নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ‘৪১১ ধারায়‘ গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে এক ব্যাক্তির কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ থানার এএসআই মো. ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে।
এ সংক্রান্ত একটি কলরেকর্ড ফাঁস হয়েছে। যা সংরক্ষিত আছে। তবে ভুক্তভোগী ব্যাক্তির নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ থানায় যে কোনো মোবাইল ফোন চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে তা উদ্ধারের দায়িত্ব আছেন এএসআই ইউসুফ আলী। তবে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে বাদি-বিবাদীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরকম টাকা দাবির একটি কলরেকর্ড এ প্রতিনিধির হাতে এসেছে।
তিন মিনিট ছয় সেকেন্ডের ওই রেকর্ডে এক ব্যাক্তির কাছে এএসআই ইউসুফ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তা না দিলে ওই ব্যক্তিকে ৪১১ ধারায় গ্রেফতারের ভয় দেখান।
রেকর্ডে ভুক্তভোগী ব্যাক্তিকে কাকুতি-মিনতি করে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাচ্চা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমি এত টাকা দিতে পারবো না।’ তখন গ্রেফতারের ভয় দেখালে ওই ব্যক্তি দেড় হাজার টাকা দিতে রাজি হন।
এসময় এএসআই ইউসুফ আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘কোথায় পাঁচ হাজার আর কোথায় এক হাজার ৫০০ টাকা। আপনি পেনাল কোডের ৪১১ ধারা পড়ে দেখেন ওটাতে কী লেখা আছে।’
পরে ওই ব্যক্তি আবারও বলেন, ‘আমি মোবাইলটি নগদ টাকা দিয়ে কিনেছি, আপনি কিছু না দিয়ে তা নিয়ে গেলেন। সেটাও আমার লোকসান। এখন আমার বাচ্চা হাসপাতালে, আমি এত টাকা আপনাকে কোথা থেকে দেবো?’
পেনাল কোড অনুযায়ী- ‘যদি কোনো ব্যক্তি অন্যের অজান্তে কোনো জিনিস চুরি করেন তবে ৩৭৯ ধারায় মামলা দেওয়া হয়। আর যদি উক্ত মালামালসহ ওই আসামিকে ধরা হয় বা গ্রেফতার করা হয় তবে ৪১১ ধারায় উদ্ধার দেখানো হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এএসআই ইউসুফ আলী কলরেকর্ডের কথোপকথনকারী ব্যাক্তি তিনি বলে নিশ্চিত করলেও টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি চোরাই মোবাইলফোন কিনেছিল। তা উদ্ধারের পর তারাই আমাকে টাকা দিতে চেয়েছিল, আমি নিইনি।’
তবে, পরে কলরেকর্ড শোনানোর পর তিনি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বলেন, অভিযোগ ওঠার পর অভিযুক্ত এএসআই ইউসুফ আলীকে মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ সব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।