাফ করে দিবেন।
মাওলানা সাইফুল্লাহ আরো বলেন, বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) বলেছেন আমরা যত দোয়া করি না কেন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দোয়া হচ্ছে আরাফাত দিবসের দোয়া। আমরা আরাফার দিবসে বেশী বেশী করে পড়বো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদির,। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দিবসে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। বান্দাদের নিয়ে ফেরশতাদের সাথে গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন তারা কি চায়? তারা যা চাইবে আমি তাদের তাই দিয়ে দিবো। এবং এ দিবসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাহদেরকে অধিক পরিমানে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আসুন আমরা জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকে বেশি বেশি ইবাদত করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।