নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে কিশোর গ্যাংয়ের নির্মমতার শিকার হয়ে নিহত সজিবের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বিকাল ৪টার দিকে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুরে সজিবের লাশ আসলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সজিবের মা-বাবা ও স্বজনদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। আসর নামাজের পর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাযাপূর্ব বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিলন, সজিবের চাচা শফিকুর রহমান ও ভাই সোহেল, স্থানীয় আবদুল হান্নান প্রমুখ। জানাযায় আশপাশের এলাকার শতশত মুসল্লী অংশ নেন। জানাযায় সমবেত এলাকাবাসী সজীবের খুনীদের ফাঁসি দাবী করেন। তারা জানান, সজীব এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। তার এ নির্মম হত্যাকান্ডে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এর আগে ১৫ দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মারা যায় সজিব।
প্রায় ২ মাস আগে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর ও পাশ্ববর্তী ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় দুটি দল নিয়ে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। ঈদুল আযহার আগের দিন রতনপুর এলাকায় ইলেক্ট্রিকের কাজ করতে গেলে পূর্ব বিরোধের জেরে সজিব ও তৌহিদের উপর হামলা চালাায় ইউসুফের ছেলে রিফাত (১৮), রফিকের ছেলে শামীম (১৮) ও মোস্তফার ছেলে আফসার (১৯) সহ কয়েকজন যুবক। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করলে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন হামলাকারিরা তাদের ফেলে চলে যায়। তারা পাশ্ববর্তী ফেনী সদর উপজেলার রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় ঈদের দিন রাতে সজিবের বাবা সোলেমান বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। আহত সজীবকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রেরণ করে। প্রায় অপর আহত তৌহিদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। নিহত সজিব নুরুল্লাহপুর এলাকার আবদুর রব মেম্বার বাড়ির বাসিন্দা।
এর আগে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া রিফাত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত চোরা রিফাতের দেয়া তথ্যানুযায়ী বিরলী গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার খায়েজ আহম্মদের বাড়ির পাশের কালভার্টের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো: নিজাম উদ্দিন জানান, সজিবের উপর হামলার ঘটনায় মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে অন্তভূক্ত হবে। ওই মামলার দুই আসামীকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।