দৈনিক ফেনীর সময়

জায়লস্কর ভূমি অফিসের নিষ্ক্রিয়তায় দখল-দূষণে হুমকীতে শতবর্ষী পুকুর

জায়লস্কর ভূমি অফিসের নিষ্ক্রিয়তায় দখল-দূষণে হুমকীতে শতবর্ষী পুকুর

দাগনভূঞা প্রতিনিধি :

দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আওতাধীন ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত সিলোনীয়া বাজারের ফেনী-মাইজদী সড়কের পাশে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের পুকুরটি দখলবাজদের দৌরাত্মে ক্রমশ: ভরাট হতে হতে বিলীন হবার উপক্রম।

সরেজমিন দেখা যায়, সিলোনীয়া বাজারের পূর্ব অংশে সড়কের পাশে কতিপয় জোতদার শ্রেণী ভূমিহীন পরিচয়ে একসনা বন্দোবস্তের নামে অস্থায়ী ঘর তুলে দীর্ঘ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছে। একসারিতে উত্তর দক্ষিণে ২৩ টি দোকানের ২০টি দোকান বন্দোবন্ত নেয়া মালিকেরা ভাড়া দিয়ে ভাড়া খাচ্ছে। সম্প্রতি ফেনী-মাইজদী আঞ্চলিক মহাসড়কে ফোরলেন উন্নিত করণের কাজ শুরু হলে রাস্তা প্রশস্তকরণের আওতায় সিলোনীয়া বাজারস্থ পূর্বপাশের সিএন্ডবির সীমানা থেকে দোকান সরানোর চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হলে সম্মুখভাগে দোকানের কিছু অংশ ভেঙে রাতের বেলায় বিশেষ কায়দায় পুকুরের ভিতর দোকান দাঁড় করানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। স্থানিয়দের সাথে কথাবলে জানাযায়, দিনের বেলায় দোকানঘরের সম্মুখ টিন, বেড়া বা তেরপাল দিয়ে আটকানো থাকে। মেরামত ও বালু ভরাটের কাজ চলে রাতে। যাতে সরকারী কোন কর্মকর্তা বা এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে সে জন্য রাত নিরাপদ সময়।

স্থানীয়রা জানান, পুকুরের ভিতর টিনের বেড়া দিয়ে আড়াল সৃষ্টি করে মাটি ভরাট করার দৃশ্য বর্তমান। এরমধ্যে কয়েকটি দোকানের পূর্ববৎ আড়াল সৃষ্টি করে ভিতরে ইটের পাকা স্থাপনা তৈরি করতেও দেখা গেছে। অবৈধভাবে পুকুর ভরাট করা ও দোকান তোলার বিষয়ে জায়লস্কর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তহশিলদার দিলীপ কুমার নাথের সাথে দখলদার দোকান মালিকদের গোপন যোগসাজশ আছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকান মালিক ও ভাড়াটিয়া সূত্রে জানাযায়। ভূমি অফিসের নাকের ডগায় পাকা স্থাপনা উঠানো এবং বাজারের একমাত্র শতবর্ষী পুকুর কৌশলে ভরাট ও দখল করার মত অপকর্ম হতে থাকলেও ভূমি অফিসের এই কর্মকর্তা কিছু জানেননা বলে জানান। মসজিদের অজুখানার গ্রিলে লাগানো ভূমি অফিসের নেমপ্লেটে পুকুরের জায়গার পরিমান ৬০ শতাংশ উল্লেখ করা থাকলেও বাস্তবে তা নাই।

একসময় শতবর্ষী পুকুরটি ছিলো মসজিদ ও বাজারের প্রাণ। মুসল্লীদের ওজু করা, আশপাশের বাড়ির মানুষ, বাজারের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও দুরদুরান্ত থেকে আসা ব্যাপারী লোকজনের ওজু গোসল সবই ছিলো পুকুরটিতে। গত কয়েক বছর কচুরিফেনা ও শ্যাওলায় পরিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠছে পুকুরটি। তার উপর পুকুর পাড়ের দখলী দোকানের ময়লা আবর্জনা, হোটেলের পঁচাবাসী, পলিথিনের বর্জ্য এইসবের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। ওজু গোসলের পাকা ঘাটলাটিও বর্জ্যে পূর্ণ হয়ে আছে। ময়লা আবর্জনা ও শ্যাওলা পঁচা দূর্গন্ধে মসজিদে যাতায়াতকারী মুসল্লি ও প্রতিবেশীদের যারপরনাই কষ্ট হলেও দেখার কেউ নাই। প্রাকৃতিক জলাশয়ের আধার শতবর্ষী পুকুরটিকে অবৈধ দখল ও দূষণ থেকে রক্ষা করতে সচেতন এলাকাবাসী সরকারের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!