নিজস্ব প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু সেই আইনকে তোয়াক্কা না করে ফেনী শহরের অদূরে দেবিপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষেই সওজের জায়গা দখল করে নির্মিত হয়েছে ‘কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্ট’। হাইওয়ে পুলিশের নাকের ডগায় এ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও এ ব্যাপারে তাদের ভূমিকা রহস্যজনক। এর আগে তিনি লালপোলে ভূঁইয়া ট্রান্সপোর্টের সাইনবোর্ড লাগিয়ে মহাসড়কের জায়গা দখল করে ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু হলে সাইনবোর্ডটি নামিয়ে ফেলা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়ক থেকে নিরাপদ দূরত্বে নির্মাণ করা হয় তিন তলা বিশিষ্ট মহিপাল হাইওয়ে থানা ভবন। ওই ভবন আর মহাসড়কের মাঝামাঝি স্থানে রেষ্টুরেন্ট নির্মাণ করেন ফেনী জেলা কাভার্ডভ্যান, ট্রাক-মিনিট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোহাম্মদ আলী। তবে সেটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন তার ছেলে মুন্না।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এ রেস্টুরেন্ট রাতারাতি গড়ে ওঠেনি। হাইওয়ে থানা পুলিশের সামনে দিবারাত্রি কাজ চলে। এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এটি গড়ে তোলা হয়। মহাসড়কে দূর্ঘটনা, কাগজপত্র বিহীন গাড়ী আটকের পর কুঁড়েঘরে বসেই দেনদরবার করেন মোহাম্মদ আলী।
অপর একটি সূত্র জানায়, রেস্টুরেন্ট পরিচালনার জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অন্তত ৬টি লাইসেন্স প্রয়োজন। সরকারি ওই জায়গা জবরদখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা রেষ্টুরেন্টের ইতিমধ্যে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে তিনটি লাইসেন্স। এর মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স পেতে ভয়াবহ প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য জমা দেয়া আবেদনে ‘পুলিশ ক্যান্টিন’ উল্লেখ করা হলেও মূলত প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘কুঁড়েঘর কাবাব হাউজ এন্ড রেষ্টুরেন্ট’।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফাইজুল কবির জানান, রেষ্টুরেন্টের জন্য অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফেনীস্থ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল জানান, সড়কের জায়গা দখল করে রেষ্টুরেন্ট গড়ে তোলার বিষয়টি মাত্রই শুনলেন। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহিপাল হাইওয়ে থানার ওসি মোস্তফা কামাল এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ছাড়পত্রে পুলিশ ক্যান্টিন, সাইনবোর্ডে কুঁড়েঘর
মহিপাল হাইওয়ে থানার সামনে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে রেষ্টুরেন্ট গড়ে তুলেছেন শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ আলী। স্বাস্থ্য বিভাগের ছাড়পত্র পেতে সুচতুর আলী আবেদনপত্রে এটিকে উল্লেখ করেন ‘পুলিশ ক্যান্টিন’। ওই আবেদন দেখেই অনুমোদন দেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। অথচ সাইনবোর্ডে ওই রেষ্টুরেন্টের নাম দেয়া হয় ‘কুঁড়েঘর’।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নুর করিম জানান, পুলিশ ক্যান্টিনের জন্য ছাড়পত্র পেতে স্বাস্থ্য বিভাগে আবেদন করেছেন। এর প্রেক্ষিতে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্সও জমা দিয়েছেন।
তবে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানেআলম ভূঞা।